চরফ্যাশন (ভোলা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
চরফ্যাশন উপজেলায় ব্যাঙের ছাতার মত ড্রাগ লাইসেন্স বিহীন ঔষুধ ফার্সেমীর ছড়াছড়ি দেখা দিয়েছে। প্রশিক্ষণ না থাকলেও এমন ব্যক্তি ডাক্তার পরিচয় দিয়ে হরহামেসা রুগী দেখে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করার অভিযোগ রয়েছে। চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা দিয়ে হয়েছেন লাখপতিও।
সরেজমিন চেয়ারম্যান বাজার গিয়ে দেখা গেছে, মাত্র এসএসসি পাশ করে ডাক্তারী কোন প্রশিক্ষণ না দিয়ে মধ্য বাজার সিকদার মার্কেটে “রিয়াজ মেডিকেল”নামে (মিনি হাসপাতাল) চেম্বার খুলে বসে আছেন। দেখছেন দৈনিক শ‘শ রুগী। তাকে গিয়ে জনৈক মহিলা রোগির চিকিৎসা দিতে দেখা গেছে। ওই বাজারের গ্রাম ডাক্তার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদকও হয়েছেন। তাকে কি হিসাবে গ্রামের রুগী দেখেন এমন প্রশ্নে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেন নি। ড্রাগ লাইসেন্স রয়েছে নবায়নের শেষ মেয়াদ ৭মে. ২০২০সাল। ট্রেড লাইসেন্সও ১৭সাল পর্যন্ত নিয়ে বন্ধ রেখেছেন।
কারো ফার্মাসিষ্ট সনদ নেই কিভাবে ঔধুষ বিক্রি করেন এমন বিষয়েও উত্তর নেই। এদিকে হাজারীগঞ্জের চেয়ারম্যান বাজারের সবচেয়ে বড় দোকান খুলে এই ভাবে বছরের পর বছর সরকারের কর ফাঁকি দিয়ে ডাক্তার ও ব্যবসা উভয় চালিয়ে যাচ্ছেন।
চেয়ারম্যান বাজার সদর রোডে অবস্থিত ইবনেসিনা মেডিকেল হল। প্রোপাইটর হিসাবে রয়েছেন মো. শাহে আলম। তার ড্রাগ লাইসেন্স রয়েছে জণৈক হিন্দুর নামে। তারও ফার্মাসিষ্ট সনদ নেই। তিনি বলেন, আমাকে এক সাপ্তাহ সময় দেন আমি সব রেডি করে দিব।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, চরফ্যাশন উপজেলায় ২৫২ ঔষুধ ফার্মেসী রয়েছে। তার মধ্যে ১৬০ ড্রাগ লাইসেন্স রয়েছে। ফার্মাসীষ্ট প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত রয়েছে প্রায় ২০০শত ।
স্থানীয়রা জানান, সিরাজ উদ্দিন নেবুলাইজেশানের মাধ্যমে ৪/৫ টাকা খরচ করে একশত থেকে দেড়‘শ টাকা নিচ্ছেন। নাম সর্বস্ব কোম্পানির মেডিসিন দিয়ে সহজ সরল মানুষের টাকা পয়সা হাতিয়ে নেন প্রতিনিয়ত। চেয়ারম্যান বাজারে ও চরফ্যাশন পৌরসভায় নামে বে-নামে লক্ষ লক্ষ টাকার জমি এবং ভিটা করছেন তিনি।
চেয়ারম্যান বাজারের সিরাজ উদ্দিন বলেন, আমি কোন দীর্ঘ মেয়াদী প্রশিক্ষণ দেয়নি। উপজেলায় অনেকে রোগি দেখতে পাললে আমি পারব না কেন? আমি রুগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি।
উপজেলা গ্রাম ডাক্তার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ বলেন, প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ৩৭৫জন প্রায় ৪০০প্রশিক্ষণ বিহীন গ্রাম্য ডাক্তার রয়েছে। আগ্রহ না থাকায় তাদেরকে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা যাচ্ছে না। তবে প্রাথমিক চিকিৎসা তারা দিতেছেন।
চরফ্যাশন ড্রাগ এন্ড ক্যামিষ্ট সমিতির সম্পাদক জালাল আহম্মেদ বলেন, আমাদের প্রায় ১৬০টি ড্রাগ লাইসেন্স রয়েছে এবং ফার্মাসীষ্ট এর সংখ্যাও প্রায় ২০০শত।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. শোভন কুমার বসাক বলেন, ৬মাস ১বছর মেয়াদী প্রশিক্ষণ বিহীন কেউই প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার কোন রাইট নেই। ১-৫দিনের প্রশিক্ষণের সনদ দিয়ে রুগী দেখতে পারবেনা।
এএইচ/এমআর