আমতলীতে শিশু কল্যাণ বিদ্যালয়ের পাঠদান গাছতলায়!

প্রথম পাতা » বরগুনা » আমতলীতে শিশু কল্যাণ বিদ্যালয়ের পাঠদান গাছতলায়!
রবিবার ● ১০ অক্টোবর ২০২১


আমতলীতে শিশু কল্যাণ বিদ্যালয়ের  পাঠদান গাছতলায়!

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

বিদ্যালয় ভবন ভেঙ্গে পরায় আমতলীর একমাত্র শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান চলছে গাছতলায়। গত দুইদিন ধরে রোদে পুড়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে কোমলমতি শিশুরা গাছ তলায় ক্লাশ করছে। দ্রুত বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা।
জানাগেছে, উপজেলার ঝড়ে পড়া, অসহায়, শিশু শ্রমিক ও দুস্থ শিশুদের শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষাদানে ২০১৫ সালে অ্যাডভোকেট আরিফ-উল-হাসান আরিফ আমতলী শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আমতলী পৌরসভার খোন্তাকাটা বেগম নুরজাহান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে বিকেল পাঠদান ও কার্যক্রম শুরু করেন। ২০১৬ সালে ওই বিদ্যালয়টি প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অধিনে শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট্রি বোর্ডের অনুমোদন হয়। ২০১৭ সালে খোন্তাকাটা বেগম নুরজাহান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন ভেঙ্গে যায়। এতে বিপাকে পড়ে ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা। নিরুপায় হয়ে চাওড়া কালীবাড়ী হাসানিয়া ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় জরাজীর্ণ ভবনে শিশু কল্যাণ স্কুলের পাঠদান ও কার্যক্রম শুরু করেন। গত তিন বছর ধরে ওই জরাজীর্ণ মাদ্রাসা ভবনে চলে আসছে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম।  কিন্তু ঘুর্ণিঝড় আম্ফান ও ইয়াসের প্রভাবে ওই মাদ্রাসার পিন শেডের ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পরেছে। এতে ওই ভবনে পাঠদান ও কার্যক্রম অনুপোযোগী ও ঝুঁিকপূর্ণ। মহামারি করোনার পরে স্কুলের পাঠদান ওই জরাজীর্ণ ভবনে শুরু করে। গত শুক্রবার রাতে টিন শেডের মাদরাসা ঘরটি ভেঙ্গে পরে। এতে বিপাকে পরে স্কুল শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা। নিরুপায় হয়ে শিক্ষকরা ভাঙ্গা ঘরের ভিটিতে গাছের নীচে বেঞ্চ বিছিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাশ নিচ্ছেন।
রবিবার সকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশুরা গাছতলায় বেঞ্চ বিছিয়ে রোদে পুড়ে ক্লাশ করছে।
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী সারা মনি বলেন, বিদ্যালয়ের ভবন না থাকায় অনেক কস্ট করে লেখাপড়া করতে হচ্ছে। মাদ্রাসার যে ঘরে ক্লাশ করতাম তাও ভেঙ্গে পরায় এখন গাছতলায় বসে ক্লাশ করতে হচ্ছে।
তৃতীয় শ্রেণির তৃশা, রুমা বলেন, মোগো স্কুলে ঘর নাই মোরা রৌদে ক্লাশ হরি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক  সানজিদা খানম জানান, বিদ্যালয়ের ভবন না থাকায় এতদিন আমরা ধার করা মাদরাসা ঘরে ক্লাল করতাম। মাদরাসা ঘরটিও ভেঙ্গে পরেছে। এখন নিরুপায় হয়ে গাছতলায় বসে রোদে পুরে শিশুদের ক্লাশ করছি।
বিদ্যালয়ের অভিভাবক হেলাল রাঢ়ী ও মাহিনুর বেগম বলেন, উপজেলার একমাত্র শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নেই। একটি মাদ্রাসার ঘরে ক্লাশ করতো তাও ভেঙ্গে পড়ায় এখন গাছ তলায় ক্লাশ করতে গুরাগাড়ার ব্যামালা কষ্ট অইতে আছে।
আমতলী শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাডভোকেট মো. আরিফ-উল-হাসান আরিফ বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই শিক্ষা বঞ্চিত ঝড়ে পড়া, অসহায়, শিশু শ্রমিক ও দুস্থ শিশুদের নিয়ে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করি। বর্তমানে ্িদ্যালয়টির ভবন নেই। এতদিন মাদ্রাসার ধার করা ঘরে ক্লাশ নিতাম। মাদরাসা ঘরটিও ভেঙ্গে পরায় শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা নিরুপায় হয়ে এখন খোলা আকাশের নীচে গাছ তলায় ক্লাশ নিচ্ছে। শিশুদের প্রতি দৃষ্টি দিয়ে এখানে একটি দ্রুত ভবন নির্মান করা প্রয়োজন।
আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মজিবুর রহমান বলেন, শিশু কল্যাণ বিদ্যালয়টির জরুরী ভিত্তিতে ভবন প্রয়োজন। ভবন না থাকায় পাঠদান ব্যহত হচ্ছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত) দায়িত্ব ও  বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. কাওসার হোসেন বলেন, দ্রুত ভবন নির্মাণে জন্য প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে।

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৯:৩৬:২২ ● ৮২৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ