চরফ্যাশনে স্বাস্থ্য সেবার ১৬লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগ

প্রথম পাতা » ভোলা » চরফ্যাশনে স্বাস্থ্য সেবার ১৬লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগ
মঙ্গলবার ● ১৭ আগস্ট ২০২১


প্রতীকী ছবি

আমির হোসেন, চরফ্যাশন থেকে॥
চরফ্যাশন উপজেলার ৩০টি এনজিওর বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য সেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষার ৫০. ৭৫হাজার ও ১লাখ টাকা করে মোট ১৫লাখ ৭৫হাজার টাকা অনুদানের বরাদ্দ লোপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ব্যপারে ভ্ূঁইফোর নাম সর্বস্ত ১৮টি এনজিওর বিরুদ্ধে বরাদ্দ না পাওয়ার জন্যে প্রতিবেদন দাখিল করলেও দালাল চক্রের মূল হোতা জাকির হোসেন বাকেরের অবৈধ পন্থায় এই সকল বরাদ্দের সহযোগিতা করেছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
অভিযোগ ও সরেজমিন পরিদর্শন করে জানা যায়, উপজেলার মোট ৩০টি এনজিওর মধ্যে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগে ১৪টি, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে ১৬টি এনজিওর নামে স্বাস্থ্য পুষ্টি ও জনসংখ্যা খাতে ২০২০-২১অর্থ বছরে ১৫লাখ ৭৫হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এই সকল এনজির মধ্য সরকারি নীতিমালার বর্হিভূত ভাবে সমবায় থেকে নিবন্ধনকৃত সমিতিও বরাদ্দের আওতায় এসেছে। নীতিমালায় উল্লেখ রয়েছে জয়েন স্টোক,সমাজ সেবা,যুব উন্নয়ণ ও  মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে নিবন্ধকৃত এনজিও গুলো বরাদ্দের আওতায় এসে আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু একটি দালাল চক্র অসাধু এনজিওর নির্বাহী পরিচালকগন মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষকে ভূল বুঝিয়ে প্রভাবিত করে বরাদ্দের টাকা এনে লুটপাট করেছেন একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ১৫লাখ ৭৫হাজার টাকার পুষ্টি, স্বাস্থ্য সেবার কোন কাজই করা হয়নি। নামসর্বস্ব নিবন্ধণ বিহীন এনজিও বরাদ্দ পেয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে।
এই সকল বরাদ্দের এনজিওর তালিকা যাছাই-বাছাইয়ের জন্যে উপজেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের সহকারী প্রোগ্রামার এস এম আল মাহমুদ ও শিক্ষা অফিসের সহকারী প্রোগ্রামার (ব্যানবেইস) মো. বিল্লাল হোসাইন এই ৩জন দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে। যে সকল এনজিও নিবন্ধন, নবায়ন, অফিস, কার্যক্রম  এমনকি অস্তিত্ব নেই এমন কয়েকটির জিন্নাগড় মহিলা উন্নয়ন সমিতি, জননী মহিলা উন্নয়ণ সংস্থা(জননী),মুক্তা প্রগতি মহিলা কল্যাণ সংস্থা(মুক্তি), চরতোফাজ্জল গোলাপ মহিলা উন্নয়ণ সমিতি, নীলকমল মহিলা কল্যাণ সমিতি, মধুমতি নারী কল্যাণ সমিতিসহ ১৮টি এনজিওর বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিলের পরেও সরকারি নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সরেজমিন গেলে নীলকমল ইউনিয়নের চরযমুনা গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, নীলকমল মহিল উন্নয়ন সংস্থা নামে কোন রেজিষ্টেশন নেই। এমনকি কোন ঘর সাইনবোর্ড নেই। এমন এনজিও স্বাস্থ্য সেবা থেকে ৫০হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন। কারা কিভাবে? এই টাকা উত্তোলন করেছেন তা কেউ জানেনা। বরাদ্দের কাগজে এদের নামের তালিকা পাওয়া যায়।
চরফ্যাশন উপজেলা জননী মহিলা উন্নয়ণ সংস্থার সভানেত্রী বদরুননেছা বলেন, আমি সংস্থার সভানেত্রী ঠিক আছে। বরাদ্দের বিষয় আমি জানিনা। কাজকর্ম হয়না এমন অবৈধ টাকা পয়শা আমি খাইনা।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের ব্যানভেইস কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসাইন বলেন, আমি এনজিওর অস্তিত্ব নেই এমন ১১টির বিরুদ্ধে বরাদ্দ না দেয়ার জন্যে মন্ত্রণালয় কতৃপক্ষের কাছে ৩৭.২০.০৯২৫.০০০.৯৯.০০৫.২০.১৬১ স্মারকে প্রতিবেদন দাখিল করেছি। তার পরেও এইসব এনজিও গুলো কিভাব বরাদ্দ পায় তা আমার জানা নেই।
এই ব্যপারে দিশারী সমাজ উন্নয়নের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন বাকের বলেন, আমার ৬টি এনজিও রয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী সংস্থা কর্তৃপক্ষ আবেদন করেছেন। মন্ত্রণালয় তাদেরকে বরাদ্দ দিয়েছে। কাজ হয়েছি কিনা জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এই ব্যাপারে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রমেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, আমাদের থেকে নিবন্ধীত সংস্থা গুলো বরাদ্দের জন্যে কোন সুপারিশ নেয়া হয়না। ভূয়া সমিতির মাধ্যমে এই সকল বরাদ্দ এনে কার্যক্রম করেন। চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা বলেন,এটির তদারকি কমিটি রয়েছে। তদারকির রিপোর্ট মোতাবেক তাদের বরাদ্দ ছাড় করা হয়েছে। কাজ হয়নি এমন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল নোমান রাহুল বলেন, আমি এই বিষয় কিছু জানিনা। রিপোর্ট করে দেন। দুর্বিত্তদেরকে প্রশ্রয় দেয়া যাবেনা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৪৭:০৮ ● ৪৭৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ