জাহিদ রিপন, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥
তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে বড়দিনের ছুটি উদযাপনে সাগরকন্যা খ্যাত পর্যটন নগরী কুয়াকাটা এখন প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক পর্যটকের আগমনে মুখতির। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই এসব পর্যটকের আগমনে ভড়ে ওঠে প্রতিটি হোটেল-মোটেল-কটেজের কক্ষ।
মৌসুমের শুরু থেকেই পর্যটকদের উপচে পড়া এমন ভীড়ে খুশী পর্যটন ব্যবসায়ীরা। করোনাকালীন সময়ের দু’দফা লকডাউনের বিশাল ক্ষতি পুষিয়ে নিবেন এমন প্রত্যাশা তাদের। অপরদিকে সকল পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ সচেষ্ট রয়েছে ট্যুরিষ্ট পুলিশ।
শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই এসব পর্যটকদের অনেকেই প্রকৃতির নিপুন হাতে সাজানো নীল-নীলিমার প্রতিচ্ছবি ১৮কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে সাগরের নোনা জলে সাঁতার কাটতে ব্যস্ত। অনেকেই ব্যস্ত প্রশস্ত সৈকতের বালিয়ারিতে ভেসে আসা রং-বেরংয়ের ঝিনুক কুড়াতে। সৈকতের বেঞ্চিতে গাঁ এলিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছেন অনেকেই। লেম্বুর বন, গঙ্গামতির চর, চর বিজয়, বাউলি বন, টেংরাগিরি, ফাতরার বন, তিন নদীর মোহনা, শ্রীমঙ্গল ও সীমা বৌদ্ধ মন্দির, রাখাইন মার্কেট, শুটকি পল্লী, ঝাউবাগান, ইকোপার্কসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান এখন কোলাহল মুখর এসব পর্যটকদের পদচারনায়।
পর্যটকদের পদচারনায় সরগরম খাবার হোটেল-রেস্তোরা। সামুদ্রিক মাছের মুখরচোখ খাবারের আস্বাদ নিতে এখানে ব্যস্ত পর্যটকরা। একই দৃশ্য ফিশফ্্রাই পল্লীতে। বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছসহ কাকড়ার ফ্্রাইয়ের সুবাসিত গন্ধে মাতোয়ারা এখানকার শতাধিক ফ্্রাইয়ের দোকান। প্রায় চার’শ বছরের পুরনো সামুদ্রিক নৌকা মিউজিয়ামেও রয়েছে পর্যটকদের ভীড়।
নাটোর থেকে পরিবার নিয়ে কুয়াকাটায় আসা শিক্ষক দম্পত্তি আবুবকর-সালেহা বলেন, এবার নিয়ে চারবার কুয়াকাটায় এলাম। দিনদিন গড়ে ওঠা আধুনিক নগর সভ্যতা এখানকার প্রাকৃতিকে কিছুটা ম্লান করে দিয়েছে। এছাড়াও প্রকৃতির বারবার ছোবলে সৈকতের সবুজ বনানী, ঝাউবাগান, ইকোপার্ক এখন নিñিহ্ন হওয়ার পথে।
রংপুর থেকে শিক্ষা সফরে আসা বিএ(অনার্স) শিক্ষার্থী নাজমুল বলেন, সূর্যোদয় দেখেছি, ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে সূর্যাস্ত দেখব। প্রকৃতির ছোয়ার মাঝে এমন দৃশ্য উপভোগ, এক কথায় অপূর্ব। বিমোহিত হয়ে দেখার মত। বারবার ফিরে আসব কুয়কাটায়।
কুয়াকাটা হোটেল হোটেল-মোটেল ওনার্স এসোশিয়েশনের সেক্রেটারী জেনারেল মোতালেব শরীফ বলেন, দশদিন আগেই ৯০ শতাংশ হোটেল-মোটেল-কটেজের কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। অনেক পর্যটক ভাল কক্ষ পায়নি। আবার অনেকেই হোটেলে কোন কক্ষই পায়নি। এসব পর্যটকদের সেবা দেয়ার চেস্টা করেছি।
টুরিজ্যম ব্যবসায়ী হোসাইন আমির বলেন, সকল ব্যবসায়ীর দু’দফা লকডাউনের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার আশা দেখছি।
কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক হাসনাইন পারভেজ বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় একনিস্টভাবে কাজ করছে টুরিস্ট পুলিশসহ জেলা পুলিশ, উপজেলা ও জেলা প্রশাসন। সর্বত্র সক্রিয় রয়েছে গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তা-কর্মীরা।
জেআর/এমআর