কুয়াকাটা সাগরকন্যা অফিস॥ 

বিকেলে ঘুরতে নামলে দেখা মিলছে রং-বেরঙের নানান ধরনের ঘুড়ি উড়ছে সৈকতের আকাশে। কুয়াকাটা পৌরসভার কম্পিউটার সেন্টার এলাকার বাসিন্দা রনি। বারো বছর বয়সে লেখাপড়ার পাশাপাশি সৈকতে ঘুড়ি বিক্রি করে পরিবারের খরচের জোগান দিচ্ছে। তিন ভাইয়ের মধ্যে মেঝ রনি। বাবা মিস্ত্রির কাজ করে। তাতে সংসারের সকল খরচ মিটানো সম্ভব হচ্ছিল না। তাইতো বাবার সাথে সংসারের দ্বায়িত্ব পালন করতে নেমে পড়েছে শিশু শ্রমে।

একান্ত সাক্ষাৎকালে রনি জানায়, কুয়াকাটা বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী সে। কুয়াকাটা পৌরসভার তিন নং ওয়ার্ডের রুস্তম হাওলাদারের মেঝ সন্তান। বিদ্যালয় খোলা থাকলে শুক্রবার সারাদিন এবং অন্য দিনগুলোতে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুড়ি বিক্রি করে। চিল ঘুড়ি, ড্রাগন ঘুড়ি, ফাইটার ঘুড়ি, বিমান ঘুড়ি, পংখীরাজ ঘুড়ি এবং ফুল ঘুড়িসহ নানান ধরনের ঘুড়ি বিক্রি করে সে। সারাদিন ঘুড়ি বিক্রি করতে পারলে প্রায় দুই হাজার টাকা বিক্রি করা সম্ভব যার মধ্যে চার থেকে পাঁচ শত টাকা লাভ হয় বলে জানায় রনি। চিল ঘুড়ি ছোট সাইজ ১২০ টাকা, মাঝারি ১৫০ টাকা এবং বড় সাইজ ২৫০ টাকা বিক্রি করে, ফুল ঘুড়ি ১২০ টাকা, ড্রাগন এবং পংখীরাজ ঘুড়ি ৫০০ টাকয়ে বিক্রি হয়। ব্যাবসায়ীরা চাহিদা মোতাবেক ঢাকা চকবাজার থেকে এসব ঘুড়ি এনে দেন এবং বিক্রি করে তাদের টাকা পরিশোধ করতে হয় তাকে। বড় ভাই কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রি কলেজে স্নাতক শ্রেণীর শিক্ষার্থী।

বড় হয়ে ব্যবসায়ী হয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে চায় রনি। বীচে ব্যবসা করতে বর্তমানে কোন টাকা না লাগলেও পূর্বে বাৎসরিক দুই হাজার টাকা দিতে হতো ট্যুরিস্ট পুলিশকে এমনটাই অভিযোগে জানায় রনি। আবার চাইলে দিতে হবে জানিয়ে এ চাঁদার হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার দাবি জানিয়েছে এই ক্ষুদে ব্যাবসায়ী।

কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার জানান, কুয়াকাটা সৈকত এলাকায় স্থানীয়সহ দূর দূরান্ত থেকে এসে অনেক অসহায় ছেলেরা ব্যাবসা করে খাচ্ছে। মেয়র বলেন, পৌরসভার পক্ষ থেকে এসব মানুষকে পূনর্বাসনের কোন বাজেট নেই। তবে আমার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এই সকল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছে কেউ চাঁদা দাবি করেছে এমন অভিযোগ নেই।