আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
তরমুজ খেতে ভেজাল টিএসপি সার প্রয়োগ করে শতাধিক কৃষক দিশেহারা হয়ে পরেছেন। তরমুজ খেত নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আশংঙ্কা করছেন তারা। এ ভেজাল সার বিক্রির মুল হোতা বাজারটাকা বাঁধ এলাকার মোঃ ইলিয়াম আহম্মেদের বিরুদ্ধে শাস্তি দাবী করেছেন কৃষকরা। ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের হাজারটাকা বাঁধ এলাকায়।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের হাজারটাকা বাঁধ এলাকায় মোঃ ইলিয়াস আহম্মেদ সার বিক্রি করে আসছেন। বর্তমানে তরমুজ চাষের উপযুক্ত সময়। এই সময়ে টিএসপি সারের চাহিদা প্রচুর হয়। ওই সুযোগে ইলিয়াস আহম্মেদ পটুয়াখালী থেকে ভেজাল টিএসটি সার আনেন এমন অভিযোগ কৃষকদের। গত ৮ দিন ধরে ওই সার এক হাজার দুই’শ ৫০ টাকা বস্তা হিসেবে কুকুয়া ও আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের তরমুজ চাষীদের কাছে তিনি বিক্রি করছেন। সরল বিশ^াসে কৃষকরা ওই সার ক্রয় করে তরমুজ খেতে প্রয়োগ করছেন। কৃষকরা দেখতে পায় সারের মধ্যে মাটি মেশানো। চাপ দিলেই সার ভেঙ্গে গুড়োগুড়ো হয়ে যায়। সারের মধ্যে থেকে ঝাঁঝালে গন্ধ আসছে না এমন অভিযোগ কৃষকদের। এতে কৃষকদের সন্দেহ হয়। পরে কৃষকরা ভেজাল সারের কথা বিক্রেতা মোঃ ইলিয়াসের কাছে বললে তিনি টাকা ফিরিয়ে দেয়ায় আশ^াস দিয়ে তাদের নিবৃত থাকতে বলেন। ইতিমধ্যে তিনি কয়েকশ বস্তা সার বিক্রি করেছেন বলে দাবী করেন কৃষকরা। সার ভেজালের খবর কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে পরলে তাদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তরমুজ খেতে ভেজাল সার প্রয়োগ করায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পরেছেন। তারা ভেজাল সার বিক্রেতা মোঃ ইলিয়ামের এমন প্রতারনার বিরুদ্ধে শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।
চাউলা গ্রামের তরমুজ চাষী মোঃ দুলাল হাওলাদার বলেন, ডিলার ইলিয়াসের দোকান থেকে চার বস্তা টিএসটি সার কিনে খেতে ছিটিয়ে দিয়েছি। ওই সার চাপ দিলে ভেঙ্গে যায়। সারের মধ্যে থেকে ঝাঁঝালো গন্ধ আসছে না। পরে খোজ নিয়ে জানতে পেরেছি ওই সার ভেজাল। পরে ইলিয়াসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি টাকা ফিরিয়ে দেয়ার আশ^াস দিয়ে কাউকে বিষয়টি বলতে নিষেধ করেন। ভেজাল সার প্রয়োগ করায় আমি দুশ্চিন্তায় আছি। কি হয় জানিনা? ১০ বিঘার তরমুজ খেতে ওই সার ছিটিয়ে দিয়েছে। ফলন ভালো না হলে একেবারে শেষ হয়ে যাবো।
একই গ্রামের জাহাঙ্গির মাদবর বলেন, এক হাজার ২’শ ৫০ টাকা বস্তা হিসেবে ইলিয়াসের কাছ থেকে সার কিনে খেতে ছিটিয়েছি। ওই সার ভেজাল। এখন তরমুজ খেত নিয়ে মহা চিন্তায় আছি। ইলিয়াসের এমন প্রতারনা করায় তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানান তিনি।
সোনাখালী গ্রামের কৃষক ইব্রাহিম ও মধু প্যাদা বলেন, ইলিয়াসের প্রতারনায় পরে টিএসটি সার কিনে এলাকার শত শত তরমুজ দাষী দিশেহারা হয়ে পরেছেন। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার দাবী জানাই।
সার বিক্রেতা মোঃ ইলিয়াস আহম্মেদ ভেজাল সার বিক্রির কথা অস্বীকার বলেন, আগে পটুয়াখালী থেকে সার আনতাম এখন ভেজাল সার দেয়ার কথা জানতে পেরে আনা বন্ধ করে দিয়েছি।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, ঘটনা জেনেছি। ইলিয়াস আমাদের নির্ধারিত খুচরা ডিলার না। ইউএনও স্যারের সাথে আলোচনা করে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ বলেন, বিষয়টি জানা নেই। খোজ খবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর