জাহিদ রিপন, সাগরকন্যা কুয়াকাটা অফিস॥
বেলাভ’মি জুড়ে নয়নাভিরাম সবুজ সাগরলতা আর সাদা ঝিনুকের ছড়াছড়ি। বাঁধাহীন বিচরনে লাল কাঁকড়ার দল সৈকতের বালিয়াড়িতে তৈরি করছে দৃস্টিনন্দন সব আল্পনা। জন্মেছে নতুন নতুন ঝাউ গাছ। সৈকতের অগভীর জলে র্নিবিঘেœ মাছ শিকারে ব্যস্ত গাঙচিলের দল। মাঝেমধ্যেই উপক’লের কাছাকাছি দেখা মিলছে ডলফিনের। সাগরে মাছ শিকার বন্ধ থাকায় সৈতক সংলগ্ন লেক এবং খালেও মিলছে মাছের প্রাচুর্যতা।
দ্বিতীয় দফার টানা লকডাউনে যানবাহনসহ পর্যটক এবং জেলেদের অনিয়ন্ত্রিত বিচরণ না থাকায় এমন দৃশ্য এখন সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের বেলাভ’মি পর্যটন নগরী কুয়াকাটার দীর্ঘ ১৮কিলোমিটার সৈকতের। যেন হঠাৎ করেই কুয়াকাটা সৈকতের প্রাকৃতিক জীব-বৈচিত্রসহ প্রানীক’ল খুঁজে পেয়েছে নিজস্ব সত্ত্বা। প্রায় দুই দশক পর সৈকতের এমন নয়নাভিরাম রূপ মুগ্ধ করেছে স্থানীয়সহ পর্যটন ব্যবসায়ীদের।
স্থানীয়সহ পর্যটন ব্যবসায়ীরা সাগরকন্যাকে জানান, সৈকত প্রায়শই ভেসে আসে মরা ডলফিন, কচ্ছপ, তিমি মাছ। গভীর সমুদ্রগামী জেলেদের জালে এসব প্রানী আহত হয়ে মৃতাবস্থায় ভেসে আসছে সাগর তীরে। মানুষের অবাধ বিচরণ আর উত্যাক্তের কারণে সী-বিচে গত দুই দশক ধরে দেখা নেই গাঙচিলের।
সৈকত সংলগ্ন ইকোপার্ক, ঝাউবাগান, লেম্বুর চর, গংঙ্গামতির সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে বন্য শুকুর, কাঠ বিড়ালী, শিয়ালসহ নানা প্রজাতির পাখি। মোটরসাইকেলের অবাধ বিচরণে পিস্ট হয়ে মারা পড়ছে লাল কাঁকড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির কাঁকড়া। এদের অবাধ বিচরণও হচ্ছে বাঁধাগ্রস্থ। বাধ্য হচ্ছে এরা আবাসস্থল পরিবর্তনের।
ট্যুরিজম ব্যবসায়ী আবুল হোসেন রাজু, অন্ধারমানিক ট্যুরিজমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাচ্চু সাগরকন্যাকে বলেন, পর্যটকসহ জেলেদের মাঝে সচেতনতা তৈরি করে প্রায় দুই দশক পরে ফিরে আসা সৈকতের প্রাকৃতিকে সংরক্ষন করা গেলে আদাল বৈশিষ্ঠ্য পাবে কুয়াকাটার পর্যটন শিল্প।
কুয়াকাটা ট্যুরস অপারেটর এসোশিয়েসনের (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার সাগরকন্যাকে বলেন, সৈকতের পানীক’লসহ প্রকৃতিকে রক্ষায় জনসচেতনতা ছাড়াও সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
পটুয়াখালী ইকোফিস প্রকল্পের জীব-বৈচিত্র্য গবেষক সাগরিকা স্মৃতি সাগরকন্যাকে বলেন, স্বরূপে ফিরে আসা কুয়াকাটা সৈকতের জীব বৈচিত্রসহ প্রানীক’লের স্বাভাবিক আচরণ, বিচরণ রক্ষায় সবাইকে সচেতন হতে হবে। প্রকৃতিকে তার মত করে বেড়ে উঠতে দেয়াসহ এর সংরক্ষন করতে পারলে, প্রকৃতিই আমাদের রক্ষা করবে।
পটুয়াখালীর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম সাগরকন্যাকে বলেন, ঝাউগাছসহ লাল কাঁকড়ার অভায়াশ্রম সংরক্ষনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
জেআর/এমআর