চরফ্যাশন (ভোলা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
চরফ্যাশন উপজেলার দু’সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দিয়েছে দুলারহাট থানার অন্তর্ভূক্ত আহাম্মদপুর ইউনিয়নের ফরিদাবাদ গ্রামের সন্ত্রাসী ও কিশোর গ্যাং বাহিনী। অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে সাংবাদিক পরিবার। বাসা থেকে বের হতে পারছেনা দুই সাংবাদিকসহ তাদের পরিবার। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে সাংবাদিক পরিবার। শনিবার সন্ধ্যায় দুলারহাট থানার সাংবাদিক নোমান চৌধুরী বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় দৈনিক আমার সংবাদ’র চরফ্যাশন উপজেলা প্রতিনিধি এম, নোমান চৌধুরী ও জাতীয় দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিন’র চরফ্যাশন উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ সিরাজুল ইসলাম দীর্ঘদিন গণমাধ্যমে কাজ করে আসছেন। তাদেও বাবার বাগানের জমি অংশটুকু দীর্ঘ ৬০ বছর পর্যন্ত ভোগ করে আসছে। গত ২০শে জুলাই স্থানীয় সন্ত্রাসী গ্রুপের মতিন মাঝি, হানিফের নেতৃত্বে কিশোর গ্যাং বাহিনী পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে তাদের বাবার বাগানের দুটি অংশ দখল করার উদ্দেশ্য জালের বেড়া দেয়।
ওই সময় সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম বাঁধা দিলে অভিযুক্ত হান্নান অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে একপর্যায়ে হান্নান তাকে খুন করার উদ্দেশ্য শাবল নিয়ে তেড়ে আসে। তার জীবন বাঁচানোর জন্য অন্য জায়গায় আশ্রয় নেয়। তাদের বাগানের অংশের নারিকেল গাছ থেকে নারিকেল পারার সময় সাংবাদিক নোমান চৌধুরী বাঁধার একটি ছবি তুলতে গেলে তাঁকে অকথ্য ভাষায় গাল-মন্দ করতে থাকে।
সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম তার ভাইকে গালমন্দ করার কারণ জিজ্ঞেস করলে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ওৎ পেতে থাকা কিশোর গ্যাং বাহিনী দা-চেনি, শাবল নিয়ে দুই সাংবাদিকসহ তাদের পরিবারকে খুন করার উদ্দেশ্য তেড়ে আসে। দুই সাংবাদিক ও তাদের পরিবার প্রাণের ভয়ে বাসায় আশ্রয় নেয়। ওই সময় তারা নাম ধরে দুই সাংবাদিককে বাহিরে বের হতে বলে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। তাদের পরিবারকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।
সাংবাদিকের বাবা মা ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ থেকে রেহাই পাইনি। রাত ৮ টার সময় সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম ও তার ভাই ও বাবা মসজিদে নামাজ পড়াকালীন সময় তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখে। মসজিদ থেকে বের হলে খুন করার হুমকি দেয়। তাদের ভাতিজা সিয়াম দাদা বাড়ি থেকে তার বাড়িতে যাওয়ার সময় মসজিদ সংলগ্নস্থানে পৌছলে তার স্মার্ট ফোনসহ ৭২০ টাকা চোরা ফারুক কেড়ে নেয়। এ সময় মসজিদের মুসল্লীদের সহায়তায় তারা অন্য বাড়িতে আশ্রয় নেয়। স্থানীয় মুসল্লী ও বর্তমান ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম প্রাক্তন ইউপি সদস্য রুহুল আমীন রনির হস্তক্ষেপে মোবাইল ফোনটি ফেরত পেলেও ৭২০ টাকা ফেরত দেয় নি।
তাদের বাড়িতে গিয়ে তাদের পরিবারকে হত্যার হুমকি দেয়। ওই সময় সাংবাদিকের বাবাকে সন্ত্রাসী হানিফ বলে, নুরুল ইসলাম ঘর থেকে বের হয়ে আয়। তোরে ও তোর ছেলেদেরকে খুন করে লাশ খুঁজে পাইবি না। তোদের কে জীবনের তরে শেষ করে ফেলবো। সে তাদের ঘরে ইট মারতে থাকে। লাথি মেরে বালতি ভেঙ্গে ফেলে ।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন, মতিন মাঝি(৫০), মোঃ হানিফ(৪৫), মোঃ এমরান(২২), মোঃ ফারুক(৪৫), মোঃ হিরন(২৫), মোঃ হান্নান(২৩), মোঃ শরীফ(২০), মোঃ মিছির(৪০), মোঃ শামিম(১৯), মোঃ ফরহাদ(২০) ও আল-আমিন(২১)।
দুলারহাট থানায় ২৪জুলাই ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সাংবাদিক এম, নোমান চৌধুরী বাদী হয়ে অভিযোগ আকারে ওসি মুরাদ হোসেন এর কাছে অভিযোগটি দাখিল করলেও রহস্যজনক কারণে তিনি সাধারণ ডাইরিভূক্ত(জিডি) হিসেবে গ্রহণ করেছেন। যার নং-৮০৫।
হিরন, হান্নান, শামিম, ফরহাদ ও আল- আমিন এরা কিশোর গ্যাং এর সাথে জড়িত। এরা সংঘবদ্ধ হয়ে কিশোর গ্যাং গড়ে তুলছে। পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে অপরাধীরা কোনো ঘটনা ঘটালে কিশোর গ্যাং বাদী পক্ষের ওপর হামলা চালায়। মতিন, হানিফ, ফারুক ও মিছির এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছে। মতিন-হানিফের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। এরা এলাকায় বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত। এরা এলাকায় বিচার শালিশ অমান্য করে আসছে। শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় দুলারহাট থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক এস আই লেলিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
দুলারহাট থানার ওসি মুরাদ হোসেন বলেন, আমি বিষয়টি ডায়রীভূক্ত করেছি। আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এএইচ/এমআর