পটুয়াখালী সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
ঢাকা-রাঙ্গাবালী নৌ-রুটের ডাবল ডেকার যাত্রীবাহি লঞ্চে হামলা, চাঁদাবাজী ঘটনার প্রতিবাদে গত শনিবার থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে জেলার রাঙ্গাবালী, দশমিনা, গলাচিপা ও বাউফল উপজেলার বিভিন্ন ঘাটের কয়েক হাজার যাত্রী। যাতায়াতসহ পন্য পরিবহনের একমাত্র নৌ-পথের সংকট সমাধানে এখনও কোন সুরাহা হয়নি।
লঞ্চ কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, দশমিনা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ লিটন ১৭ নভেম্বর বুধবার এমভি জাহিদ-৩ লঞ্চের মালিক জাহিদ মেলকারকে আউলিয়াপুর লঞ্চঘাট পল্টুনে চায়ের আমন্ত্রন জানান। এসময় জাহিদ মেলকারের কাছে আউলিয়াপুর, বাঁশবাড়িয়া এবং হাজির হাট লঞ্চঘাটে সুপারভাইজার নিয়োগের জন্য দাবি করেন ইকবাল। এসব ঘাটে লঞ্চের সুপার ভাইজার নিয়োগ করা রয়েছে। পরিবর্তন করে নতুন নিয়োগ দেয়া সম্ভব নয় জানালে ক্ষুব্ধ হয়ে লঞ্চ দীর্ঘ সময় ঘাটে আটক করে রাখেন লিটন এবং তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা। একপর্যায়ে যাত্রী ও লঞ্চ কর্তৃপক্ষের অনুরোধে লঞ্চ ছেড়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে ১৯ নভেম্বর শুক্রবার বিকালে এমভি জাহিদ লঞ্চটি আউলিয়াপুর লঞ্চঘাটে যাত্রী তুলতে নোঙর করলে এজাবারের আসামীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে লঞ্চে উঠে ১০জন কর্মচারীকে পিটিয়ে জখম করে। লঞ্চে ভাংচুর চালায়। এ সময় লঞ্চের সিন্ধুক থেকে ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৬২০ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। হামলায় গুরুত্বর আহত লঞ্চ স্টাফ আব্দুস সত্তার (৪২), মাহাবুবকে (২৮) পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং জহিরকে (৩২) বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ২০ নভেম্বর শনিবার সকালে দশমিনা থানায় লঞ্চের ক্যাশিয়ার ইউসুফ বাদী হয়ে ইকবাল মাহমুদ লিটনসহ ১৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে। মামলা দায়েরের পর পুলিশ হৃদয় নামে এজাহারভুক্ত একজনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
তবে দশমিনা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও দশমিনা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহামুদ লিটন ঘটনাটিকে মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন বলে দাবী করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটুয়াখালী-৩ (দশমিনা গলাচিপা) আসনের সংসদ সদস্য ও নৌ-পরিবহ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এসএম শাহজাদা সাংবাদিকদের বলেন, ইতোমধ্যে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ এবং বিআইডবি¬উটিএর চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা হয়েছে। লঞ্চ মালিকদের অনুরোধ করা হয়েছে যাত্রীদের জিম্মি না করার জন্য। আশা করি দ্রুত সময়ের সমাধান মিলবে।
দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, একজনকে গ্রেপ্তার করাা হয়েছে। বাকীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান অব্যহত রয়েছে।
জেআর/এমআর