আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
শিক্ষার্থীদের পদচারনায় মুখরিত আমতলী উপজেলার শিক্ষাঙ্গণ। দের বছর পরে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে আসায় তারা আনন্দে আত্মহারা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তারা সহপাঠিদের সাথে উল্লাস করছেন। তাদের প্রত্যাশা যেন এভাবেই সচল থাকে প্রিয় প্রাঙ্গণ।
জানাগেছে, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রামণ থেকে মানুষকে রক্ষায় গত বছর ১৬ মার্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করে সরকার। বিগত দেড়বছর ধরে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে যেতে পারেনি। এতে অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষা জীবন থেকে ঝড়ে পড়েছে। দের বছর পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ায় শিক্ষার্থীরা প্রাণ ফিরে পেয়েছে। শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রেনী কক্ষে ফিরে গেছেন। তারা মনের আনন্দে শ্রেনী কক্ষে পাঠদানে মগ্ন হয়েছেন।
উপজেলায় ৭ টি কলেজ, ৪০ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২৯ টি মাদ্রাসা ও ২০৭ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সরকারী নির্দেশনা মেনে ক্লাসে ফিরছেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৮ হাজার ৩’শ ২৯ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে পঞ্চম ও তৃতীয় শ্রেনীতে ৮৫.৫% শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়েছে বলে জানান প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মজিবুর রহমান। অপর দিকে মাধ্যমিক স্তুরে ২৯ হাজার ৩৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২০ হাজার ৩’শ ২৩ জন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জিয়া উদ্দিন মিলন।
রবিবার আমতলী বকুলনেছা মহিলা ডিগ্রী কলেজ, আমতলী একে স্কুল, আমতলী বন্দর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মফিজ উদ্দিন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও আমতলী বন্দর ফাজিল মাদ্রাসা ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ক্লাসে উপস্থিত হয়েছে। দীর্ঘদিন পরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রিয় শিক্ষা প্রাঙ্গণে আসায় প্রাণ চাঞ্চল্যতা ফিরে পেয়েছে। শিক্ষার্থী মনের আনন্দে সহপাঠিদের সাথে কোলাহলে মুগ্ধ হয়েছে।
বকুলনেছা মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী ইমা, স্বর্ণা, বৃষ্টি ও হাফিজা কলেজ খুলে দেয়ার সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে তারা বলেন, খুবই ভালো লাগছে। মনে হচ্ছে আমাদের মাঝে ঈদ ফিরে এসেছে। ঈদের এতো আনন্দ হয়না। সকল বান্ধুবীদের দেখা করতে পেরে আমরা খুই আনন্দিত। তারা আরো বলেন, গত দের বছর ধরে আমাদের লেখাপড়া ব্যঘাত ঘটেছে। আশা করি আমরা দ্রুত লেখাপড়া সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবো।
আমতলী একে সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাফিন, মোঃ রায়হান ইসলাম, জান্নাতুল মারিয়া, সাবিহা ইসলাম সাওদা ও এশা বলেন, দীর্ঘদিন পরে বিদ্যালয়ে আসতে পারায় খুবই আনন্দিত। শিক্ষকরা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই শ্রেনী কক্ষে আমাদের পাঠদান করিয়েছেন।
আমতলী বন্দর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোসাঃ নওরিন জাহান পুর্ণতা ও রিমি বলেন, ক্লাসে ফিরতে পারায় খুব ভালোই লাগছে।
আমতলী একে সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ বজলুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা উৎসব মুখর পরিবেশে বিদ্যালয়ে এসেছে। সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক যথা নিয়মে শ্রেনী কক্ষে পাঠদান দেয়া হয়েছে।
আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মজিবুরর্ হমান বলেন, উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুন্দর পরিবেশে ক্লাস হয়েছে। উপস্থিতির হারও বেশী। ২০৭ টি বিদ্যালয়ে ২৮ হাজার ৩’শ ২৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে দুই শ্রেনীতে ৮৫.৫% শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়েছে।
আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জিয়া উদ্দিন মিলন বলেন, বেশ ভালো পরিবেশেই শিক্ষার্থী শ্রেনী কক্ষে পাঠদান করছে। উপস্থিতির হারও অনেক ভালো। মাধ্যমিক স্তুরে ২৯ হাজার ৩৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২০ হাজার ৩’শ ২৩ জন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছে।
এমএইচকে/এমআর