ঢাকা সাগরকন্যা অফিস ॥
পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুকে দোষারোপ করেছেন আওয়ামী লীগের শরিক সাম্যবাদী দলের নেতা দিলীপ বড়ুয়া, যিনি আমুর আগে শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। শনিবার ১৪ দলের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে চকবাজারে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে এ বিষয়ে কথা বলেন দিলীপ বড়ুয়া।
২০১৪ সালে নিমতলীর আগুনের ঘটনার সময় শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা দিলীপ সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের যে শিল্পমন্ত্রী ছিলেন, উনি যদি সিরিয়াসলি কেমিকেল গোডাউন ও কারখানা সরানোর বিষয়টি টেকআপ করে নিতেন তাহলে হয়তো এতদিনে পুরান ঢাকার কেমিকেল গোডাউন রিলোকেট (স্থানান্তর) করা সহজ হত। গত বুধবার রাতে চকবাজারের চুড়িহাট্টা মোড়ে ভয়াবহ ওই অগ্নিকান্ডে ৬৭ জনের মৃত্যু হয়।
প্রত্যদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, একটি পিকআপের সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর চুড়িহাট্টা মোড়ে ওই অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়। পরে তা আশপাশের পাঁচটি ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। ওই মোড়ের আশপাশের দোকান আর ভবনে থাকা রাসায়নিক এবং প্লাস্টিক ও প্রসাধনীর গুদাম চুড়িহাট্টার আগুনকে ভয়াবহ মাত্রা দেয় বলে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ধারণা। নিমতলীতে ২০১০ সালে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে শতাধিক মানুষের প্রাণহানির পর তদন্ত কমিটি পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদাম ও কারখানা সরিয়ে নেওয়ার সুপারিশ করেছিল। নয় বছরেও সেই সুপারিশের বাস্তবায়ন না হওয়ায় চুড়িহাট্টার মত ঘটনা আবার ঘটল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
সে প্রসঙ্গ টেনে দিলীপ বড়ুয়া বলেন, কেমিকেল বিজনেস রিলোকেট করার জন্য আমি মন্ত্রী থাকাকালে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, কেমিকেল মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এবং বিসিক, তারা মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তারা ঢাকার বাইরে একটি জমিতে স্থানান্তরিত হবে। এটা আমাদের প্রতিজ্ঞা ছিল। কিছু ডিসক্রিট (বিচক্ষণ) ব্যাপারের কারণে পুরো ব্যাপারটি এগোয়নি। ঢাকাকে বাসযোগ্য ও নিরাপদ করতে ‘সোশ্যাল করপোরেট রেসপনসিবিলিটি’ যেভাবে গড়ে ওঠার কথা, তা সেভাবে হয়নি বলে মনে করেন সাম্যবাদী দলের নেতা।
তিনি বলেন, যারা স্টেক হোল্ডার আছেন, তারা সরকারকে বাধ্য করতে পারেনি। ভবন মালিকদেরও দায় আছে। তারা বেশি ভাড়া পাওয়ার জন্য গোডাউন (রাসায়নিকের জন্য) ভাড়া দেয় এবং ব্যাপারটি লুকিয়ে রাখে। রাসায়নিকের মজুদের সনদ দেওয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সিটি করপোরেশনকে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দেন সাবেক এই শিল্পমন্ত্রী। অন্যদের মধ্যে গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন, জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য এজাজুল হক মোক্তার, বাসদের (বাসদ-মাহবুব) আহ্বায়ক রেজাউর রশীদসহ ১৪ দলের নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এফএন/কেএস