ছাতক (সুনামগঞ্জ) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
সুনামগঞ্জের ছাতকে যৌতুকের টাকার জন্য নাজমিন বেগম(২৬) নামে এক গৃহবধূকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ও বাড়ির পুকুরে ডুবিয়ে গৃহবধূকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।
সোমবার (৪ অক্টোবর) নিখোঁজ গৃহবধুর লাশ স্বামীর বাড়ির পুকুর থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছে। উপজেলার ছৈলা-আফজলাবাদ ইউপির লাকেশ্বর গ্রামের ছুরাব আলী কন্যা নাজমিন। উপজেলার দোলারবাজার ইউপির কাটাশলা গ্রামের এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, যৌতুকের জন্য গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে তার বাবার কাছে থেকে টাকা আনার জন্য নাজমিনকে চাপ দেয়া হয়। মারপিট নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে টাকা আনতে তার বাবার বাড়িতে চলে যান। পরে তার পিতার বাড়ি থেকে ১৬দিন থাকার পর পুত্রবধূ নাজমিন বেগমকে আনতে গত ২ অক্টোম্বর তার বাবার বাড়িতে শশুড় সমর আলী যান। তার মান-অভিমান শেষে করে নিয়ে আসেন স্বামী বাড়িতে। ওই রাতে কথা কাটাকাটি নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বাধে। এ ঘটনার জের ধরেই স্বামীর পরিবারে লোকজন নাজমিনকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে পুকুরে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে। পরে গত ৩ অক্টোবর সকালে থেকে গৃহবধূ নিখোঁজ তাকে খোজে পাচ্ছেন বলে তার বাবার বাড়িতে মোবাইল ফোনে খবর দেয়। নিখোজের একদিন পর গৃহবধূর লাশ তার স্বামী বাড়ির পুকুরে ভেসে উঠেছে। স্থানীয় লোকজন জাহিদপুর পুলিশ ফাড়িকে খবর দেন। এ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে গৃহবধু লাশ উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
পুলিশ ও গ্রামবাসী জানান, গৃহবধূর দেহের মধ্যে মাথা, বুক ও পিটে একাধিক আঘাতের দাগ রয়েছে। স্বামী বাড়ির লোকজন তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে পুলিশ ধারণা করেছে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা ছোরাব আলী বাদী হয়ে স্বামী সুমন মিয়া, তার বাবা সমর আলী, ও তার মা দিলারা বেগমকে আসামী করে থানায় একটি অভিযোগ করেছেন। পারিবারিকভাবেই নাজমিন বেগমের সঙ্গে সুমন মিয়ার বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
নিহতের পিতা ছোরাব আলী জানান, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য নাজমিনকে নির্যাতন করতেন স্বামী ও শৃ¦শুর বাড়ির লোকজন। নির্যাতনের বিষয়টি বেশ কয়েকবার শালিশ বৈঠক অনুষ্টিত হয়। পরে স্বামীসহ অন্যরা মিলে নাজমিনকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে পুকুরের পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেছেন বলে নিহতের পরিবার অভিযোগ করেন।
এব্যাপারে ছাথক থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ নাজিম উদ্দিন এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। এ খবর পেয়ে (ছাতক-দোয়রাবাজার) সার্কেল বিল্লাল আহমদ ঘটনাস্থলে পৌছে হত্যার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করছেন।
এএমএল/এমআর