রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন আহমদের কিছু অজানা কথা

প্রথম পাতা » মুক্তমত » রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন আহমদের কিছু অজানা কথা
শনিবার ● ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৯


এ.কে.এম শামছুল হক রেনু

এ.কে.এম শামছুল হক রেনু

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ দেশের জনমানুষের কাছে একজন ন্যায় নিষ্ঠাবান, নির্লোভ, সজ্জন, আদর্শবান ও কর্মজীবনে রাজনীতি বিমূখ, পরিচ্ছন্ন ও সাদা মনের মানুষ হিসেবে সমধিক পরিচিত। এছাড়া তিনি একজন স্বনামধন্য ব্যক্তি হিসেবে যথেষ্ট সমাধিত। কর্মজীবনে একজন সিএসপি (Civil Service of Pakistan) হিসেবে সিভিল সার্ভিসে যোগদান করলেও পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি, ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর সেনাশাসক এরশাদের পতনের পর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হিসেবে অলংকিত হন।

তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ গুলশান- ২ রোড ৫৯ ও ১০ নং নিজ বাসায় স্বপরিবারে বসবাস করে আসছেন। তাঁর ২ ছেলে ও ২ মেয়ে। ১ ছেলে ও ১ মেয়ে স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করলেও অপর মেয়ে ড. সেতারা পারভীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিক বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্যান্যদের সাথে ২০০৭ সালে মৃত্যুবরণ করেন। বর্তমানে তাঁর ছেলে সোহেল আহমদ পিতার দেখাশুনার জন্য ঢাকাতে শাহাবুদ্দিন আহমদের সাথে বসবাস করছে। ইতোমধ্যে দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী থেকে শাহাবুদ্দিন আহমদের সহধর্মিনীও ইন্তেকাল করেছেন। তার ভাগীনা সাইফুল ইসলামের কাছ থেকে জানা যায়, কয়েক বছর ধরে তার মামা রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন আহমদের স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়ার কারণে কাহাকেও তিনি চিনতে পারেননা। তবে তিনি রীতিমতো খাওয়া দাওয়া করেন এবং সারাক্ষণ দেশী বিদেশী পত্র পত্রিকা, ম্যাগাজিন ও বই পুস্তক পড়েই সময় অতিবাহিত করে থাকেন। তিনি নাকি বলেছেন, আমার কোনো শত্রু নেই। সেহেতু পাহারার জন্য সরকারের বাড়তি খরচ না করে তাঁহার ইচ্ছাতেই বাসার পুলিশ পাহারা (Police Protection) ওঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

তিনি বৃহৎ ময়মনসিংহের নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ফেমুই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁহার পিতার নাম তালুকদার রেসমত উদ্দিন ভূঞা। তাঁহার মাতা পিতা অনেক আগেই ইন্তেকাল করেন। এছাড়া তাঁহার ৩ ভাই ও ৭ বোনের সকলেই ইন্তেকাল করেছেন। পারিবারিক গোরস্তানে ভাই ও মাতা পিতাকে সমাহিত করা হয়ে থাকে। তিনি নান্দাইল উপজেলাধীন মুসুল্লীর কামালপুরের সরকার বাড়ীতে বড় বোনের বাড়ীতে থেকে মুসুল্লী জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা শেষ করেন এবং বোনের এখানে থেকেই নান্দাইল উপজেলার চন্ডিপাশা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পাশ করেন। পরবর্তী সময় কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল মহাবিদ্যালয় থেকে বি.এ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পাশ করে অক্সফোর্ড (Oxford) থেকে কৃতিত্বের সাথে উচ্চ ডিগ্রী লাভ করে থাকেন।

চাকরি জীবন থেকে রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন সময়ে তাঁর জীবনের অনেক স্মরণীয় ঘটনা রয়েছে। যা হয়তো অনেকেই জানে না। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে উচ্চ বিলাসী কিছু সেনা কর্মকর্তাদের হাতে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান

নির্মমভাবে নিহত হলে তিনি তখন রেডক্রসের (বর্তমানে রেডক্রিসেন্ট) চেয়ারম্যান হিসেবে শত অপ্রতিকুলতার মধ্যে জীবন মরণ বাজি রেখে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া পাহাড়ের পাদদেশ থেকে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের লাশ উদ্ধার করেন।

জানা যায়, তিনি রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর এলাকার লোকজন ও আত্মীয়-স্বজন অনেকবার তাঁহাকে কেন্দুয়ার ফেমুই গ্রামের বাড়ীতে মাতা পিতার কবর জেয়ারতের কথা বললে তিনি নাকি বলেছিলেন মাতা-পিতা ও দাদা-দাদীর কবরতো অনেকবার জিয়ারত করেছি। কিন্তু রাষ্ট্রপতি হিসেবে মাতা-পিতার কবর জিয়ারতে গেলে হেলিকপ্টার, প্রটেকশান (নিরাপত্তা) ও আনুষাঙ্গিক সরকারের অনেক টাকা ব্যয় হবে। সরকারি এত টাকা ব্যয় করে কবর জিয়ারত করলে লাভের কিছুই দেখি না। তিনি নাকি আরও বলেছিলেন, মাতা পিতার কবর জিয়ারতের সরকারি সাশ্রয়ী অর্থ দিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ জনহিতকর প্রতিষ্ঠান করা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তাই রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন তিনি মাতা-পিতা ও দাদা-দাদীর কবর জিয়ারত করতে আগ্রহী না হলেও পরবর্তী সময় রাষ্ট্রপতি না থাকাকালীন সময়ে মাতা-পিতা ও দাদা-দাদীর কবর জিয়ারত করে থাকেন।

রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন সময়ে তাঁহার সাথে আমরা কয়েকজন বঙ্গভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি রাষ্ট্রপতি হলেও তিনি একজন সাধারণ মানুষের মতো আমাদিগকে গ্রহণ করে থাকেন। যা কোন দিন ভুলে যাওয়ার নহে। সেদিন তাঁহার কথাবার্তা, বেশভূষা আচরণে কোনো দাম্ভিকতা স্পর্শ করেনি। তাঁহার অপূর্ব সানন্দ ব্যবহারে সবাইকে মুগ্ধ করেন। তিনি এলাকার অনেক সহপাঠির খোঁজখবর নেন। তারপর নিজ থেকেই বলেন, যারা মেধাবী অসহায় ও এতিম আর্থিক কারণে পড়ালেখা করতে পারেনা তাদের ব্যাপারে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা যেন অগ্রাধিকার (priority) ভিত্তিতে তালিকা করে তাঁহার কাছে প্রেরণ করে। এ ব্যাপারে আমাদিগকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তিনি আমাদিগকে চাপানে আপ্যায়িত করেন। তিনি তখন চা কাপের মধ্যে টোস্ট বিস্কুট ভিজিয়ে খাচ্ছিলেন এবং রসিকতা করে হাঁসতে হাঁসতে বলেছিলেন, এক সময় বৃহৎ ময়মনসিংহ অঞ্চলে কুকিজ বিস্কুটের খুব প্রচলন ছিল। আর এই কুকিজ বিস্কুট এলাকার ছোট-বড় অনেকেই চা কাপে ভিজিয়ে খেতে খুবই পছন্দ করতো। আর তখন ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীরা ভোটারদেরকে চায়ের সাথে কুকিজ বিস্কুট দিয়ে আপ্যায়ন করতো। সেই কুকিজ বিস্কুট এখন আর দেখা যায় না। তিনি আরও বলছিলেন, বঙ্গভবনে বাসার চত্বরে লাউ ও শিম গাছ লাগিয়ে ছিলাম। এক সময় লাউ ও শিম দিয়ে মায়ের হাতে রান্না করা তরকারি খেতে যে স্বাদ পেতাম, সেই স্বাদ এখন লাউ ও শিমের তরকারিতে পাওয়া যায় না। তারপর মুসুল্লীর কামালপুরের সরকার বাড়ীতে বড় বোনের সাথে থাকার সময় বোনের হাতে পাক করা মাসকলাই ডালের প্রশংসা করে বড় বোন ও ভগ্নিপতির অনেক স্মৃতি অর্পন করে থাকেন। মনে হচ্ছিল আমরা যেন দেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাথে কথা বলছি না। এ জামানায় যা ভাবলে অবাক ও রীতিমতো আশ্চর্য হওয়ারই কথা।

রাষ্ট্রপতি হিসেবে শাহাবুদ্দিন আহমদ এক সময়ে নেত্রকোনা জেলায় আগমনকালে এলাকার শ্রেণী পেশার ও সাধারণ লোকজন নেত্রকোনা সার্কিট হাউজে দেখা করতে গেলে সাক্ষাৎকালে অনেকেই এলাকার অনেক সমস্যা ও দাবী দাওয়া জানিয়ে থাকে। রাষ্ট্রপতি নিজের বেতন ভাতার সঞ্চিত অর্থ দিয়ে অনেক সমস্যার সমাধান এবং এলাকার বিত্তশালীদের এসব ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। জনস্বার্থে কিছু কিছু উন্নয়নের ব্যাপারে সরকারি অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নাকি বলেছিলেন, সব কিছুতে সরকারি অনুদানের দিকে তাকিয়ে থাকা ঠিক নহে। এছাড়া সরকারি অর্থ সহায়তায় দেদারছে ব্যয় করাও সঠিক নহে। সরকারি অর্থ দেশের জনগণের ঘাম ঝরানো খাজনা ট্যাক্সের টাকা। সরকারি মাল দরিয়া মে ঢাল এর অন্যথা হলে এ দুনিয়াতে জবাব দিতে না হলেও মৃত্যুর পর পরকালে একদিন আল্লাহর কাছে এসবের সওয়াল জবাব করতে হবে। দুই কাঁদের কেরামান কাতেবিন দুই ফেরেস্তা আল্লাহ রাব্বুল আল আমীনের নির্দেশে সার্বক্ষণিক প্রত্যেকের আমলনামা (কৃতকর্ম) লিপিবদ্ধ করছে। যা কাহাকেও পিছু ছাড়বে না। রাষ্ট্রপতি হিসেবে এ ব্যাপারে আমার দায়িত্ব আরও অনেক বেশী। যার ফলশ্রুতিতে এলাকার জনসাধারণ রাষ্ট্রপতির নিকট দাবী দাওয়া নিয়ে আসা অনেক সমস্যার সমাধান নিজেরাই করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে এবং এ প্রতিশ্রুতি পালনও করা হয়ে থাকে। তিনি আরও বলেছিলেন, যেভাবে ব্যাংকের টাকা লোপাট, শেয়ার কেলেংকারি, উন্নয়ন কাজে দুর্নীতি থেকে শুরু করে অনেক ক্ষেত্রে যে বেসামাল কেলেংকারি, মানি লন্ডারিং ও সরকারি কোটি কোটি টাকা লুটপাটের কথা শুনা যায়, তা যদি বন্ধ না হয় তবে কোনো কারণে দেশের অর্থনৈতিক অচলাবস্থা ও ব্যাংক ক্রাপসি দেখা দিলে গভীর সংকটে নিপতিত হবে দেশ ও দেশের মানুষ। এছাড়া সীমা লংঘনের অসংখ্য পরিণতির কথা, দৃষ্টান্ত ও উদাহরণও তিনি তুলে ধরে থাকেন।

আজকাল উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের অনেকের সাথে প্রয়োজনে সাধারণ মানুষের দেখা সাক্ষাতে কত যে বিড়ম্বনা, অনুমতির উপসর্গ, লালবাতি ও প্রটোকলের বাহানা তার যেন কুল কিনারা নেই। যদিও উনারা সকলেই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারী। যা একটি স্বাধীন দেশের মানুষ হিসেবে ভাবতেও দুঃখ হয়। যা অনেক সময় ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর ১৯৬ বছরের দুঃশাসন ও পাকিস্তানের ২৩ বছরের শোষণ নির্যাতনকে সামনে নিয়ে আসে।

এত কিছুর পরও শাসন, প্রশাসন, আইন, ও বিচার বিভাগে যে একেবারে জনবান্ধন ও ভালো মানুষ নেই তা নয়। এক সময় কোনো এক জেলা পর্যায়ের দায়িত্বশীল জনৈক কর্মকর্তার অফিসে বেশ কয়েকজন বসা ছিলাম। এমন সময় ২/৩ জন সাথে নিয়ে নাদুস নুদুস চেহারার একজন উপস্থিত হয়ে উক্ত কর্মকর্তাকে লেশমাত্র সম্মান ও সৌজন্য না দেখিয়ে জমিদারি স্টাইলে
বলতে ছিল, হাই কমান্ডের নির্দেশ এ কাজটি করে দিতেই হবে। তা না হলে হাই কমান্ডকে জানাতে বাধ্য হবো। কে সেই আলাদীনের প্রদীপ বা হাইকমান্ড উপস্থিত কেহই তা বুঝতে পারেনি বা বুঝার চেষ্টাও করা হয়নি। কারণ এগুলো মামলি ব্যাপার হয়ে স্বাধীনতার ৪৭ বছর ধরেই চলছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা মহোদয় কতটুকু বুঝতে পেরেছেন বা পারেননি তা হয়তোবা তিনি নিজেই জানেন। তবে মনে হয়েছে এসব নতুন কোনো প্রসঙ্গ নহে এর আগেও এর সূত্রপাত থাকতে পারে। তবে উপস্থিত অনেকেরই ধারণা এটা কোনো স্বার্থ সংক্রান্ত তদ্বির সুপারিশ হতে পারে। এর মধ্যে উপস্থিত একজন আস্তে আস্তে অস্পষ্টভাবে বলতে ছিল মেটার অব ফিসারিজ (Matter of Fisharies)। তারপর উক্ত কর্মকর্তা মহোদয় নাদুস নুদুস জনৈক ব্যক্তিকে বললেন, কোনো হাই কমান্ডের ডরভয় না দেখিয়ে আসল কথা বলুন। এই চেয়ারে বসার আগে অনেক কিছু অতিক্রম করে পেটের তাগিদায় এ জায়গায় এসেছি। যা হোক কর্মকর্তা মহোদয়ের দৃঢ়চেতা, সুস্পষ্ট বাক্যচরণ, আরও উপমা ও উদাহরণ শুনে এককাপ লাল চা গলাধঃ করণ করে আমরা চলে আসার পর এই ঘটনা কোনদিকে গিয়ে দাঁড়িয়েছে তা জানার সুযোগ ঘটেনি।

এ উদাহরণটি তুলে ধরার কারণ হলো জানা মতে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদের ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জসহ সারাদেশে অনেক ঘনিষ্ট আত্মীয়-স্বজন থাকলেও কোনো অফিস আদালতে উনার আত্মীয় পরিচয় দেয়া বা প্রয়োজনে নাম ভাঙানোর কথা ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে কোনো দিন শুনা যায়নি। হয়তো উনার আত্মীয়-স্বজনদের প্রতি নির্দেশনাও থাকতে পারে। আর অনেক দিন ধরে অনেকের নাম ভাঙানোর প্রেক্ষাপট এমন অবস্থানে পৌঁছেছে বা অফিস আদালতের বড় কর্মকর্তা থেকে কেরানী, পিয়ন ও চাপরাশীদের নিকটও অনেকের নাম ভাঙানো হয়ে থাকে। যা রীতিমত নাম ভাঙানোর পসরা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ জাতির গর্ব ও অহংকার। বয়সের ভারে তিনি এখন ন্যুজ এবং বর্তমানে সকল কর্মকান্ডের বাহিরে। তিনি যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন যাতে দেশের মানুষের ভালোবাসা এবং শুভাশীষ নিয়ে বেঁচে থাকেন এবং মৃত্যুর পর যাতে মানুষের অফুরন্ত দোয়া ও ভালোবাসায় আল্লাহর দিদার লাভ করে থাকেন ইহাই তাঁর জীবনের বড় প্রাপ্তি ও প্রশান্তি।

পরিশেষে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কুকিজ বিস্কুট দিয়ে চা খাওয়ার গল্প, সরকারি টাকার অপচয় ভেবে হেলিকপ্টার দিয়ে মাতা-পিতার কবর জিয়ারত না করার কথা, যথায় তথায় সরকারি অর্থের অপচয় না করে সরকারি অর্থের সঠিক ব্যবহার, মানুষের সাথে মানুষের মতো ব্যবহার করার উপদেশ বাস্তবিকই স্মরণযোগ্য। তাঁহার সততা, ন্যায়নিষ্ঠা, আদর্শ, জাতীয়তাবোধ ও দেশপ্রেমের কথা যেমনিভাবে দেশের জনমানুষকে অনুপ্রাণিত করবে তেমনিভাবে দেশের মানুষের কাছে তাঁহার কর্মজীবনের অনাবীল ভালোবাসা, জনকল্যাণ, সেবা, উন্নয়ন ও অবদান চিরঞ্জিব হয়ে থাকবে।

জানা যায়, কর্মজীবনের ওপর কিছু বই লিখেছেন তিনি। বইগুলো প্রকাশার্থে উনার পুত্র সোহেল আহমদ কাজ করে যাচ্ছে। বইগুলো প্রকাশিত হলে সাবেক রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ সম্পর্কে অজানা অনেক কিছু জানার সুযোগ ঘটবে। সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতি যেমনি জাতির গর্ব, অহংকার, অনির্বান, অম্লান, কীর্তিমান তেমনি রাজনৈতিক ও জাতীয় সংকট থেকে দেশকে উত্তরণে দেশ মাতৃকার কিংবদন্তি ও সূর্য সন্তান। অনেকের উক্তি টেনে বলতে হচ্ছে, ভালো কর্ম মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। অপকর্ম যত ঢাকা দেওয়া হোক না কেন অনেক সময় খাল, বিল, ডুবা নালায় বুদবুদের মতো জ্বলে ওঠে। ইহাকে কেহ বলে আলেয়া, কেহ বলে শয়তানের আলো, কেহ বলে ভুতের আলো এবং কেহ বলে জ্বীন পেতনীর আলো। ভালো মানুষের পদভারে দেশ, জাতি, সমাজ, শাসন, প্রশাসন, আইন, বিচার, রাজনীতি ও নির্বাচন ব্যবস্থার অচলায়তন কেটে ভূত, শয়তান ও পেতনীর আলোতে নয় স্বচ্ছ আলোতে সবকিছু উদ্ভাসিত হোক ইহাই দেখার বিষয়।

এ.কে.এম শামছুল হক রেনু
লেখক কলামিষ্ট

 

বাংলাদেশ সময়: ১১:১৩:৪০ ● ১৫৯১ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ