সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
গলাচিপার রতনদি তালতলী মানিকচাঁদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে দীর্ঘদিন যাবত নিয়মিত বুধবার বসছে সাপ্তাহিক গরুর হাট। গরুর হাট বসানোয় একদিকে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ অন্যদিকে শিশুরা বঞ্চিত হচ্ছে খেলাধুলা থেকে। এছাড়া নানা ধরনের রোগজীবাণু ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। স্কুল চলাকালে প্রতি বুধবার গবাদিপশুর হাটের কারণে স্কুলে অর্ধেক সময় পাঠদান করা হয় বলে স্থানীয়রা জানান।গলাচিপা-বদনাতলী সড়কের কাটাখালী গ্রামের পূর্বপ্রান্তে কাটাখালী বাজার। ওই সড়কের দুই পাশে বাজারকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠেছে শতাধিক দোকানপাট। বাজার থেকে উত্তর দিকে অন্য একটি রাস্তা ধরে ২ থেকে ৩ শত ফুট গেলেই মানিকচাঁদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রতি সপ্তাহের বুধবার বিদ্যালয়ের মাঠজুড়ে বসানো হয় গরুর হাট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই স্কুলের কয়েক শিক্ষার্থীর অভিভাবক অভিযোগ করেন, প্রভাবশালীরা প্রতি বুধবার এখানে গরুর হাট বসান। এ কারণে ওই দিন আগেভাগে বিদ্যালয় ছুটি দেওয়া হয়। হাট বসানোর কারণে পশুর মলমূত্রে সয়লাব হয়ে থাকে পুরো মাঠ। আশপাশের এলাকাও হয়ে থাকে নোংরা আবর্জনায় পরিপূর্ণ। তাই পরের দিন বৃৃহস্পতিবার ওই সব মলমূত্র, নোংরা আবর্জনা পরিষ্কার করতে বাধ্য করা হয় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কাটাখালী বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতাদের ছত্রছায়ায় কয়েক বছর ধরে স্কুলের মাঠে গরুর হাট বসাচ্ছে। করোনাকালীন এর কোনো তোয়াক্কাই করেননি বাজার কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার কারণে এটি এখন ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি সরকার কর্তৃক স্কুল খোলার প্রস্তুতি নিতে বলা হলেও এখানে সে ধরনের কোনো তৎপরতা লক্ষ করা যায়নি।
এ ব্যাপারে জানাতে ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. ফিরোজ আলমকে ফোন করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বায়েজীদ ইসলাম বলেন, ‘কাটাখালী বাজারে দীর্ঘদিন ধরে গরুর হাট বসে। এর পাশেই স্কুলের অবস্থান কিন্তু স্কুল মাঠে গরুর হাট বসে এ ধরনের তথ্য আমার জানা নেই। তবে এমন ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ের মাঠে হাট বসানোর ব্যাপারে নিষেধ করা হবে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রেজাউল ইসলামের কাছে এ বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্কুল মাঠে গরুর হাট বসে না। তবে দেয়ালের কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশিষ কুমার জানান, স্কুল মাঠে হাট বসানো কোনো ক্রমেই কাম্য নয়। স্কুল মাঠে যাতে হাট বসানো না হয় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।