দশমিনা(পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় প্রায় হাজার ১২শ’ পরিবারের ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল চালক রয়েছে। দু’চাকার উপরে তাদের পুরো সংসার। চলছে বর্ষার মৌসুম আর গত ক’দিন ভাড়া না থাকায় চরম কষ্টের মধ্যে দিন কাটছে তারদের। কেউ এসএসসি, কেউ এইচএসসি অনেকেই আবার লেখা পড়া করুয়া ছাত্র। কিন্তু বসে নেই তারা। কেউ লেখা পড়ার খরচ যোগাতে, কেউবা সংসারের জোগান দিতে রাস্তায়। বেকার বসে থেকে পিতা-মাতার কাছে বোঝা না হয়ে জীবন সংগ্রামে তারাও। সেই ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রচন্ড রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে জীবনযুদ্ধে বেঁেচ আছে তাদের জীবন। নিজে এবং পরিবারের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে মটরসাইকেলে ভাড়া চালানোর এই পেশা। তবুও ওদের চোখে মুখে যেন খুশীর অন্ত নেই।
তবে তাদের আছে আক্ষেপও। প্রতিনিয়ত পুলিশি হয়রানির শিকার হতে হয় বলেও অভিযোগ তাদের। দশমিনা উপজেলায় এ পেশায় নিয়োজিত সুমন হোসেন নামের একজন মটরসাইকেল চালক বিএসএস পড়–য়া প্রথম বর্ষের ছাত্র । কথা হয় এ প্রতিনিধির সাথে সে জানায়, লেখা পড়ার পাশাপাশি মটরসাইকেল চালিয়ে সব খরচ বাদ দিয়ে দৈনিক দুই তিন শ’ টাকা আয় করে থাকি। এতেই আমার কলেজ ও সংসারের খরচ মিটে যায়। মটর সাইকেলের নিয়মিত যাত্রী বাঁশবাড়িয়া ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু খান বলেন, জরুরী কাজে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্বল্প সময় কম খরচে মটরসাইকেলে যাওয়া আসা তার জন্য খুবই সহজ। কারণ মোবাইল ফোন করলেই তাদের পাওয়া যায় এবং সকলেই স্থানীয় লোক হওয়ায় ভয়েরও কোন কারন নেই।
জানা যায়, উপজেলায় এই পেশায় নিয়োজিত রয়েছে শতাধিক শিক্ষিত বেকার যুবক। প্রতি গ্রামের হাট বাজার গুলোতে যাত্রী বহনের সহজ উপায় এখন ভাড়ায় চালিত মটরসাইকেল। প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে বসবাসকারী লোকদের দ্রুত গন্তব্য স্থানে পৌছাতে মটর সাইকেলের আর কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছেন অনেকে। উপজেলার সাতটি ইউনিয়নেই মটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে বেঁচে আছে দুই শতাধিক পরিবার।
ওদের মধ্যে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক মো. রফিক হোসেন ও মোসারেফ মৃধা নামে দুই যুবক জানিয়েছে, একটি মটর সাইকেল ক্রয় করে জীবিকা নির্বাহের তাগিদে এই পেশায় নামতে বিভিন্ন এনজিও সংস্থা এবং সুদি মহাজন থেকে চড়া সুদে লোন নিতে হয় তাদের। তাছাড়া অনেকে আবার সহায় সম্বল বিক্রয় করেও বেকার সমস্যা সামাধানে মটরসাইকেল চালিয়ে অর্থ উপার্জন করছে। প্রতিদিন ঋনের কিস্তির টাকা পরিশোধের পর তারা সংসারের চাহিদা মিটাচ্ছে কোন রকমে।
এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মটরসাইকেল চালক এই প্রতিবেদকের কাছে আক্ষেপর করে বলে, তারা জীবন-জীবিকা নির্বাহের জন্য অনেক কষ্টের কেনা মটরসাইকেল চালায়। তাছাড়া অনেকে আবার সহায় সম্বল বিক্রয় করেও বেকার সমস্যা সামাধানে মটরসাইকেল চালিয়ে অর্থ উপার্জন করছে। বিভিন্ন এনজিও সংস্থা এবং সুদি মহাজনদের থেকে চড়া সুদে লোন নিয়ে মোটরসাইকেল কিনে বেকারত্ব দুরীকরণের আশায় বেছে নেয়া এই পেশায় নিয়োজিত অসহায় যুবকরা।
দশমিনা থানা ওসি জসীম জানান, এ উপজেলায় প্রায় হাজার ১২শ’ ভাড়ায় চালিত মটরসাইকেল রয়েছে। জীবন-জীবিকা নির্বাহের জন্য মটরসাইকেল চালায় তারা।
এসবি/এমআর