গলাচিপা (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীর গলাচিপায় এ্যাকসিলারেটিং এ্যাকশান টু এন্ড চাইল্ড ম্যারেজ ইন বাংলাদেশ প্রজেক্টের উদ্যোগে বাল্যবিবাহ নিরোধকল্পে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন জোরদারকরণ বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টায় উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশিষ কুমারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মু. শাহিন শাহ। আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মস্তফা, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মীর রেজাউল ইসলাম, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. ওলিউল্লাহ, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. কামরুল আহসান মিঞা, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আবদুর রশীদ খান, সিডব্লিউবিএফডি এর প্রতিনিধি নিতিস মন্ডল, রতনদী তালতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম মস্তফা খান, গলাচিপা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নিজামউদ্দিন, গলাচিপা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ. হালিম মিয়া, গলাচিপা প্রেস ক্লাবের সভাপতি সমিত কুমার দত্ত মলয়, সিনিয়র সাংবাদিক খালিদ হোসেন মিল্টন প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, বাল্য বিয়ে কিশোর-কিশোরীর প্রজনন স্বাস্থ্যের জন্য বিরাট হুমকি। গর্ভবতী কিশোরীর উচ্চ রক্তচাপ অথবা খিঁচুনি হয়ে মা ও গর্ভের সন্তানের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। গর্ভাবস্থায় কিশোরী পুষ্টিহীনতায় ভুগলে তার স্বাস্থ্যহানি ঘটা ও কম ওজনের শিশুর জন্মের আশঙ্কা বাড়ে। কিশোরী মায়ের সন্তান পুষ্টিহীনতাসহ নানারকম শারীরিক জটিলতায় ভোগে। এমন কন্যা শিশুর পরবর্তী জীবনে জরায়ুর ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও অনেক বেড়ে যায়। তারা আরও বলেন, অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে হওয়ার কারণে দেশে বিবাহ বিচ্ছেদ, নারীর প্রতি সহিংসতা এবং পারিবারিক নির্যাতন বেড়ে যায়। নারীর শিক্ষা গ্রহণও বন্ধ হয়ে যায় বাল্যবিয়ের কারণে। উপযুক্ত হওয়ার আগেই সংসারের দায়িত্ব নেওয়ার কারণে নারী অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারে না। পর্যায়ক্রমে পারিবারিক ও সামাজিকভাবে বৈষম্যের শিকার হন। কম বয়সের অজুহাত দেখিয়ে নারীকে পরিবারে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। সর্বোপরি, বাল্যবিয়ের কারণে মেয়েশিশু কেবল পরিপূর্ণভাবে বেড়ে উঠতে পারেন না তা নয় পূর্ণবয়সে পৌঁছেও যোগ্য, দক্ষ ও কর্মক্ষম নারী হিসেবে পরিবারে, সমাজে ও রাষ্ট্রে সে যথাযথ ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়। তাই বাল্যবিয়ে রোধে জনসচেতনতা গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। বাল্যবিয়ে বন্ধ করার জন্য অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টির বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক ও সমাজের অগ্রসর নাগরিকদের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে বাল্যবিয়ে রোধে পরিকল্পিত উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারি এবং সামাজিকভাবে আরও বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিতে হবে। অনুষ্ঠানটি বাস্তবায়নে কনসার্নড উইমেন ফর ফ্যামিলি ডেভেলপমেন্ট (সিডব্লিউবিএফডি)। সহযোগিতায় ছিল জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ)।
এসডি/এমআর