কর্ণফুলির তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেলের খনন শুরু হচ্ছে রবিবার

প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » কর্ণফুলির তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেলের খনন শুরু হচ্ছে রবিবার
শনিবার ● ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৯


কর্ণফুলির তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেলের খনন শুরু হচ্ছে রবিবার

চট্টগ্রাম সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

চট্টগ্রামে কর্ণফুলি নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের মূল নির্মাণ কাজের সূচনা হচ্ছে রবিবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার বেলা ১১টায় এ প্রকল্পের খনন কাজের উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) তিনি বলেন, টিবিএম মেশিন দিয়ে এ খনন কাজ শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী তা উদ্বোধন করবেন। বন্দরনগরী চট্টগ্রামকে চীনের সাংহাইয়ের আদালে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ মডেলে গড়ে তুলতে কর্ণফুলীর তলদেশে এই টানেল নির্মাণের কাজে হাত দিয়েছে সরকার। এরইমধ্যে এ প্রকল্পের ৩২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের জন্য চীন থেকে আনা হয়েছে যন্ত্রপাতি। খননকাজে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রকল্প এলাকার কাছে বসানো হয়েছে ১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ সাব স্টেশন। চার লেইনের তিন দশমিক চার কিলোমিটার দীর্ঘ এ টানেল হবে দুই টিউব সম্বলিত। পূর্ব পশ্চিম প্রান্তে হবে পাঁচ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক। টানেলের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৫৫ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় তা আট হাজার ৪৪৬ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪ হাজার ৭৯৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকার যোগান দেবে চীনের এক্সিম ব্যাংক। বাকি ৩ হাজার ৬৪৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে সেতু কর্তৃপক্ষ। এ টানেল একদিকে চট্টগ্রাম শহররে বন্দর এলাকা ও অন্যদিকে আনোয়ারা উপজেলাকে সংযুক্ত করবে। টানেল চালু হলে পর্যটন নগরী কক্সবাজারসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ আরও সহজ হবে। কর্ণফুলীর দুই সেতুর ওপর যানবাহনের চাপ কমবে বলেও সরকার আশা করছে।
এ টানেল নির্মাণের জন্য বিগত বছর ১০ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বেইজিংয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এরপর বাংলাদেশ সেতু র্কতৃপক্ষ, চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি (সিসিসিসি) ও অভি অরুপ অ্যান্ড পার্টনার্স হংকং লিমিটেড যৌথভাবে টানেলের কারিগরি ও অর্থনৈতিক সমীক্ষা করে। বিগত ৩০ জুন সেতু কর্তৃপক্ষ ও সিসিসিসির মধ্যে হয় বাণিজ্যিক চুক্তি। ওবায়দুল কাদের গেল সপ্তাহে জানান, কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ প্রকল্পের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে।
পর্যায়ক্রমে কেমিকেল গোডাউনগুলো সরিয়ে নেওয়া হবে: প্রথমে চকবাজার এরপর পর্যায়ক্রমে দ্রুতই পুরান ঢাকার অন্যান্য কেমিকেল গোডাউন নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শনিবার সকালে চকবাজারে অগ্নিকা-ে ক্ষতিগ্রস্ত চুড়িহাট্টা এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা জানান। মন্ত্রী বলেন, পুরান ঢাকার চকবাজার থেকে অবৈধ কেমিকেল কারখানা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগ নিতে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন। ইতোমধ্যেই দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এই অবৈধ রাসায়নিক কারখানা সরিয়ে নিতে কাজ শুরু করেছে। পুরান ঢাকার মজুদ করা সব কেমিকেল ও রাসায়নিক পদার্থ খুব দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরানো হবে। তিনটি বিষয়ের প্রতি প্রাথমিকভাবে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, নিহতদের স্বজনদের কাছে ফতারি হস্তান্তর ও আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং এখনও যাদের শনাক্ত করা যায়নি তাদের স্বজনদের ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে ফতারি হস্তান্তর করা। এর পরের কাজ কেমিকেলের গোডাউন সরিয়ে নেওয়া।
এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে চকবাজার থেকে কেমিকেল গোডাউন সরানোর জন্য সিটি কর্পোরেশনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা তালিকা তৈরি করছে। প্রথমে চকবাজার, পরবর্তীতে সমগ্র পুরান ঢাকা থেকেই কেমিকেল গোডাউন সরিয়ে ফেলা হবে। এর আগে একাধিকবার পুরান ঢাকার রাসায়নিক পদার্থের গোডাউন সরানোর কথা হয়েছিলো। কিন্তু সম্বনয়হীনতার কারণে সম্ভব হয়নি। এবার সংশ্লিষ্ট সংস্থার সহায়তায় এখানকার সব অবৈধ ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিক গোডাউন নিরাপদ স্থানে সরানো হবে। এবার আটঘাট বেঁধে নেমেছি। ঘটনা তদন্তে তিনটি কমিটি গঠন করে তাদের তিনদিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
শিল্পমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিল্পমন্ত্রী সেভাবে বলেননি, যেভাবে মিডিয়ায় এসেছে। উনি বলেছেন সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুনের সূত্রপাত। এসময় ঝুঁকিপূর্ণ সিলিন্ডার ব্যবহারের পরিবর্তে বিকল্প কিছু চিন্তা করছে সরকার বলেও জানান তিনি।

এফএন/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৪:৪২:৫৩ ● ৫৯৬ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ