কলাপাড়া সাগরকন্যা অফিস॥
কলাপাড়ায় ময়লা-আবর্জনার ভাগারে পরিনত হয়েছে ইলিশের অভয়াশ্রম আন্ধারমানিক নদীটি। পৌর শহরের ও বাসাবাড়ির সকল প্রকারের আবর্জনা আন্ধারমানিক নদীতে ফেলা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। প্রতিদিনের এ আবর্জনা নদীতে মিশে আন্ধারমানিক নদীর পানি ক্রমে চরম দূষিত হচ্ছে। বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে মাছের বিচরণ। পারিবারিক, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও কলাপাড়া পৌরসভার আবর্জনা এবং শহরের প্রতিদিনের ময়লা এই নদীতেই ফেলা হচ্ছে। একই সাথে পৌর শহরের অভ্যন্তরীণ খালে ফেলা হচ্ছে ময়লা। যেগুলো স্লুইসগেট দিয়ে ভাঁটার সময় আন্ধারমানিক নদীতেই নামছে। অবৈধ পলিথিন থেকে শুরু করে যে কোন বর্জ্য এ আন্ধারমানিক নদীতে ফেলে দূষিত হচ্ছে নদীর পানি। পৌরসভায় বাসবাসকারী মানুষের অসচেতনতা ও পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন সচেতন মহল। পৌরবাসী তাঁদের পারিবারিক বর্জ্য কখনো পানি নিষ্কাশনের ড্রেনের মধ্যে কখনো আবার রাস্তার পাশে ফেলছে। অন্যদিকে পৌরসভার কর্মচারীরা রাস্তায় পড়ে থাকা সকল বর্জ্য কুড়িয়ে ফেলছে শহরের ভিতরে থাকা খালগুলোতে। পরবর্তীতে যা ভেসে আন্ধারমানিক নদীর পানিতে মিশে যাচ্ছে। এ বর্জ্য দূষনে আন্ধারমানিক নদীর ইলিশের অভয়াশ্রমটি ক্ষতির সন্মুখিন।
পৌরসভা তথ্য সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের জনসংখ্য ও গৃহগণনা-২০১১ অনুসারে কলাপাড়া পৌরসভার পরিবার সংখ্যা চার হাজার ৩৪৭ ও লোকসংখ্যা ১৭ হাজার ৩৩২ জন। যা তিনগুনের বেশি। এক্ষেত্রে পরিবার প্রতি আধা কেজি বর্জ্য হলে দৈনিক কমপক্ষে আড়াই টন বর্জ্য হয়, যা মাসে ৭৫ টন। এর আগে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কিছুদিন নাচনাপাড়া এলাকায় ফেলেছিলো কিন্তু এখন তা ফেলছেনা।
এবিষয়ে ইকোফিশ-২ (ওয়ার্ল্ডফিশ) প্রকল্পের সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি সাগরকন্যাকে বলেন, এ থেকে উত্তরনের জন্য সঠিকভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করাটা জরুরী। এক্ষেত্রে বর্জ্য রিডিউস, রিসাইকেল এবং রিইউস করতে হবে। এ দূষণের প্রভাবে আন্ধারমানিক মোহনায় চর জেগেছে, ইলিশের আনাগোনাও কমেছে বলেও মন্তব্য সাগরিকা স্মৃতি।
কলাপাড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো: হুমায়ুন কবির গণমাধ্যমকে বলেন, পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য যথাযথ পরিকল্পনা রয়েছে এবং একটি জায়গা ডাম্পিং স্টেশনের জন্য কেনা হয়েছে। ওই জায়গায় বর্তমানে রাস্তা নেই, রাস্তার কাজ চলছে, যা সম্পন্ন হয়ে গেলে ময়লা-আবর্জনা ফেলা নিয়ে আর কোন সমস্য হবেনা। তবে পৌর শহরের সকল মানুষকে আরো সচেতন হতে হবে।