২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা১৭ বছর পায়ে স্প্লিন্টার বহন করে বেড়াচ্ছেন তালতলীর সিদ্দিক

প্রথম পাতা » বরগুনা » ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা১৭ বছর পায়ে স্প্লিন্টার বহন করে বেড়াচ্ছেন তালতলীর সিদ্দিক
শনিবার ● ২১ আগস্ট ২০২১


 

২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলায় আহত ছিদ্দিক

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

১৭ বছর ধরে পায়ে স্প্লিন্টার বহন করে বেড়াচ্ছেন গ্রেনেড হামলায় আহত তালতলী উপজেলার পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক কলারং গ্রামের সিদ্দিক তালুকদার। মাঝে মাঝে পায়ে ব্যথার অনুভব করলেও টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। অতিকষ্টে দিন মজুরী করে সংসার ব্যয়ভার বহন করছেন তিনি।

জানাগেছে, ১৯৯৬ সালে জীবন জীবিকার তাগিদে তালতলী উপজেলার কলারং গ্রামের নুরুল ইসলাম তালুকদারের ছেলে মোঃ সিদ্দিক তালুকদার ঢাকা যান। ওই খানে তিনি রিক্সা চালকের কাজ নেন। কিশোর বয়স থেকেই সিদ্দিক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মনেপ্রাণে ভালোবাসেন। আওয়ামীলীগের সভা সমাবেশের খবর শুনলেই সিদ্দিক ছুটে যান। এ জন্য বিএনপি জোট সরকারের আমলে হামলা ও মামলার শিকার হয়েছেন বলে দাবী করেন সিদ্দিক।  ২০০৪ সালে ২১ আগষ্ট আওয়ামীলীগের সমাবেশের খবর শুনে তিনি বিকেল বেলা রিকসা নিয়ে সভাস্থলে যান। মনযোগ সহকারে দলীয় নেতাদের বক্তব্য শুনেন। দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ শুনছিলেন সিদ্দিক। এমন মুহুর্তে গ্রেনেড হামলা হয়। ওই হামলায় গ্রেনেডের স্প্লিন্টার তার পায়ে বিদ্ধ হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় এক ব্যক্তি তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালে তিনি দুইদিন চিকিৎসা নেন। পরে তিনি হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গ্রামের ফিরে আসেন। এরপর তিনি আর ঢাকায় যাননি। গত ১৭ বছর ধরেই পায়ে স্প্লিন্টার বহন করে বেড়াচ্ছেন তিনি। মাঝে মাঝে তার পায়ে প্রচন্ড ব্যথার অনুভব করেন এবং হাঁটতে কষ্ট হয়। কিন্তু টাকার অভাবে তিনি চিকিৎসা করাতে পারছেন না। বর্তমানে এলাকায় তিনি অতিকষ্টে দিনমজুরীর কাজ করে জিবিকা নির্বাহ করছেন।

গ্রেনেড হামলায় আহত সিদ্দিক তালুকদার সেই দিনের বিবেষিকাময় ঘটনার বর্ননায় বলেন, কিশোর বয়স থেকেই আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভালোবাসি। বিএনপি জোট সরকারের আমলে এজন্য আমাকে মামলা ও হামলাসহ বেশ খেশারত দিতে হয়েছে। ২১ আগষ্ট বিকেলে বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউতে আওয়ামীলীগ সভা ডেকেছে। ওই সভার খবর শুনে বাড্ডা থেকে খুব সকালে রিকসা নিয়ে বের হই। সারাদিন সভা এলাকায় রিকসা চালিয়ে বিকেল বেলা সভা স্থালে গিয়ে উপস্থিত হই। রিকসার বসেই দলীয় নেতাকর্মীদের বক্তব্য শুনতেছিলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য শুরুর পরপরই শুধুই শব্দ আর শব্দ। বেশ কয়েকটি গ্রেনেডের স্প্লিন্টার আমার পায়ে বিদ্ধ হয়। মানুষ ছুটাছুটি করে চলে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় এক ব্যাক্তি আমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। দুইদিন ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম। পরে পালিয়ে বাড়ী এসেছি। আর ঢাকায় যায়নি। তিনি আরো বলেন, পায়ের স্প্লিন্টার এখন মাংশের সাথে মিশে গেছে। মাঝে মাঝে পায়ে অনেক ব্যথা করে। কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারি না।

প্রতিবেশী আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, গ্রেনেড হামলায় সিদ্দিক তালুকদার আহত হওয়ার খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যাই। ওই হাসপাতালে তার পাশে থেকে সেবাশুশ্রুষা করেছি।

পঁচাকোড়ালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নজির হোসেন কালু পাটোয়ারী বলেন, ২০০৪ সালের গ্রেনেড হামলায় আহত সিদ্দিক তালুকদারকে যথাসাধ্য সাহায্য সহযোগীতা করা হচ্ছে।

তালতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার বলেন, সিদ্দিক পঁচাকোড়ালিয়া ওয়ার্ড আওয়ামীলীগে রয়েছেন। গ্রেনেড হামলায় আহত সিদ্দিককে সার্বিক সহযোগীতা করা হবে।

 

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৫৩:৫৪ ● ২৮৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ