কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥
টিয়াখালী ইউনিয়নের নাচনাপাড়া গ্রামের কৃষক চন্দ্র শেখর কির্তনিয়া ৬৬ শতক জমিতে বিআর ৫২ জাতের ধানের বীজতলা করেছিলেন। অতিসম্প্রতি অতি বর্ষনে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় সব নষ্ট হয়ে গেছে। পুনরায় বীজতলা করতে ধান কেনার জন্য চেষ্টা করছেন। এখন পর্যন্ত সগ্রহ করতে পারেন নি। কুড়িকানি গ্রামের চাষী কাঞ্চন হাওলাদার দেখালেন তার এক একর জমির বীজতলা সব পচে গেছে। ছয়-সাত দিন পরে পানি কমেছে কিন্তু বীজতলা রক্ষা হয়নি। নীলগঞ্জের কুমিরমারা গ্রামের চাষী জাকির গাজী জানালেন তারসহ সব কৃষকের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আবার বীজতলা করতে কৃষক বীজধান সগ্রহে ঘুরছেন হন্য হয়ে।
কৃষকরা জানান, বৃষ্টির পানি নামার খালবিল দখল করে পুুকুর মাছের ঘের করায় কৃষকের এমন সর্বনাশ হয়ে গেছে। আমন বীজতলা ছাড়াও সবজির ক্ষেত ফলনসহ পচে গেছে। ১২টি ইউনিয়নের সকল কৃষকের একই দশা। এমনকি কলাপাড়া পৌরসভার শত শত পরিবারে আঙিনার সবজির ক্ষেত পর্যন্ত পচে গেছে। এখনও পানিবন্দীদশার দুরাবস্থা সম্পুর্ণভাবে নিরসন হয়নি। কলাপাড়া শহরের চিঙ্গরিয়া এলাকার তিন শতাধিক পরিবার এমন দূর্ভোগে পড়েছেন। বৃহস্পতিবার গ্রামের বিভিন্ন জনপদ ঘুরে দেখা গেছে কৃষকের দুরাবস্থার চিত্র। এখন আমন চারা রোপনের জো চলছে। অথচ কোন গোছা (চারা) জমিতে দিতে পারেন নি কৃষক। তাদের দুশ্চিন্তায় রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। কয়দিন আগে কৃষকের এমন দুরাবস্থা লাঘবে উপজেলা কৃষক সমিতি শহরে মানববন্ধনসহ সমাবেশ করেছে। দিয়েছেন স্মারকলিপি। কৃষকরা এখন সহজলভ্য ভাবে বীজধান পেতে পারেন তেমন দাবি করেছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এআরএম সাইফুল্লাহ জানান, অতিবর্ষণে কলাপাড়ায় এখন পর্যন্ত ৭৫ হেক্টর জমির বীজতলা সম্পুর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। যা দিয়ে কৃষক ১৫০০ হেক্টর জমিতে রোপন করতে পারতেন। এছাড়া ২২২ হেক্টর জমির সবজিক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে বৃষ্টির পানির সৃষ্ট জলাবদ্ধতায়। পচে গেছে করলা, শসা, বরবটি, কাঁচামরিচসহ বিভিন্ন ফসল। এই কর্মকর্তা আরও জানান, জলাবদ্ধতার প্রধান কারন প্রবাহমান খালে বাঁধ, অনিয়ন্ত্রিত স্লুইসগেট ও খালে স্্্ক্ষ্মু ফাঁসের জাল পেতে মাছ ধরায় খালের পানি নামায় বাধার সৃষ্টি হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক জানান, খালের অবৈধ বাঁধ অপসারনের কাজ চলমান রয়েছে ইতোমধ্যে দুইটি খালের অন্তত ২০টি বাঁধ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কেটে দেয়া হয়েছে।
এমইউএম/এমআর