গোপালগঞ্জ সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জায়গা দখলে বাধা দেওয়ায় হিন্দু পরিবারের ২নারী ৪পুরুষ সদস্যকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে প্রতিপক্ষ দখলদারের লোকজন। এসময় ওই পরিবারের বাড়ি ঘর ভাংচুরসহ স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগও করেন তারা। আহতদের মধ্যে আশঙ্খাজনক অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর দিন গুনছে গৃহবধূ অনিতা বাইন। ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে এম ফোরকান আলীকে প্রধান আসামীসহ ১০জন নামাঙ্কিত ও ২০/২৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির নামে আদালতে মামলা দায়ের করেছে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের জেষ্ঠ্য সদস্য অনিল বাইন।
মামলার বিবরন ও ক্ষতিগ্রস্থদের সাথে কথা বলে জানা যায়, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ৫নং ডুমুরিয়া ইউনিয়নের ভেন্নাবাড়ী গ্রামে স্বর্গীয় পিতা ও ঠাকুরদাদের আমল থেকেই সুখে শান্তিতে বসবাস করে আসছিল অনিল বাইনদের পরিবার। পৈত্রিক সূত্রে এলাকায় রেখে যাওয়া জমিজায়গার এখনও তেমন ঘাটতি পড়েনি তার শরীকদের মাঝে। অনিল বাইন জানান, এমনই একটা মুহুর্তে প্রতিপক্ষ মামলার আসামী বি এম ফোরকান আলীগং আমাদের পরিবারের এসকল জমির মধ্যে ৯ একর ৮৯ শতাংশ জমি দখলের লিপ্সায় মেতে ওঠে। তারা একাধিক বার জমি বেদখলের হুমকি দিয়ে আসছিল। উপায়ান্ত না পেয়ে বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানানো হলে আসামীরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তারা মামলার বাদী অনিলকে খুন করার পরিকল্পনা করতে থাকে। এমতাবস্থায় ১৮ জানুয়ারী মঙ্গলবার সকালে আসামীরা মামলার বাদী অনিল বাইনের বাড়িতে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হইয়া জায়গা দখলের উদ্দেশ্যে বাড়ি ঘর ভাংচুর শুরু করে। ঘটনার চরম পর্যায়ে পরিবারের সদস্যরা তাদের বাধা দিতে আসলে অনিল বাইনের ছোট ভাই সুখময় বাইনের স্ত্রী অনিতা বাইনকে ফোরকান বিশ^াস ধারালো রাম দা দিয়ে মাথায় কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এবং তার মৃত্যু নিশ্চিতের জন্য আরো মারপিট দিতে থাকে। এসময় তাকে বাচাঁতে এগিয়ে আসলে বাবলু বাইন, পিযুষ বাইন, প্রমথ বাইন, সুখতারা বাইন ও আঃ হক চৌধুরীকে মামলার আসামী বাচ্চু মোল্লা, ফয়সাল মোল্লা, সালিম বিশ^াস, রফিক বিশ^াসসহ অন্যান্যরা পিটিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত ও নীলা ফোলা জখম করে। মামলার বিবরণে আরো জানা যায়, মারপিঠ করার পরে তারা কোন মামলা করলে প্রাণ নাশের হুমকি প্রদানসহ গৃহবধুদের গলার স্বর্ণের চেইন ও ঘরে থাকা নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেয়। এসময় বাদী ও স্বাক্ষীদের সোর চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এলে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
পরে স্থাণীয়দের সহযোগীতায় আহতদের গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত রক্তক্ষরণ মাথায় ৮টি সেলাইসহ অনিতা গাইনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে তিনি খুলনা মেডিকেলে মৃত্যু শয্যায় রয়েছে বলে জানান তার পরিবার।
এঘটনায় অনিল বাইন টুঙ্গিপাড়া থানায় মামলা করতে ব্যর্থ হয়ে পরবর্তীতে ১৯/০১/২০২২ তারিখে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত টুঙ্গিপাড়া গোপালগঞ্জে ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃস্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে বি এম ফোরকান আলীকে প্রধান আসামী করে১০ জনকে নামাঙ্কিত এবং অজ্ঞাত ২০/২৫ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করে।
এ ঘটনায় বি এম ফোরকান আলীর সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি ঘটনার সাথে তার সংশ্লিষ্ট তার কথা অস্বীকার করে জানান, আমি ঘটনার সময় ঢাকায় ছিলাম। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। তবে আমি শুনেছি আমার বাড়ি গিমাডাঙ্গা হতে ১৫ কিলোমিটার দূরে তারাইলে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। তারপরেও কি করে আমি আসামী হয়েছি জানিনা।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার সচেতন মহল এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের দাবী দেশরতœ মাননীয় শেখ হাসিনার এলাকায় যারা হিন্দু পরিবারের সম্পত্তি দখলে এহেন নেক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের দৃস্টান্ত মূলক শাস্তি হওয়া উচিৎ। কোন অবস্থাতেই যেন প্রধানমন্ত্রী তাদের ছাড়না দেন।
এইচবি/এমআর