বাউফল (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
চিঠি চালাচালিতেই ঝুলে আছে বাউফলের বগা সেতুর নির্মাণ কাজ। জনগুরুত্ত্বপূর্ণ এই সেতুটি নির্মাণ না হওয়ায় একদিকে যেমন দূর্ভোগ কমছেনা সাধারণ যাত্রীদের, অপরদিকে সেতু নির্মাণে দীর্ঘসূত্রিতার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদেরকেই দুষছেন স্থানীয়রা।
লেবুখালী-বাউফল-গলাচিপা-আমড়াগাছিয়া সড়কের ১৪তম কিলোমিটারে লোহালিয়া নদীর উপর নির্মিত হওয়ার কথা রয়েছে ৯ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী বগা সেতু। ৯৮০মিটার দীর্ঘ এই সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিলো ৪০০ কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প তালিকায় থাকা এই সেতুটি নির্মাণের জন্য ২০১৭ সালের ১১ মে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব এবং চীনা রাষ্ট্রদূতের মধ্যে ৫০০মিলিয়ন আরএমবি ইউয়ান অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই অর্থ সেতু, এ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ এবং পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের জন্য ব্যয় করার কথা রয়েছে। তবে ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন, পানি, বিদ্যুৎ সরবরাহের অর্থ ব্যয় করবে বাংলাদেশ সরকার। এরপর ২০১৮ সালে ১৮ সেপ্টেম্বর ডিপিপি প্রনয়নের জন্য সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ব্রীজ ম্যানেজমেন্ট উইং এর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (চঃ দঃ) রওশন আরা খানম পটুয়াখালী জেলা সড়ক ও জনপথের নির্বাহি প্রকৌশলীকে জমি অধিগ্রহন, জমি অধিগ্রহনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পুনর্বাসন করতে কি পরিমান অর্থের প্রয়োজন হবে জানতে চেয়ে চিঠি পাঠান। তবে নির্মাণের জন্য সম্ভাব্য এলাকায় এখনো শুরু হয়নি এই সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের কাজ।
বাউফল দশমিনা এবং গলাচিপা এই তিন উপজেলার ২০লাখ মানুষের প্রাণের দাবী, এই সেতু নির্মাণের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সাধারণ মানুষ।
ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার মহিলা ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক আবদুল জলিল ঝন্টু সাগরকন্যাকে বলেন, এই সেতুটি শুধু বাউফল উপজেলাকে দেশের উন্নয়নের মূল মহাসড়কে যুক্ত করবে এমনটি নয়। এই সেতুটি নির্মাণ হলে এর সুফল পাবে বাউফল, দশমিনা গলাচিপা উপজেলার কমপক্ষে ২০লক্ষ মানুষ। এই সেতুটি নির্মাণ হলে উপকূলীয় এই তিনটি উপজেলার সাথে রাজধানী ঢাকার সাথে সড়ক পথে যোগাযোগের আর কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকবে না। পদ্মা এবং লেবুখালী সেতুর সুফল দক্ষিণ অঞ্চলের প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে দিতে হলে দ্রুততার সাথে এই সেতুটি নির্মাণ করা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের পটুয়াখালী সার্কেলের (সড়ক) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ ইমদাদ হোসেন সাগরকন্যাকে বলেন, ২০১৯সালে আমরা মন্ত্রণালয়ে এই সেতুটি নির্মাণের বিষয়ে বেশ কিছু চিঠি পাঠিয়েছি। আগামী এক দুই মাসের মধ্যে চীনা প্রতিনিধি দলের সেতু নির্মাণের প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে আসার কথা রয়েছে। ওনাদের পরিদর্শন শেষে সেতু নির্মাণের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। আশা করছি শীঘ্রই বিষয়টি চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।
এসএস/এমআর