ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
আইন বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার নেপথ্যে যারা ছিল তাদের খুঁজে বের করতে শিগগিরই কমিশন গঠন করা হবে।
শনিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে বাংলাদেশ আইনজীবী সহকারী সমিতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের গণশুনানির প্রতি ইঙ্গিত করে আইনমন্ত্রী বলেন, ষড়যন্ত্র কিন্তু শেষ হয়নি। এই যে ঘুমানো চক্র (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) দেখছেন, তারা কিন্তু একটি জিনিসই পারেন, তা হলো ষড়যন্ত্র। ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও তারা একইভাবে ষড়যন্ত্র করছে। যারা আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে তারা কিন্তু বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকেও তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নেপথ্যে কারা ছিলেন তাদের চিহ্নিত করার জন্য একটি কমিশন দরকার। আজকে তাদের চেহারা ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছে। আমরা সেই কমিশনও জনগণকে উপহার দেব যাতে ইতিহাস ঠিকভাবে লিখিত হয়। বিকৃত ইতিহাস যেন আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আর পড়তে না হয়।
শনিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির অডিটরিয়ামে বাংলাদেশ আইনজীবী সহকারী সমিতি আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া ভোটারবিহীন একটি নির্বাচন করেছিলেন। ভোটারবিহীন নির্বাচন হয়েছিল বলেই দেড় মাসের মধ্যে খালেদা জিয়াকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হয়েছিল। আর তারা বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন হয়নি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে পাঁচ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে সরকারের দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই পাঁচ বছর জনগণ সেবা পেয়েছেন তাই আন্দোলন হয়নি। কিন্তু ২০১৪ সালে খালেদা জিয়া আন্দোলনের চেষ্টা করে অগ্নিসন্ত্রাস করেছেন। জনগণ কিন্তু তাতে সায় দেয়নি। আবার তারা ২০১৮ সালে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির অডিটরিয়ামে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কর্তৃক অনুষ্ঠিত গণশুনানির প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, জাতীয় নির্বাচনে পরাজিত হয়ে তারা এখন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির অডিটরিয়ামে ‘অডিটরিয়াম শুনানি’ করছেন। তারা বলছেন, ৩০ ডিসেম্বর নাকি নির্বাচন হয়নি। তাদের ওই অনুষ্ঠানে একজনও জনগণ নেই। তারা ঘুমিয়েছেন এখানে বসে। তারপরও বলছেন, ওঁরা নাকি এখানে (সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির অডিটরিয়ামে) গণশুনানি করেছেন। জনগণ তো শেখ হাসিনার সঙ্গে, ওঁদের সঙ্গে নেই। ওঁদের সঙ্গে জনগণ নেই বলেই তাদের অডিটরিয়ামে বসে শুনানি করতে হয়, সেক্ষেত্রে শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে গণশুনানি করেছিলেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। আর এখানেই হলো শেখ হাসিনার সঙ্গে তাদের পার্থক্য।
অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত করেছেন। তিনি একটি ভিশন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ হবে, সেই দ্বারপ্রান্তে কিন্তু আমরা পৌঁছে গেছি। ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হিসেবে সারা দেশে পরিচিত হবে বাংলাদেশ। আর এই বাংলাদেশকে খালেদা জিয়া ও ড. কামাল হোসেনরা পাকিস্তানের পেছনে রাখতে চান। আর সেই বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারা বিশ্বের সেরা পঞ্চাশটি দেশের মধ্যে একটা। এত বাধার পরও বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল হয়ে মাথা উঁচু করে রয়েছে। আর ২১০০ সালের ব-দ্বীপ পরিকল্পনা কেউ দিয়েছিল? একমাত্র শেখ হাসিনা সেই পরিকল্পনা দিয়েছেন। শেখ হাসিনার সেই পরিকল্পনাকে সামনে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে আপনারা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাবেন। আর রাজাকার, আল বদররা যদি বাধা দেয় তবে আন্দোলন করে সেই বাধা পিষ্ট করে দেবেন। তিনি বক্তব্যে আইনজীবীদের সহকারীদের জন্য পৃথক আইন প্রণয়নের বিষয়ে সকলকে আশ্বস্ত করেন।
বাংলাদেশ আইনজীবী সহকারী সমিতির সভাপতি মো. মোহাম্মদ নূর মিয়ার সভাপতিত্বে এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন, রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন, বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, ঢাকা কোর্ট আইনজীবী সহকারী সমিতির সভাপতি মো. আবদুল হান্নান, সাধারণ সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম প্রমুখ।
এফএন/এমআর