আমতলীতে খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ!

প্রথম পাতা » বরগুনা » আমতলীতে খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ!
মঙ্গলবার ● ১০ আগস্ট ২০২১


আমতলীতে খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ!

আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া গ্রামে সরকারী খালে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে পানি আটকে মাছ চাষ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ওই এলাকার ১০ হাজার একর কৃষি জমি জলাবদ্ধতায় চাষাবাদ বন্ধ রয়েছে। পানি অপসারনের দাবীতে মঙ্গলবার ইউএনওর কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলা হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া ও গুরুদল গ্রামের মধ্যখানে প্রবাহিত কাউনিয়া খান। ওই প্রবাহিত খালের জলেখা নামক স্থানে পাঁচ কপাটের  স্লুইসগেট রয়েছে। ওই প্রবাহমান  খালটি স্থানীয় প্রভাবশালী নাননু মোল্লা গত ১০ বছর ধরে অবৈধ ভাবে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করে আসছে। ওই খানের পাঁচটি স্থানে বাঁধ ও একটি কালভার্টের মুখে জাল দিয়ে আটকে ফেলায় পানি নিস্কাশন বন্ধ রয়েছে। পানি নিস্কাশন বন্ধ থাকায় এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। ওই এলাকা ৩-৪ ফুট পানির নীচে তলিয়ে রয়েছে। জলাবদ্ধতার কারনে গত ১০ দিন ধরে জমি চাষাবাদ বন্ধ রয়েছে। এতে  প্রায় ১০ হাজার একর জমি অনাবাদী থাকার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। সরকারী খালের বাঁধ অপসারন করে পানি সরবরাহ সচল করতে ভুক্তভোগী কৃষকরা মঙ্গলবার আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ইউএনও তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত পানি অপসারনের জন্য কৃষকদের আশ^াস দিয়েছেন।
কৃষক রুহুল আমিন প্যাদা অভিযোগ করে বলেন, হলদিয়া গ্রামের নাননু মোল্লা প্রভাব খাটিয়ে সরকারী কাউনিয়া খালে অবৈধ ভাবে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় হলদিয়া এবং গুরুদল গ্রামের প্রায় ১০ হাজার একর জমি পানিতে তলিয়ে রয়েছে। বর্তমানে পানি অনেকের বাড়ি ঘরে ঢুকে পরেছে। পানির কারনে চাষাবাদও বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় আব্দুল খালেক মোল্লা, মেনাজ প্যাদা ও ফজলু মোল্লা বলেন, খালে বাধ দেয়ার কারনে এলাকা পানিতে তলিয়ে রয়েছে। জমি চাষাবাদ করতে পারছি না। দ্রুত বাঁধ কেটে পানি অপসারনের দাবী জানিয়েছেন তারা।
হলদিয়া গ্রামের রাসেল প্যাদা বলেন, খালে বাঁন দিয়া নাননু মোল্লা মোগো শ্যাষ হরছে। পানিতে মোগো জমি এহন ২-৩ আত পানির নীচে তলাইয়া রইছে। মোরা আল চাষ হরতে পারি না। আমন ধানের বীজ পইচ্যা গ্যাছে। মোগো অইছে এহন মরন দশা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেন, কাউনিয়া খালে অবৈধ ভাবে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় এখন জলাবদ্ধতায় প্রায় ১০ হাজার একর জমি পানিতে তলিয়ে রয়েছে। পানির কারনে কৃষকের হালচাষ বন্ধ রয়েছে। আমনের বীজ তলা পচে গেছে। এভাবে পানি জমে থাকলে দুই গ্রামের কৃষকের জমি অনাবাদী থাকার আশঙ্কা রয়েছে।
খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষী অভিযুক্ত নানানু মোল্লা বাঁধ দেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, কালভার্টের মুখে জাল দিয়ে ঘিরে মাছ চাষ করা হচ্ছে।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। ইউএনও নির্দেশে সরেজমিনে তদন্ত করে দ্রুত সময়ের মধ্যেই প্রতিবেদন দেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষের অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে তদন্তের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে বাঁধ কেটে পানি অপসারনের ব্যবস্থা করা হবে।

 

 

 

এমএইচকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ০:১৪:০৩ ● ৩৭১ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ