দুমকি(পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীর দুমকিতে ভাঙ্গন কবলিত বাহেরচর গ্রাম পরিদর্শণে এসে নদী গর্ভে বিলীন হওয়া ভিটেমাটিহীন অসহায় পরিবারগুলোকে পুণ:র্বাসনের আশ^াস দিলেন জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন। সোমবার (২ আগষ্ট) দুপুর ২টায় পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের পায়রা নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়া বাহেরচর গ্রামের ভিটেমাটিহীন অসহায় পরিবারগুলোর দু:খ-দুর্দশা স্বচক্ষে দেখতে আসেন। এসময় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের শীষকর্মকর্র্তা, পাউবো’র নির্বাহি প্রকৌশলী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং স্থানীয়গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
তিনি (জেলা প্রশাসক) ভাংগনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর দুর্দশা পরিদর্শণকালে পানিউন্নয়ন বোর্ডকে দ্রুত ভাঙ্গন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের নির্দেশ দেন। একই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত ২৯পরিবারকে নগদ ২০হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তার চেক প্রদান করেন। পাশাপাশি স্থায়িভাবে তাদের পুণ:র্বাসনেরও ঘোষনা দেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি পায়রা নদীর ভাঙ্গনে উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের তিন পরিবারের ভিটেমাটি, বসত:ঘর, গাছপালাসহ আকস্মিক পায়রা নদীতে বিলীণ হয়ে যায়। ভাঙ্গণের মুখে অন্তত: ১০পরিবার তাদের একমাত্র সহায় সম্পদ- বসত:ঘর, মালামাল রক্ষায় অন্যত্র সড়িয়ে নেয়া হচ্ছে। বাহেরচরের ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় বইছে ভিটেমাটি হারানো অসহায় মানুষের আহাজারি ও আর্তনাদ। মাথাগোঁজার ঠাঁই হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো এখন প্রায় দিকশূণ্য। ভাংগন আতঙ্কে তারা বসত: ঘর ভেঙ্গে টিনের চালা, বেড়া ও গৃহস্থলী মালামাল সরিয়ে নিরাপদ দুরত্বের সরকারি রাস্তার পাশের্^ অবস্থান নিয়েছেন। কেউ কেউ বসত:ঘর ভেঙ্গে নৌকা-ট্রলার ভরে অজানার উদ্দেশ্যে চলে যাচ্ছেন।
জানাযায়, গত শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পায়রা নদীর আকস্মিক ভাঙ্গনে বাহেরচর গ্রামের মিলন মীরা ও মামুন মীরার দু’টি বসতভিটা কবরস্থান, গাছের বাগান সহ বিশাল এলাকা নদীগর্ভে তলিয়ে যায়। এসময় দু’পরিবারের ৮/১০বছরের চার শিশুসহ অন্তত: ১০/১২ব্যক্তি নদীতে পড়ে গেলেও স্থানীয়দের সহায়তায় প্রাণে বেঁচে যায়। একই দিন সন্ধ্যায় কুদ্দুস হাওলাদারের বসত:ঘরটিও নদী গর্ভে তলিয়ে গেলে পুরো এলাকায় ভাঙ্গনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভাংগনের মুখে পরিবারগুলো তাদের সম্বল বলতে বসত:ঘর ও মালামাল রক্ষায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে।
ভাঙ্গন কবলিত বাহেরচরের বাসিন্দা আবদুল গোলদার, বাহাদুর হাওলাদার ও কুদ্দুস গোলদার জানান, তিন দফা ঘর স্থানান্তরের পর এখন আর তাদের থাকার কোন জমি নেই। তাই বসত:ঘরের মালামাল ট্রলারে ভরে জলিশার এলাকায় এক আত্মীয়দের বাড়ির সামনে সরকারি রাস্তার পাশের্^ আশ্রয় নিতে যাচ্ছেন। একই ভাবে আ: জব্বর খান, বিউটি বেগম, ফয়সাল মিরা, দুলাল হাওলাদার, জলিল সিকদার, ফরিদা, ক্ষিতিষ ঘরামীসহ অন্তত: ১০পরিবার তাদের বসত:ঘর ভেঙ্গে নিরাপদ দুরত্বে স্থানান্তর শুরু করেছেন। বাহেরচরের পায়রা তীরবর্তি ভাংগণ কবলিত এলাকার সবার চোখে মুখে শুধুই আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এমআর