২০ গ্রামের মানুষ দুর্ভোগে ‘ভোড নেওয়ার কালে কয় রাস্তা পাকা কইর‌্যা দিমু’

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » ২০ গ্রামের মানুষ দুর্ভোগে ‘ভোড নেওয়ার কালে কয় রাস্তা পাকা কইর‌্যা দিমু’
সোমবার ● ১ নভেম্বর ২০২১


 

---

কলাপাড়া সাগরকন্যা অফিস॥ 

‘ইলেকশন আইলে কতো মেম্বার, চেয়ারম্যান আইলো আর গ্যালো কিন্ত মোগো রাস্তার কোনো কাজ অয় নায়। ভোড আইলে ভোড দিই, কিন্তু মোগো ভাগ্যের পরিবর্তন অয় না। দশ টাহার চাউলও চাইনা, চাই না কাপুড়ও, চাই শুধু পাকা রাস্তা। ভোড নেওয়ার কালে কয় রাস্তা পাকা কইর‌্যা দিমু। কিন্তু ভোড গ্যালে একখান ইটও ও পড়ে না। নির্বাচনের পর পাঁচ বছরে হ্যারা মোগো এলাকায় ডোকেনা। বছরের পর বছর বষ্যাহালে রাস্তাগুলা পানি-কাঁদায় খাবরি অইয়া যায়।’

কলাপাড়ার সবচেয়ে দুর্গম এলাকা তারিকাটা ও নয়াকাটা গ্রামের সুজন, হোছেন, সলেমান সাগরকন্যাকে জানান, মাত্র একটি কাঁচা রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ প্রতি বছর বর্ষাকাল এলে এ দুর্ভোগে পড়ে। মহিপুর ইউনিয়নের মহিপুর বাজার হতে ভায়া কাটাভারানী বেড়িবাঁধ সড়ক দিয়ে এবং ডাবলুগঞ্জ ইউনিয়নের মনসাতলী এবং পার্শ্ববর্তী ধুলাসার ইউনিয়নে তারিকাটা-অনন্তপাড়া ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় ২৫কি.মি. সড়ক চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় থাকায় প্রায় ২০টি গ্রামের মানুষের দৈনন্দিন চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কাঁচা রাস্তাগুলো এখন ওই সব গ্রামবাসীর জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলাচলে পোহাতে হচ্ছে চরম দূর্ভোগ, থমকে পড়েছে হাজারো মানুষের জীবন যাত্রা। এমন দুরবস্থার জন্য অতিরিক্ত কাঁদা আর পানির কারনে কোন যানবাহন তো দূরের কথা, হেটে পথচলা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। মনে হয় যেন রাস্তা নয় চাষের জন্য প্রস্তুত কোন জমি। বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় হাঁটু সমান কাঁদা মাড়িয়ে চলাচল করতে হচ্ছে ওইসব গ্রামের মানুষের। হাতে জুতা পানি-কাঁদা মাখা শরীরে চলে শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার লোকজন।

 

এ গ্রামগুলোর মানুষের স্বপ্ন দেখে যে মৃত্যুর আগে হয়ত গ্রামে ঢোকার একটা ভাল রাস্তা দেখে যেতে পারবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন কি স্বপ্নই থেকে যাবে, নাকি বাস্তবে পরিণত হবে, এমন শঙ্কা নিয়েই দিনাতিপাত করছে এখানকার বাসিন্দারা। বছরের পর বছর ধরে এ গ্রামের মানুষ এ ভোগান্তি নিয়েই অবহেলিত জনপদে বসবাস করছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর মুজিব বর্ষ পালিত হলেও শুধু মহিপুর ইউনিয়নের মহিপুর বাজার হতে ভায়া কাটাভারানী বেড়িবাঁধ সড়ক দিয়ে ও ডাবলুগঞ্জ ইউনিয়নের মনসাতলী এবং পার্শ্ববর্তী ধুলাসার ইউনিয়নে তারিকাটা-অনন্তপাড়া ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় ২৫কি.মি. গ্রামে উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি।  শুধু এই গ্রামগুলো অবহেলিত। এ গ্রামে হাজার হাজার লোকের বাস। রাস্তা পাশে রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দাখিল মাদ্রাসা, হাফিজী মাদ্রসা, কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী। বর্ষা মৌসুমে গ্রাম থেকে বের হতে হলে জমির আইলের ওপর দিয়ে হাঁটা পথ। কারও মৃত্যু হলে খাটিয়ায় করে লাশ কবরস্থানে নেয়ার উপায় থাকে না। এছাড়া শিক্ষার্থীরাও ঠিকমতো স্কুল-কলেজ- যেতে পারে না।

নয়াকাটা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মো. নোয়াব আলী হাওলাদার জানান, এলাকার রাস্তাঘাট পাকা ও খাপড়াভাঙ্গা নদীতে ব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি এ এলাকায়। সড়ক এবং সেতু নির্মিত না হওয়ায় এ এলাকা অনেক পিছিয়ে রয়েছে।

 

ধুলাসার ও ডাবলুগজ্ঞ, মহিপুর ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আ: জলিল আকনও অধ্যক্ষ দেলওয়ার হোসেন, আলহাজ্ব মো.ফজলু গাজী জানান, ওই রাস্তাটি খুবই জনগুরুত্বপূর্ণ ও মানুষের জনস্বার্থে রাস্তাটি  পাকা করা উচিত।

 

কলাপাড়া উপজেলা স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) মো: মহর আলী গণমাধ্যমকে বলেন, রাস্তাটি জনগনের জন্য খুবই প্রয়োজন। কর্তৃপক্ষকে দ্রুতই অবহিত করা হবে।

 

বাংলাদেশ সময়: ৯:৫৮:১১ ● ৫২৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ