আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
অমাবস্যার জোঁর প্রভাবে পায়রা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে আমতলী ও তালতলীর চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমতলী পায়রা নদীতে দুই ঘন্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। ফেরির গ্যাংওয়ে তলিয়ে যানবাহন ও মানুষ চলাচলে ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। মানুষ হাটু পরিমান পানি ডিঙ্গিয়ে সড়কে উঠেছে।
জানাগেছে, অমাবস্যার জোঁর প্রভাবে পায়রা নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১৯ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপকুলীয় আমতলী ও তালতলীর চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের বাহিরের বসবাসরত মানুষের ঘরবাড়ী তলিয়ে গেছে। তারা অতিকষ্টে জীবনযাপন করছে। জোয়ারের পানিতে বালিয়াতলী, পশুরবুনিয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া, পশ্চিম ঘটখালী, গুলিশাখালী ও হরিদ্রবাড়িয়া এলাকার পায়রা সংলগ্ন বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ না থাকায় গাজীপুর বন্দর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানান ব্যবসায়ী কালাম হাওলাদার। এদিকে আমতলী পায়রা নদীর ফেরির গ্যাংওয়ে তলিয়ে যাওয়ায় বেলা ১১ থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত দু’ঘন্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এতে যানবাহন ও মানুষের চলাচলে ভোগান্তিতে পরেছে। মানুষ হাটু পরিমান পানি ডিঙ্গিয়ে সড়কে উঠছে। দ্রুত পায়রা ফেরির গ্যাংওয়ে সংস্কারের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলার গুলিশাখালী, ঘোপখালী, বালিয়াতলী, পশুরবুনিয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া, পশ্চিম আমতলী, ফেরীঘাট, পুরাতন লঞ্চঘাট, আমুয়ার চর, পানি উন্নয়ন বোর্ড, আঙ্গুরকাটা, গুলিশাখালী, হরিদ্রবাড়িয়া এবং তালতলীর নিশানবাড়িয়া, ফকিরহাট, সোনাকাটা, নিদ্রাসকিনা, তেতুঁলবাড়িয়া, আশারচর, নলবুনিয়া,তালুকদারপাড়া,চরপাড়া, গাবতলী, মৌপাড়া, ছোটবগী, জয়ালভাঙ্গা,পচাঁকোড়ালিয়ার নি¤œাঞ্চল পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রনের বাহিরের ঘর বাড়ী তলিয়ে থাকায় মানুষ বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের ওপরে আশ্রয় নিয়েছে।
লেমুয়া গ্রামের ইসহাক হাওলাদার বলেন, ভাদ্র মাসের অমাবস্যার জোঁতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে পায়রা নদী সংলগ্ন চর ও নির্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। চরে বসবাসরত মানুষরা উচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
গাবতলী আবাসনের ছত্তার হাওলাদার বলেন, পানতে ঘর তলাইয়্যা গ্যাছে। গুড়াগারা লইয়্যা কষ্ট হরি।
আমতলীর পৌর শহরের আমুয়ার চর গ্রামের ফাতেমা বেগম বলেন, জোয়ারের পানিতে ঘর তুলিয়ে গেছে।
গাজীপুর বন্দরের ব্যবসায়ী মোঃ কালাম হাওলাদার বলেন, পানিতে গাজীপুর বন্দর তলিয়ে গেছে। অনেক দোকান পাটের মালামাল নষ্ট হয়েছে। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে মালামাল নিরাপদ স্থানে রেখে দিয়েছে। দ্রুত গাজীপুর বন্দরকে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ দেয়ার দাবী জানাই।
আমতলী পায়রা নদীর ফেরিঘাটের পরিচালক মোঃ ছালাম খাঁন বলেন, জোয়ারের পানিতে ফেরির গ্যাংওয়ে তলিয়ে দুই ঘন্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এতে যানবাহন ও মানুষ ভোগান্তিতে পরেছে। দ্রুত ফেরির গ্যাংওয়ে সংস্কার করা জরুরী।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কায়সার আলম বলেন, পায়রা নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১৯ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে চর ও নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে কিন্তু বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে পানি ভিতরে পানি প্রবেশ করেনি। তিনি আরো বলেন, ঝুকিপূর্ণ বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ আগেই সংস্কার করা হয়েছে।
এমএইচকে/এমআর