চরফ্যাশন (ভোলা)সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
চরফ্যাশনের ৭টি ইউপি নির্বাচন পরবর্তী উপজেলার ৪টি ওয়ার্ডে পৃথক পৃথক সংঘর্ষে ৩২জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৫জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রসুলপুর ৪নং ওয়ার্ডের দু‘ মেম্বার প্রার্থীর ভোট সমান সমান হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের আইনে ওই এলাকায় পুনঃরায় নির্বাচন হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় হামলার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) সকাল ৯টায় ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড কেন্দ্র সংলগ্ন সিকদার বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন। হামলায় আহতরা হলেন, ছকিনা খাতুন (৭০) রুনা বেগম (৫০) আবু তাহের (৪০), নাহার (৩৭) বিবি তাহেরা (৩৫) প্রেমা (১২) ও সাকিব (৭)। আবদুল মন্নান সিকদার বলেন,আমাদের বাড়ির লোকেরা বাড়ি সংলগ্ন চায়ের দোকানে গেলে রমিজ ও টুটুল, মনির, সাদ্দাম, কাইউম, তারেক, মিঠু, ছাত্তার, সিরাজ, ফিরোজসহ একাধিক বহিরাগত সন্ত্রাসীদল আমাদের মারধর করে বাড়িঘর কুপিয়ে ও ইটপাটকেল মেরে ঘরে প্রবেশ করে টাকা পয়সা এবং স্বর্ণালঙ্কার লুটপাট করে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে চরফ্যাশন থানাপুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে রমিজ উদ্দিন বলেন, চায়ের দোকানের সামনে নির্বাচনী বিষয়কে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে দুই পক্ষের মধ্যেই পাল্টাপাল্টি হামলা হয়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জাানা গেছে।
অন্যদিকে একই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড হাসানগঞ্জ গ্রামের মমতাজ বেগমকে ২নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য প্রার্থী আলমগীর মাতাব্বরের মোরগ প্রতীকের সমর্থন করায় সকাল ১০টায় ও আলমগীর পাটোয়ারীকে আনারস প্রতীকের এজেন্ট হওয়ায় মুশফিকুর রহমান, মাহিম, আপন, আসিফ, নিশাত ও রুবেল, শফিক, তানজিদ, রহিম, খালেক, ইউসুফ মিলে দেশিও অস্ত্র নিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে বাড়িঘরে হামলা ভাংচুর,মারধর ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনায় চরফ্যাশন থানায় আলাদা দুইটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগীরা।
এছাড়াও রসুলপুর ৪নং ওয়ার্ডে তালা প্রতীকের প্রার্থী শাহেআলম ও টিউবওয়েল প্রতীকের প্রার্থী কামালের সমর্থক কর্তৃক দুই দফায় বাড়িঘরে হামলা ও ভাংচুর করে বলেও খবর পাওয়া গেছে। তবে এ হামলায় চরফ্যাশন হাসপাতালে কামাল খাঁ’র ৪ সমর্থককে গুরুতর আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে আহতরা হলেন,ওয়ার্ড শ্রমিক লীগ সভাপতি বাবুল খাঁ ও সাংগঠনিক সম্পাদক সবুজ সবুজ খাঁ (৫২), আলাউদ্দিন খাঁ (৪৫) ও রাসেল বেপারী (২২)। আহত বাবুল অভিযোগ করে বলেন, আমরা টিউবওয়েল প্রতীক কামাল খাঁ’র সমর্থক। প্রতিদ্বন্দ্বী তালা প্রতীকের প্রার্থী শাহে আলমের নেতৃত্বে, মহিউদ্দিন, সোলাইমান,বেলায়েত ও রফিকসহ শতাধিক সন্ত্রাসী গুন্ডা বাহিনী আমাদের উপর হামলা দেশিও ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করে। সবুজ বেপারী বলেন, ভোট গণনা শেষে আমরা শুনতে পাই যে আমাদের টিউবওয়েল প্রতীক দুই ভোট বেশি পেয়ে জয়লাভ করে। কামাল খাঁ বলেন,শাহেআলম গ্রুপ আমাদের কৌশলে মামলা হামলার উদ্দেশ্যে এঘটনা ঘটিয়েছে এবং শাহেআলম গ্রুপের লোকেরা আমাকে হুমকি বাড়িঘর ছাড়া করার জন্য ধমকি দিচ্ছে। তবে তালা প্রতীকের লোকজন এসে আমাদের হুমকি ধমকি দিয়ে বলে কোনো উল্লাস হবেনা কিসের দুই ভোট বেশি পেয়েছে? ভোট সমান সমান হয়েছে বলেই আমাদের মারধর করে। এ অভিযোগ অস্বীকার করে তালা প্রতীকের প্রার্থী শাহে আলম জানান, ভোটের বিষয় নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিবেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, টিউবওয়েল ৭৬৩ ও তালা প্রতীক ৭৬৩ ভোট পেয়েছে। আইন অনুযায়ী এ দুই প্রার্থীর ভোট পূনরায় নেয়া হবে।
শশীভূষণ থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান পাটোয়ারী বলেন অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এএইচ/এমআর