কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥
পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌরশহরে ৭ নং ওর্য়াডের বাসিন্দা এস এম মুর্তল্লা সৌরভ দেশীয় ৫টি গরু নিয়ে স্বল্প মূলধনে ২০১০সালে ব্যবসা শুরু করে গড়ে তুলেন সিকদার ডেইরী দুগ্ধ খামার। নিজের পরিশ্রম ও সততা দিয়ে পরিনত করেন আধুনিক মোটাতাজা ও দুগ্ধ খামার। বর্তমানে তার খামারে ন্যারা মুন্ডি (পাঞ্জাব), হোলষ্ট্যান ফ্রিজিয়ান (অস্ট্রেলিয়ান) ও শংকর জাত (ভারত)সহ দেশি-বিদেশি ১৮ টি গরু রয়েছে। কয়েক বছর ধরে ব্যবসা করে এবং বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়ে এই খামারটি তৈরি করেছেন। সরকারী সহায়তা বা স্বল্প সুদে ঋণ পেলে এ খামারটিকে কলাপাড়ার একটি মডেল হিসাবে রুপান্তড়িত করতে পারবেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সিকদার ডেইরী দুগ্ধ খামার ২০১০সালের প্রথম দিকে ব্যবসা শুরু করেন। দেশী ৫ টি গরু দিয়ে ডেইরী খামার ব্যবসার খাতায় নাম লেখান। বর্তমানে তার ফার্মের ব্যবসায়ের মূলধন প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা। যদিও এর সিংহভাগই বিভিন্ন এনজিও সংগঠন থেকে লোন করে আনতে হয়েছে। নভেল করোনা ভাইরাসের কারনে খামারের ১৮টি গরুর মধ্যে ঈদুল আযহার সময় ২টি গরু বিক্রি করে লাভের মুখ দেখতে পায়নি। এখন তার খামারে ন্যারা মুন্ডি ২টি, হোলষ্ট্যান ফ্রিজিয়ান (অস্ট্রেলিয়ান) ২টি, শংকর জাত (ভারত) ২টি ও দেশি বিভিন্ন জাতের ১০টিসহ মোট ১৬টি গরু রয়েছে। দুগ্ধ খামারে প্রতি মাসে দুই জন কর্মচারি ও গরুর খাবার সহ মোট ৫৫হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতিদিন খামার থেকে ৬০লিটার দুধ উৎপাদন হয়, যা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে তার প্রতিদিনের ব্যয় নির্বাহ করে মাস শেষে ভালো লভ্যাংশ থাকে। কিন্ত বর্তমানে নভেল করোনা ভাইরাসের কারনে দুধের দাম কম থাকায় লাভবান হচ্ছে না খামার মালিক ,দুগ্ধ খামারের গরুকে খইল,ভূট্টা ভাঙ্গা ও নিজ খেতে উৎপাদিত জার্মানি ঘাস খাওয়ান হয়। পশু ও প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর থেকে বিভিন্ন সময় প্রশিক্ষন নিয়ে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, সেই অভিজ্ঞতা থেকে গত ১০বছর ধরে সততা ও পরিশ্রমের মাধ্যামে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করে সফল হয়েছেন।
সিকদার ডেইরী দুগ্ধ খামারের মালিক ও কলাপাড়া উপজেলা ডেইরী এসোসিয়েশন সমিতির সাধারন সম্পাদক এস এম মুর্তল্লা সৌরভ সিকদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খামারিদের সুবিধার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দিয়ে আসছেন। অথচ আমি এখন পর্যন্ত সরকারি সহায়ত পেয়েছি মাত্র ১৫ হাজার টাকা। সিকদার ডেইরী দুগ্ধ খামার নিয়ে আমি অনেক বড় স্বপ্ন দেখছি। অনেক পরিশ্রম করে আমি আজ একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে পেরেছি। আমি চাই গোটা উপজেলার বেকার যুব সমাজ আমার মত সল্প পুজি নিয়ে দুগ্ধ খামার শুরু করেন,তা হলে তারা একটি সময় আমার মত লাভের মুখ দেখবে। সরকারী সহায়তা বা স্বল্প সুদের ঋন পেলে আমার খামারকে উপজেলায় আধুনিক মডেল হিসাবে দাঁড় করাতে পারি। এজন্য আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
কলাপাড়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান জানান, সিকদার ডেইরী দুগ্ধ খামার আমার পরিচিত খামার, আমি অনেক বার পরিদর্শন করেছি। কলাপাড়া পৌরশহরে বেশ কয়েকটি খামার রয়েছে তাদেরকে দেখে অনেক বেকার যুবক খামার করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমি তাদেরকে খামার করার উৎসাহ দিয়ে থাকি। বিশ্বব্যাংকের সহয়তায় ৫বছরের জন্য প্রাণী সম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্প চালু করেছে সরকার যার মাধ্যামে দুগ্ধ উৎপাদন ও চিকিংসা সেবা দিয়ে থাকি। নভেল করোনা ভাইরাসের কারনে কলাপাড়া উপজেলার সকল খামারিদের সরকারি প্রনোদনা দিয়েছি এবং তাদেরকে গ্রুপ ভিত্তিক প্রশিক্ষন দিব। সরকারি সহায়তা বা লোনের জন্য তফসিলভূক্ত ব্যাংকের মাধ্যমে আমার কাছে আসলে আমি যথাসম্ভব সহায়তা করবো।
এসকেআর/এমআর