আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
আমতলী আইডিয়াল কম্পিউটার ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা গোপনে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধিনে কম্পিউটার বিষয়ের ৬মাস মেয়াদী কোর্সের পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও পুলিশের অনুপস্থিতে নেয়া হয়। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা তিন ঘন্টায় নেয়ার কথা থাকলেও পরীক্ষা কেন্দ্র সচিব মোঃ কাওসার আহম্মেদ এক ঘন্টায় শেষ করে খাতা তার বাসায় নিয়ে আসেন। অভিযোগ রয়েছে উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই কেন্দ্র সচিব পরীক্ষা নিয়েছেন। ইউএনও মোঃ কাওসার হোসেন বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে পরীক্ষার বিষয়ে খোজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জানাগেছে, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধিনে কম্পিউটার বিষয়ে ৬ মাস মেয়াদী কোর্সের পরীক্ষা শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টায় শুরু হয়। আমতলী উপজেলার আইডিয়াল কম্পিউটার ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের ৫২ জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গোপনে নেয়া হয়। ওই ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের পরিচালক মোঃ কাওসার হোসেন কেন্দ্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রশাসনিক কর্মকর্তা উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম ও পুলিশের অনুপস্থিতিতে পরীক্ষা নেন কেন্দ্র সচিব। অভিযোগ রয়েছে উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই কেন্দ্র সচিব গোপনে পরীক্ষা নিয়েছেন। কারিগড়ি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা পরিপত্রে উল্লেখ আছে, ৬০ নম্বরের এক ঘন্টার লিখিত পরীক্ষা এবং দুই ঘন্টায় ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষ করার কথা। কিন্তু এক ঘন্টার লিখিত পরীক্ষা শেষে ব্যবহারিক পরীক্ষা না নিয়েই সচিব খাতা নিয়ে কেন্দ্র ত্যাগ করেছেন। ওই পরিপত্রে আরো উল্লেখ আেেছ, পরীক্ষা শেষে খাতা পোষ্ট অফিসের মাধ্যমে বোর্ডে পাঠাতে হবে। কিন্তু কেন্দ্র সচিব মোঃ কাওসার আহম্মেদ শুক্রবার বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত পোষ্ট অফিসে খাতা জমা দেয়নি। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে উপজেলা শহরে পরীক্ষা কেন্দ্র না করে শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দুরে গ্রামাঞ্চলের চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কেন্দ্র করা হয়েছে। যোগাযোগ বিছিন্ন ওই কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের যেতে সমস্যা হচ্ছে। পরীক্ষার্থীরা চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বাতিল করে শহরের বিদ্যালয়ে কেন্দ্র করার দাবী জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, কেন্দ্র সচিব তার বাসায় বসে খাতায় লিখিয়েছেন।
কয়েক শিক্ষার্থী বলেন, শহরে এতো বিদ্যালয় থাকতেও শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দুরে একটি গ্রামের বিদ্যালয়ে পরীক্ষা কেন্দ্র করা হয়েছে। যোগাযোগ বিছিন্ন ওই কেন্দ্রে যেতে সমস্যা হয়। ওই পরীক্ষা কেন্দ্র বাতিল করে শহরে পরীক্ষা নেয়ার দাবী জানান তারা।
চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হুমায়ূন কবির বলেন, কেন্দ্র সচিব মোঃ কাওসার আহম্মেদ এক ঘন্টায় লিখিত পরীক্ষা শেষ করে খাতা নিয়ে কেন্দ্র ত্যাগ করেছেন। এ পরীক্ষায় উপজেলা প্রশাসনের কোন কর্মকর্তা এবং পুলিশ ছিল না। কেন্দ্র সচিব নিজের ইচ্ছামত পরীক্ষা নিয়ে চলে গেছেন। তিনি আরো বলেন, ব্যবহারিক পরীক্ষা থাকলেও কেন্দ্র সচিব তা নেননি।
আমতলী আইডিয়াল কম্পিউটার টেনিং ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও কেন্দ্র সচিব মোঃ কাওসার আহম্মেদের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
আমতলী উপজেলা পোষ্ট মাষ্টার মোঃ সেলিম রেজা বলেন, বিকেল ৩ টা ৫৫ মিনিট পযন্ত পরীক্ষার খাতা আমার কাছে জমা দেয়নি।
আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, পরীক্ষার বিষয়টি কেন্দ্র সচিব সঠিকভাবে অবহিত করেনি। তাই আমি পুলিশ পাঠাতে পারিনি।
পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রশাসনিক কর্মকর্তা উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রে আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এ বিষয়টি আমার জানা নেই। তাই আমি পরীক্ষা কেন্দ্রে যাইনি।
আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জিয়া উদ্দিন মিলন বলেন, ইউএনও স্যারের নির্দেশ মোতাবেক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর