গলাচিপায় যৌতুক দাবিতে গৃহবধুকে নির্যাতনের অভিযোগ!

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » গলাচিপায় যৌতুক দাবিতে গৃহবধুকে নির্যাতনের অভিযোগ!
শুক্রবার ● ১৭ ডিসেম্বর ২০২১


গলাচিপায় যৌতুক দাবিতে গৃহবধুকে নির্যাতনের অভিযোগ!

গলাচিপা (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

 

পটুয়াখালীর গলাচিপায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্বামী মো. আ. লতিফ নয়ন মুন্সী (৪৫) এর বিরুদ্ধে। জানা গেছে, গত ৩ বছর আগে উপজেলা চরবিশ^াস ইউনিয়নের শাহজাহান মুন্সীর ছেলে মো. আ. লতিফ নয়ন মুন্সী সঙ্গে একই উপজেলার পানপট্টি ইউনিয়নের মো. দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে মোসা. ফাহিমা বেগম (২৭) এর পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের পর হতে ফাহিমা বেগমের বাবার বাড়ি হতে যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে স্বামী আ. লতিফ নয়ন মুন্সী ও তার পরিবার।
ফাহিমা বেগমের গরীব বাবার কাছ থেকে যৌতুক বাবদ টাকা আনতে অস্বীকার করলে স্বামী আ. লতিফ নয়ন মুন্সী, শ্বশুর শাহজাহান মুন্সী, শ^াশুরী লুৎফুন্নেছা, আলমগীর সিকদার দলবদ্ধ হয়ে প্রায়ই গৃহবধু ফাহিমা বেগমের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) ফাহিমা বেগমের বাবার বাড়ি হতে টাকা আনতে পূনরায় চাপ সৃষ্টি করে। ফাহিমা বেগম টাকা আনতে অস্বীকার করিলে লতিফ নয়ন মুন্সী তাকে বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাথারি মারপিট করে শরীরে বিভিন্ন স্থানে জখম করে। পরে খুনের উদ্দেশ্যে ফাহিমা বেগমের মাথা লক্ষ্য করে কোপ দিলে তা ফাহিমা বেগমের বাম হাতের বাহুতে পড়িয়া গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। ফাহিমা বেগমের ডাক চিৎকারে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার সাইফুল ইসলাম জানান, আমার চিকিৎসাধীনে ফাহিমা বেগম দ্বিতীয় তলায় ১৪ নম্বর বেডে ভর্তি আছে। তার বাম হাতে জখমের চিহ্ন আছে। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে কালো কালো দাগ আছে। এ বিষয়ে ফাহিমা বেগমের বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমার মেয়েকে দশ লক্ষ টাকা কাবিনে আ. লতিফ নয়ন মুন্সী বিবাহ করে। বিবাহের পর থেকেই আমাকে আমার মেয়ের জামাই যৌতুকের জন্য মোবাইল ফোনে হুমকি দিয়ে আসছে এবং আমার মেয়েকে প্রায়ই মারধর করে। বৃহস্পতিবার আমার মেয়েকে বেধম মারধর করলে স্থানীয়রা আমার মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করে। আমি প্রশাসনের কাছে সঠিক বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে মোসা. ফাহিমা বেগম বলেন, আমার স্বামী আ. লতিফ নয়ন মুন্সীর প্রথম স্ত্রীর বিবাহ বিচ্ছেদের পর গত তিন বছর পূর্বে তার সাথে আমার বিবাহ হয়। আমাকে দশ লক্ষ টাকা কাবিনে বিবাহ করে। বিবাহের পরপরই আমার স্বামী বিদেশ চলে যায়। বিবাহের পর হতে আমার স্বামী মোবাইল ফোনে আমার কাছে দশ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে। সে দেশে এসে সেই টাকা দিয়ে ব্যবসা করবে বলে জানায়। গত দুই মাস পূর্বে আমার স্বামী দেশে এসে শ্বশুর শাহজাহান মুন্সী, শ^াশুরী লুৎফুন্নেছা, আলমগীর সিকদারের কূপরামর্শে আমাকে মারধর করে। পরে আমার ডাক চিৎকারে এলাকাবাসী এসে পড়লে মারধরকারীরা পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে আ. লতিফ নয়ন মুন্সীর মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে গলাচিপা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এমআর শওকত আনোয়ার বলেন, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শুক্রবার রাতে ফাহিমা বেগম বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করবেন বলে জানান।

এসডি/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:১৪:২২ ● ২৫৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ