চরফ্যাশন (ভোলা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
চরফ্যাশন উপজেলার ছয়টি দাখিল মাদ্রাসায় জালিয়াতির মাধ্যমে সহকারী গ্রন্থাগারিক/ক্যাটালগার, নিরাপত্তাকর্মী, আয়া নিয়োগ দিয়ে এমপিও ভুক্তির আবেদন করায় প্রতিষ্ঠান গুলোর এমপিও স্থগিত করাসহ ম্যানেজিং কমিটি ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ এবং সভাপতি ও সুপারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে মামলা দায়ের কেন করা হবেনা তার ব্যাখ্যাসহ কারণ জানতে চেয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতর। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বৃহম্পতিবার (২৯ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সূত্রে জানাযায়, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক জান্নাতুন নাহার সোমবার (২৬ জুলাই) স্বাক্ষরিত অধিদফতরের অফিস আদেশে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার উত্তর চরমানিকা লতিফিয়া দাখিল মাদ্রাসা, আমিনাবাদ হাকিমিয়া দাখিল মাদ্রাসা, দক্ষিণ আছলামপুর মোবারক আলী দাখিল মাদ্রাসা, আছলামপুর মোহাম্মদিয়া দাখিল মাদ্রাসা সুপার ও সভাপতিকে আগামী ৫আগস্টেও মধ্যে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা অধিদফতরে দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে ১৯ জুলাই স্বাক্ষরিত অধিদফতরের অফিস আদেশে চরফ্যাশন উপজেলার আসলামিয়া হামেলা খাতুন বালিকা দাখিল মাদ্রাসা, দক্ষিণ চরফ্যাশন সামসুলউলুম দাখিল মাদ্রাসার সুপার ও সভাপতিকে ২৯ জুলাইর মধ্যে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা অধিদফতরে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আলাদা আলাদা আদেশে জানা গেছে, ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার আসলামিয়া হামেলা খাতুন বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে মহাপরিচালকের প্রতিনিধি মনোনয়ন করে সহকারী গ্রন্থাগারিক/ক্যাটালগার ও নিরাপত্তাকর্মী পদে অবৈধ ভাবে নিয়োগ এবং বেআইনি ভাবে চলতি জুলাই মাসে তাদের এমপিওভুক্তির অনলাইন আবেদন সাবমিট করা হয়।
করোনার ছুটিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সময় ২০২০সালের ২৬ আগস্ট ৫সদস্য বিশিষ্ট নিয়োগ নির্বাচনি বোর্ডে গ্রন্থাগারিক ও নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করা হয়। ওই নির্বাচনি বোর্ড ডিজির প্রতিনিধি হিসেবে দেখানো হয় ঢাকার সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার আরবী বিভাগের প্রভাষক মো: রেজাউল করিমকে দেখানো হয়। অথচ মহাপরিচালকের মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি। তিনি নিয়োগ কাযর্ক্রমে অংশ নেননি এবং তাকে নিয়োগ কাযর্ক্রমে আহবান করা হয়নি।
একই ভাবে চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ ফ্যাশন সামসুলউলুম দাখিল মাদ্রাসা, উত্তর চরমানিকা লতিফিয়া দাখিল মাদ্রাসা, আমিনাবাদ হাকিমিয়া দাখিল মাদ্রাসা, দক্ষিণ আছলামপুর মোবারক আলী দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগ দেয়ার প্রমাণ মিলেছে।
আদেশ সূত্রে জানা গেছে, করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের মধ্যে জালিয়াতি করে নিয়োগ এবং অনলাইনে এমপিওভুক্তি আবেদন প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা সাবমিট করেন।
স্থানীয় সুত্রগুলো জানায়, শুধু এই ছয় প্রতিষ্ঠানই নয় একই ভাবে ভোলার চরফ্যাশনে প্রায় অর্ধ শতাধিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ সম্পন্ন করেছেন।
জাল- জালিয়াতির অভিযোগ প্রসংগে চরফ্যাশন উপজেলার আসলামিয়া হামেলা খাতুন বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোঃ মনিরুজ্জামান নিয়োগ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না দাবী করে বলেন-এনিয়োগ গায়েবী ভাবে হয়েছে। এবিষয়ে তদন্তপূর্বক দায়ীদের বিরুদ্ধ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দক্ষিণ ফ্যাশন সামসুলউলুম দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোঃ মিজানুর রহমান কিভাবে নিয়োগ হয়েছে তিনি জানেন না দাবী করে বলেন- এ বিয়য়ে ৫ সদস্যেও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উত্তর চরমানিকা লতিফিয়া দাখিল মাদ্রাসার মো: ছালেহ উদ্দিন বলেন- জালিয়াতি চক্র মাদ্রাসার আইডি হ্যাক করে এটি করেছে। এ বিষয়ে থানায় জিডি করা হবে।
চরফ্যাশন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মহিউদ্দিন জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সভাপতিকে জবাব দাখিল ও এমপিও স্থগিত হয়েছে এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন- এ নিয়োগগুলো আমার যোগদানের আগে হয়েছে। এখানে আরো অনেক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ রয়েছে। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো জবাব দাখিল করুক। জবাব সস্তোষজনক না হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এএইচ/এমআর