অবশেষে আমতলী-তালতলী সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু

প্রথম পাতা » বরগুনা » অবশেষে আমতলী-তালতলী সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু
সোমবার ● ৩১ জানুয়ারী ২০২২


অবশেষে আমতলী-তালতলী সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর অবশেষে আমতলী-তালতলী বেহাল সড়ক ও ব্রীজ নির্মাণে ১৪ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে দুই প্রকল্পে কাজ শুরু হয়েছে। সড়ক ও ব্রীজের নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় আমতলী-তালতলীর তিন লক্ষ মানুষ নতুন দিগন্তের স্বপ্ন দেখছে। দরপত্র অনুসারে যথা সময়ে কাজ সমাপ্তি করে মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
জানাগেছে, আমতলী-তালতলীর-ফকিরহাট পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার উপকুলীয় আঞ্চলিক সড়ক। সোনাকাটা ইকোপার্ক ও শুভ সন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার একমাত্র সড়ক এটি। সড়কে ঢোবা ও খানাখন্দের কারনে সোনাকাটা ইকোপার্ক ও শুভ সন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ভ্রমন চার ধরে বছর বন্ধ রয়েছে। ফলে রাজাস্ব হারাচ্ছে সরকার। এছাড়াও ওই সড়ক দিয়ে আমতলী-তালতলী উপজেলার অন্তত তিন লক্ষাধীক মানুষ যাতায়াত করে। ওই সড়কের মানিকঝুড়ি থেকে কচুপাত্রা ব্রীজ পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার ৪০০ মিটার এবং কড়াইবাড়িয়া বাজার থেকে তালতলী হাসপাতাল পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়ক  ঢোবা ও খানাখন্দে ভরপুর। ২০-৩০ গজ দুরত্বে রয়েছে বড় বড় খানাখন্দ। এ সড়ক নয়  যেন মিনি পুকুর। এদিকে ওই সড়কটির আড়পাঙ্গাশিয়া নদীর ওপর ১৯৮৫ সালে স্থানীয় প্রকৌশল বিভাগ বেইলি ব্রীজ নির্মাণ করে। দীর্ঘদিন ব্রীজ সংস্কার না করায় নরবড়ে হয়ে যায়। সড়কে খানাখন্দ ও নরবড়ে  ব্রীজের  কারনে গত চার বছর ধরে ঢাকা-বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই খানাখন্দ সড়ক ও ব্রীজ  দিয়ে ছোট মাঝারি যানবাহন ও মানুষ যাতায়াত করছে। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পোহাতে হয় দু’উপজেলার অন্তত তিন লক্ষধীক মানুষের। ফলে দুই উপজেলাবাসীর প্রাণের দাবী হয়ে ওঠে সড়ক সংস্কার ও ব্রীজ নির্মাণের। মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ লাঘবে আমতলী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুনের উদ্যোগে গত বছর অক্টোবর মাসে বার্ষিক জিওবি মেইনটেনেন্স প্রকল্পের আওতায় ৮ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তিনটি প্যাকেজে মানিকঝুড়ি থেকে কচুপাত্রা পর্যন্ত ৮ হাজার ৪০০ মিটার সড়ক এবং ওই সড়কের আড়পাঙ্গাশিয়া নদীতে আইবিআরপি প্রকল্পের আওতায় ৫ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৬০ মিটার দৈঘ্য এবং ৭.৩ মিটার প্রস্থের একটি গার্ডার ব্রীজ নির্মাণের দরপত্র আহবান করে। সড়কের কাজ পায় ফয়সাল এন্টার প্রাইজ এবং ব্রীজের কাজ পায় টিএনএন্ডএএসআই (জেভি) নামের দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এ বছর জানুয়ারী মাসের  প্রথম সপ্তাহে সড়ক ও ব্রীজের নির্মাণ কাজ শুরু করে। বর্তমানে পুরো দমে চলছে নির্মাণ কাজ। নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় দুই উপজেলার মানুষের মাঝে স্বস্থি ফিরে এসেছে। তারা দরপত্রানুসারে যথা সময়ে নির্মাণ কাজ শেষে মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের দাবী জানিয়েছেন।
সোমবার সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, পুরোদমে সড়ক ও ব্রীজের নির্মাণ কাজ চলছে। শত শত শ্রমিক দিনভর কাজ করছে।
তারিকাটা এলাকার মোতালেব মিয়া, নশা হাওলাদার, মোশাররফ হোসেন, কবির উদ্দিন, শহীদুল ইসলাম ও বাহাদার বলেন, সড়ক ও ব্রীজের নির্মাণ কাজ শুরু করায় এলাকাবাসী মহাখুশি। যথা সময়ে কাজ শেষ করলে মানুষের ভোগান্তি লাঘব হবে।
আড়পাঙ্গাশিয়া বাজারের ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেন মিস্ত্রি, বাকী বিল্লাহ ও জাফর বিশ^াস বলেন, নির্মাণ  কাজ চলছে। নির্মাণ কাজ শেষ হলে ব্যবসা বানিজ্যে আরো বেগবান হবে।
নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় স্থানীয় প্রকৌশল বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের সাধুবাদ জানিয়ে আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ হুমায়ূন কবির হাওলাদার বলেন, কাজ সমাপ্তির অপেক্ষায় দুই উপজেলার মানুষ। কাজ শেষ হলে আমতলী-তালতলীর যোগাযোগ ব্যবস্থার আমুল পরির্বতে নতৃুন দিগন্তের সুচনা হবে।
তালতলী উপজেলা যুবলীগ যুগ্ম আহবায়ক ব্যবসায়ী শামীম পাটোয়ারী বলেন, সড়ক ও ব্রীজের নির্মাণ কাজ  শেষ হলে ব্যবসা বানিজ্যে সফলতা ফিরে আসবে। তিনি আরো বলেন, এ সড়ক ও ব্রীজ নির্মাণের দুই উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবী। ওই দাবী বাস্তবায়নের পথে।
আমতলী স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ নিজাম উদ্দিন বলেন, সড়ক ও ব্রীজের নির্মাণ কাজ কার্যাদেশ অনুসারে বাস্তবায়নে তদারকি করছি। পুরোদমে চলছে নির্মাণ কাজ। আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সড়ক ও গার্ডার ব্রীজের নির্মাণ কাজ দরপত্রানুসারে শুরু হয়েছে। আশাকরি যথা সময়েই কাজ শেষ হবে। এ কাজ শেষ হলে দুই উপজেলার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন হবে।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:১৫:০৪ ● ৪৪৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ