কলাপাড়ায় স্কুলভবন না থাকায় দুর্ভোগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা!

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » কলাপাড়ায় স্কুলভবন না থাকায় দুর্ভোগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা!
সোমবার ● ২২ নভেম্বর ২০২১


কলাপাড়ায় স্কুলভবন না থাকায় দুর্ভোগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা!

কলাপাড়া(পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নে নিভৃত এক গ্রামে মনোরম পরিবেশে ১৬২নং বেতকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ ও ঝুকিপুর্ণ শ্রেণিকক্ষে চলছে কোমলমতি শিশুদের পাঠদান। টিনশেড ঘরে তাতে বৈদুতিক পাখার ব্যবস্থা করেনি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফলে প্রচন্ড গরমে ঘেমে ভিজে ক্লাস করতে হচ্ছে কোমলমতি শিশুদের।
এ বিদ্যালয় থেকে প্রতি বছর উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ছাত্রÑছাত্রী পঞ্চম শ্রেনির গন্ডি পেরিয়ে মাধ্যমিক পর্যায়ের ষষ্ট শ্রেনিতে লেখাপড়ার সুযোগ লাভ করে। বর্তমানে এ বিদ্যালয় ১১১ জন শিক্ষার্থী নিয়মিতভাবে অধ্যায়ন করছে। শিশু শ্রেনি থেকে পঞ্চম শ্রেনি পর্যন্ত ছয়টি ক্লাসের পাঠদান চালাতে গিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জায়গার অভাবে হিমশিম খাচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়টি দীর্ঘ ২২ বছর ধরে এলাকায় শিক্ষার মনোন্ন্য়নে ব্যাপক ভুমিকা রেখে চলছে।
বিদ্যালয় সুত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়টি ১৯৯১সালে ৩৩শতাংশ জমির উপর প্রতিষ্টিত করা হয়। এর পর ২০১৩সালে এটি জাতীয়করন করা হয়। বর্তমানে এতে ১১১ জন শিক্ষার্থী ও ৪ জন শিক্ষক রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নে ১৬২নং বেতকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জরাজীর্ন ও ঝুকিপুর্ন শ্রেনিকক্ষে চলছে কোমলমতি শিশুদের পাঠদান। ছাত্রÑছাত্রীদের ক্লাশ করার জন্য রয়েছে ১ টি টিনের ঘর। তা আবার অধিকাংশ টিন মরিচা পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। চালের ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছে সুর্য। বৃষ্টি পানি পড়ছে শিক্ষার্থীর গায়ে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে কর্দমাক্ত হয়ে যায়। এভাবেই বছর পর বছর ধরে ভগ্নদশার টিনশেড ঘরে চলছে পাঠদান।  টিনশেডের অনেক স্থানে ফুটো হয়ে যাওয়ায় বর্ষার সময় বৃষ্টিপাতে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয় শিক্ষার্থীদের। বিদ্যালয় কোনো সীমানা(বাউন্ডারী)দেয়াল না বিদ্যালয় ভেতর দিয়ে যাতায়াত করছেন বহিরাগত লোকজন। রয়েছে মাদকসেবীদের আনাগোনা। সীমানা প্রাচীর না থাকায় বিদ্যালয় অরক্ষিত রয়েছে। এতে শিক্ষকÑশিক্ষার্থীরা প্রায়ই নিরাপওাহীনতায় থাকেন। এছাড়া বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ভালো হওয়ায় দিন দিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। অতিরিক্ত শ্রেনিক্ষ না থাকায় একটি টিনের ঘরে শিক্ষার্থীও ক্লাস করতে হচ্ছে।  অবহেলিত এই অঞ্চলের মানুষের মাঝে প্রায় ২২ বছর ধরে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে আসছে এই আদর্শ বিদ্যাপিঠটি। কিন্তু অনেক বছর পার হলেও এখনও এই বিদ্যাপিঠটিতে কোন প্রকারের আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি এই বিদ্যাপিঠ নানা সমস্যায় জর্জড়িত। সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভবন সঙ্কট। শ্রেনিকক্ষ সঙ্কট, বেঞ্চের সঙ্কট, জরুরি কাগজপত্র রাখার জন্য নেই পর্যাপ্ত-পরিমাণ-আসবাবপত্র। আশানুরূপ ছাত্রছাত্রী থাকলেও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও শ্রেণিকক্ষের সঙ্কট, বৈদ্যুতিক ফ্যান না থাকাসহ অন্তহীন সমস্যায় পাঠদান ব্যবস্থা দিন দিন মুখ থুবড়ে পড়ছে। শ্রেণিকক্ষ সঙ্কটের কারণে বাধ্য হয়ে কমলমতি শিক্ষার্থীদের জরাজীর্ন ছোট একটি টিনসেড ঘরে ক্লাস করানো হচ্ছে। ওই এলাকার বৌলতলীপাড়া, বেতকাটাপাড়া, মুসলিমপাড়া, বেতকাটাচর, পুর্ব ডালবুগজ্ঞ গ্রামের শিক্ষার্থী পড়া শুনা কওে বিদ্যালয়টি। ক্ষুদ্র নৃগোষ্টি রাখাইন নামানুসারে বেতকাটাপাড়া রয়েছে বিদ্যালয়ের নাম। দুটি পাড়ার মাঝ খানে রয়েছে এ বিদ্যালয়টি। বৌলতলীপাড়া ১৭টি ও বেতকাটাপাড়া ২৪টি রাখাইন পরিবারের ছেলে মেয়েরা ওই বিদ্যালয় পড়াশুনা করে। বাংলা বর্নমালায় আলো ছড়ালেও নিজ মাতৃভাষায় (রাখাইনরা) এখনও অন্ধকারেই রয়ে গেছে তাদের নিজস্ব ভাষা।
বেতকাটাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনির ছাএী  মোসা. কারিমা জানান, টিনশেড ঘরে আমাদের ক্লাশ করতে খুবই কষ্ট হয়। গরমে দিনে ক্লাসে বসা থাকা যায় না।
বেতকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.আলাউদ্দিন জানান, বিদ্যালয় ভবন নেই তা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বারবার জানানোর পরও বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কোনো অগ্রগতি নেই।
কলাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত)¡ আবুল বশার জানান, উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় জরাজীর্ন অবস্থায় ১৭টি রয়েছে। ওই সব বিদ্যালয়  সমস্যা চিহ্নিত করে এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর জানানো হয়েছে।

এইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২০:১৫:৫৯ ● ৪০৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ