কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥
কলাপাড়ায় মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলামের (২২) ডান হাতের কব্জি কেটে আলাদা করে দেয়া ও কুপিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখমের ঘটনায় ১৭ জনের নামে মামলা হয়েছে। আরও ৭-৮জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। রাকিবুল ইসলামের মা রাহিমা বেগম বৃহস্পতিবার রাতে কলাপাড়া থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন। পুলিশ ইতোমধ্যে এজাহারভূক্ত আসামি নোমান হাওলাদার, খলিল হাওলাদার ও নয়ন বয়াতীকে গ্রেফতার করেছে। মামলায় ছাত্রলীগের মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি তরিকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। অপর আসামিরা কেউ একই সংগঠনের কর্মী কিংবা স্থানীয় বাসীন্দা। তিনি নৃশংস এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সাইফুল ইসলাম ওরফে রায়হানের ছোট ভাই। এদিকে সংগঠনের নীতি-আদর্শ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যলাপে জড়িত থাকার কারণে ২৯ জুলাই ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ তরিকুল ইসলামকে ছাত্রলীগ থেকে বৃস্পতিবার রাতে বহিস্কার করেছে। সংগঠনটির সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্রাচার্য এমন সিদ্ধান্তের কথা প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছেন।
বুধবার রাত সাড়ে ৯টার সময় উপজেলার মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের আজিমুদ্দিন গ্রামের জামে মসজিদ সংলগ্ন জলকপাট এলাকায় রাকিবুলের ডান হাতের কব্জি কেটে নেয় সন্ত্রাসীরা। এসব সন্ত্রাসীরা আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রাকিবুলের ওপর হামলার জন্য ওই স্পটে অপেক্ষা করছিল। সন্ত্রাসীরা রাকিবুলকে ধরে প্রথমে বেদম মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা রাকিবুলের ডান হাতটি টেনে নিয়ে একটি কাঠের ওপর রেখে রামদার কোপে ডান হাতের কব্জি বরাবর আলাদা করে দেয়। রাকিবুলের পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনার জন্য একই ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য সাইফুল ইসলাম ওরফে রায়হানকে দায়ী করেছেন।
রাকিবুল ইসলামকে বর্তমানে ঢাকার জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতাল ও পূনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু) ভর্তি করা হয়েছে। রাকিবুলের বাবা নাসির মাতুব্বর জানান, সন্ত্রাসীরা তার ছেলের ডান হাতের কব্জি বরাবর আলাদা করেই থামেনি, ডান হাতের কনুইয়ের ওপর দিয়ে কনুই ভেঙে দিয়েছে। ডান হাতের কনুই কুপিয়ে জরা জরা করেছে। বাম পাশের কানের ওপর দিয়ে রামদা দিয়ে যে কোপটি দিয়েছে, তাতে ৯ ইঞ্চি কেটে গেছে। পিঠে কোপানো হয়েছে। পিঠের কোপটি ফুসফুস পর্যন্ত গিয়েছে। তিনি আরও জানান, বুধবার রাত একটা পর্যন্ত রাকিবুলের জ্ঞান ছিল। এরপর থেকে আর আর জ্ঞান ফেরেনি। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে শাস্তি দাবি করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, রায়হান ও তাঁর ছোট ভাই তরিকুলের নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। এরা মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের তেগাছিয়া বাজার, আজিমদ্দিন, মেলাপাড়া, সাফাখালীতে ত্রাস করে আসছে। প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এরা মহড়া দেয়। সালিশ, সরকারি খাল দখল, মাছের ঘের দখল করাই হলো এ বাহিনীর কাজ। কলাপাড়া থানার ওসি খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছেন। বাকি আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এমইউএম/এমআর