কলাপাড়ায় হাঁস পালনে সফল আসমা-জহির দম্পতি

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » কলাপাড়ায় হাঁস পালনে সফল আসমা-জহির দম্পতি
সোমবার ● ৩ জানুয়ারী ২০২২


কলাপাড়ায় হাঁস পালনে সফল আসমা-জহির দম্পতি

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥

প্রশিক্ষণ শেষে বিনামূল্যে পাওয়া ১২টি হাঁস, বদলে দিয়েছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার চাকামইয়ার গৃহবধু  আসমা বেগমের জীবন। মাত্র ৪বছরে দারিদ্রতাকে জয় করেছেন। দিনমজুর থেকে এখন সফল খামার মালিক। অনুকরণীয় হয়ে উঠেছেন এলাকার অনেকের কাছেই।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ার চাকামইয়া ইউনিয়নের কাঠালপাড়া এলাকার আসমা বেগম ও জহির বেগ দম্পতি। দিনমজুর স্বামীর একার আয়ে দু’সন্তানসহ ৪ জনের সংসার চলছিল খেয়ে না খেয়ে। দারিদ্রতা থেকে মুক্তির আশায় দিনমজুরের কঠোর শ্রমেও পরিবর্তন হচ্ছিলনা ভাগ্যের। প্রতিবেশির পরামর্শে একটি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার অফিস থেকে প্রশিক্ষন নেয়ার পর বিনামূল্যে ১২টি হাঁস পেয়েছিলেন আসমা বেগম। সেই থেকে শুরু বাড়ীতে হাসঁ পালন।
৩ মাস পর প্রতিটি হাঁস বিক্রি করেন সাড়ে ৩’শ থেকে ৪’শ টাকা দরে। এভাবে প্রতি ৩ মাস পরপর বিক্রি করে দেখতে থাকেন লাভের মুখ। বাড়াতে থাকেন হাঁসের সংখ্যা। বাড়তে থাকে আয়। এরপর হাঁস এবং ডিম বিক্রির টাকাসহ নিজেদের দিনমজুর শ্রমে জমানো টাকায় ক্রয় করেন ৩’শ হাঁস। প্রশিক্ষন শেষে বিনামূল্যে পাওয়া ১২টি হাঁস থেকে এখন তাদের এক হাজার হাঁসের খামার। যার বাজার মূল্য প্রায় ৪ লক্ষ টাকা।
বাড়ি লাগোয়া কচুপাত্রা নদীতে প্রতিদিন হাঁস চড়াতে নিয়ে যায় স্বামী জহির বেগ। নদীর প্রাকৃতিক খাবারের পাশাপাশি প্রতিদিন একমণ কাঁচা ধান খাবার হিসেবে দিতে হয়। সংসারের কাজ সেরে সময় দিচ্ছেন আসমা বেগম। ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়–য়া ছেলে আল-আমিন এবং ৫ম শ্রেনীতে পড়য়া মেয়ে মিম আকতারও হাঁসের পরিচর্যায় সহায্য করছে বাবা-মাকে।
আসমা বেগম বলেন, এখন প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২শতাধিক ডিম বিক্রি করে আয় হচ্ছে প্রায় ২ হাজার টাকা। প্রতি ৩ মাস পর প্রতিটি হাঁস বিক্রি করছেন ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়। আয় দিয়ে কিনেছেন দ’ুবিঘা চাষের জমি। ভূমিহীন স্বামীর সংসারে এক সময় কষ্টে কেটেছে। এখন খুব ভালো সময় কাটছে।
জহির বেগ বলেন, অর্থের অভাবে লেখাপড়া করতে পারিফন। ছেলে-মেয়েদেরকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করতে চাই। তারা সরকারি চাকরি করে প্রতিষ্ঠিত হোক।
ফ্রেন্ডশীপ বাংলাদেশ’র প্রকল্প ব্যবস্থাপক জুয়েল হাসান বলেন, অনগ্রসর জনপদের নারীরাও পারে কঠোর শ্রমে ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে। আসমা বেগম তার বাস্তব উদাহরন। এই অঞ্চলে নদী, খাল, পুকুরসহ জলাশয়ের সংখ্যা বেশি হওয়ায় সহজেই হাঁস পালন করা যায়। আগ্রহী নারীদের হাঁস পালনে বিনামূল্যে প্রশিক্ষন দিচ্ছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডশীপ। হাঁস পালন করে অনেক দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের পরিবার স্বাবলম্বী হচ্ছে। মিলেছে অর্থনৈতিক মুক্তি। নারীরা সংসারে বাড়তি আয় করতে পারছে। এতে নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে। পরিবার, সমাজে বাড়ছে তাদের মতামতের গুরুত্ব।
তিনি আরো বলেন, এসিস্ট্যিান্স ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় জেলার কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ও চাকামইয়া ইউনিয়নের ৩৬০টি দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের পরিবারের মধ্যে ৪ হাজার ৩২০টি হাঁস বিতরণ করা হয়েছে।

জেআর/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২০:১২:৫৮ ● ৫৫৫ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ