চতুর্থ ধাপে ১২২ উপজেলায় ভোট ৩১ মার্চ

প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » চতুর্থ ধাপে ১২২ উপজেলায় ভোট ৩১ মার্চ
বুধবার ● ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৯


ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ

ঢাকা সাগরকন্যা অফিস ॥
পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চতুর্থ ধাপে পাঁচ বিভাগের ১২২ উপজেলায় ভোট হবে ৩১ মার্চ। বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এই তফসিল ঘোষণা করেন ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।

সচিব বলেন, পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপের তফসিল নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করছে। আগামি ৩১ মার্চ পঞ্চম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট হবে। চতুর্থ ধাপে বরিশাল, খুলনা, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও চট্টগ্রামের ১৬ জেলার ১২২ উপজেলায় ভোট গ্রহণ হবে। এখানকার সদর উপজেলাগুলোতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ সময় সচিব আরো জানান, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৪ মার্চ, বাছাইয়ের দিন ৬ মার্চ, আপিল ৭ থেকে ৯ মার্চ, আপিল নিষ্পত্তি ১০ থেকে ১২ মার্চ, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৩ মার্চ, প্রতীক বরাদ্দ ১৪ মার্চ এবং ভোট ৩১ মার্চ।

যে ১২২ উপজেলায় চতুর্থ ধাপে ভোট হবে সেগুলো হলো: বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলার পটুয়াখালী সদর, দশমিনা, গলাচিপা, কলাপাড়া, মির্জাগঞ্জ, দুমকী ও বাউফল উপজেলা; ভোলা জেলার ভোলা সদর, মনপুরা, দৌলতখান, তজুমদ্দিন, চরফ্যাশন ও লালমোহন উপজেলা; বরগুনা জেলার বরগুনা সদর, আমতলী, বেতাগী, বামনা ও পাথরঘাটা উপজেলা এবং পিরোজপুর জেলার পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানী, মঠবাড়ীয়া, কাউখালী, ভা-ারিয়া, নেছারাবাদ ও নাজিরপুর উপজেলা।
খুলনা বিভাগের যশোর জেলার যশোর সদর, বাঘারপাড়া, ঝিকরগাছা, চৌগাছা, শার্শা, অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলা; খুলনা জেলার দিঘলিয়া, কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা, রুপসা, তেরখাদা, ফুলতলা, বটিয়াঘাটা ও ডুমুরিয়া উপজেলা এবং বাগেরহাট জেলার বাগেরহাট সদর, মোংলা, মোরেলগঞ্জ, চিতলমারী, কচুয়া, রামপাল, ফকিরহাট ও শরণখোলা উপজেলা।

ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ জেলার ময়মনসিংহ সদর, হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া, ফুলপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, গফরগাঁও, ফুলবাড়ীয়া, ত্রিশাল, গৌরীপুর, নান্দাইল, মুক্তাগাছা ও ভালুকা উপজেলা। ঢাকা বিভাগের মুন্সীগঞ্জ জেলার মুন্সীগঞ্জ সদর, সিরাজদিখান, লৌহজং, শ্রীনগর, টংগিবাড়ী ও গজারিয়া উপজেলা; নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, সোনারগাঁ ও রূপগঞ্জ উপজেলা; ঢাকার সাভার, ধামরাই, কেরানীগঞ্জ, দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা এবং টাঙ্গাইল জেলার টাঙ্গাইল সদর, ধনবাড়ী, মধুপুর, মির্জাপুর, দেলদুয়ার, নাগরপুর, ঘাটাইল, ভূঞাপুর, কালিহাতী, গোপালপুর, বাসাইল ও সখিপুর উপজেলা।

চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লা জেলার তিতাস, বরুড়া, লাকসাম, নাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ, চান্দিনা, মুরাদনগর, দেবিদ্বার, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, চৌদ্দগ্রাম, মেঘনা ও মোহনা উপজেলা; নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ, সেনবাগ, সোনাইমুড়ী, কবিরহাট, সুবর্ণচর, চাটখিল ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা; ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, সরাইল, আখাউড়, কসবা, আশুগঞ্জ, নাসিরনগর ও নবীনগর উপজেলা এবং ফেনী জেলার ফেনী সদর, ফুলগাজী, সোনাগাজী, দাগণভূঁঞা, ছাগলনাইয়া ও পরশুরাম উপজেলা।

প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হওয়ার পথে ৩৩জন:
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩৩ জন একক প্রার্থী পাওয়া গেছে। অর্থাৎ এই ৩৩ জনের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময়সীমা শেষ হলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের সংখ্যা ৩৩ জনের চেয়ে বাড়তেও পারে। পঞ্চম উপজেলা পরিষদের ভোট হচ্ছে পাঁচ ধাপে।

এরমধ্যে প্রথম ধাপে ৮৬ উপজেলা এবং দ্বিতীয় ধাপে ১২৪ উপজেলায় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন প্রার্থীরা। নির্বাচন কমিশনের সহকারী সচিব আশফাকুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, প্রথম ধাপে ৮ জন এবং দ্বিতীয় ধাপে ২৫ জন একক প্রার্থী রয়েছেন। বাছাই শেষে বৈধ প্রার্থী হলে তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আভাস দেন তিনি। ২০০৯ সালে ২২ জানুয়ারি এক দিনেই দেশের সব উপজেলায় ভোট হয়। তাতে ১২ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০১৪ সালে পাঁচ ধাপে ভোট হয়। আওয়ামী লীগ-বিএনপির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয় দুই ধাপে; শেষে ব্যবধান বাড়িয়ে বেশিরভাগ উপজেলায় জয় পায় আওয়ামী লীগ। এবার দলীয় প্রতীকে ভোট হচ্ছে উপজেলায়। একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট ডাকাতির অভিযোগ তোলার পর এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি। ফলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোটের জৌলুস নেই বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। সোমবার দ্বিতীয় ধাপের উপজেলাগুলোয় মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন ছিল। এ ধাপের নির্বাচনে ২৫ জন চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান ১৪ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পাঁচজন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান ছয়জন। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরতি ভাইস চেয়ারম্যান পদের সবকটিতেই একক প্রার্থী পাবনা সদর, ফরিদপুর সদর, নোয়াখালীর হাতিয়া ও চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায়।

১৪টি উপজেলার চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী রয়েছেন। চট্টগ্রাম জেলার সাতটি উপজেলার পাঁচটিতেই চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী রয়েছেন। সেগুলো হচ্ছে- চট্টগ্রামের সীতাকু-, সন্দ্বীপ, রাঙ্গুনিয়া, মিরসরাই ও রাউজান। বাকি দুটির উপজেলার হাটহাজারীতে দুইজন ও ফটিকছড়িতে তিনজন প্রার্থী রয়েছেন। এছাড়া যেসব উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী রয়েছেন সেগুলো হচ্ছে- বগুড়ার আদমদীঘি, নওগাঁ সদর, পাবনা সদর, মৌলভীবাজার সদর, ফরিদপুর সদর, নোয়াখালীর হাতিয়া, রাংগামাটির কাপ্তাই, খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি।

যে পাঁচটি উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী রয়েছেন সেগুলো হচ্ছে-পাবনা সদর, ফরিদপুর সদর ও বোয়ালমারী, নোয়াখালীর হাতিয়া এবং চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলা। আর যে ছয়টি উপজেলায় সংরতি বা নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী সেগুলো হচ্ছে- পাবনা সদর, সিলেটের কানাইঘাট, ফরিদপুর সদর, নোয়াখালীর হাতিয়া এবং চট্টগ্রামের রাউজান ও মিরসরাই উপজেলা। এর আগে প্রথম ধাপে মনোনয়নপত্র জমার পর একক প্রার্থী থাকায় ৮ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পথে রয়েছে। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে চারজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন। চেয়ারম্যান পদে জামালপুরের সরিষাবাড়ি, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ ও জয়পুরহাট সদর উপজেলায়; ভাইস চেয়ারম্যান পদে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ও উল্লাপাড়ায় একজন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে একজন করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

এফএন/কেএস

বাংলাদেশ সময়: ১৬:১৯:৫৩ ● ৪৩১ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ