আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
সরকারী নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আমতলী উপজেলার গ্রামাঞ্চলের সাপ্তাহিক হাট বসছে। হাট গুলোতে মাস্ক ছাড়াই হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হয়ে দেদারসে নিত্যপন্য দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় করছে। এ বাজার নিয়ন্ত্রনে উপজেলা প্রশাসনের নজরদারী নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। স্থানীয়রা আরো অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা প্রশাসনকে জানালেও তারা গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এতে অনায়সেই স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই হাটে হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হয়ে ক্রয়-বিক্রয় করছে। বরগুনা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শুভ্রা দাশ বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সাপ্তাহিক হাট বসতে পারবে। কিন্তু চুনাখালী হাটে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের মধ্যে ৯৫ ভাগ মানুষের মুখে মাস্ক ছিল না। গাদাগাদি করে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই ক্রয়-বিক্রয় করেছেন।
জানাগেছে, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস থেকে মানুষকে রক্ষায় গত বৃহস্পতিবার নিধি নিষেধ ঘোষনা করেছে সরকার । ওই বিধি নিষেধ উপজেলা শহরের প্রভাব পড়লেও গ্রামাঞ্চলে এর কোন প্রভাব নেই। গ্রামাঞ্চলের মানুষ অনায়াসে চলাফেরা করছে। সরকারী নিষেধাজ্ঞা মানাতে গ্রামাঞ্চলে উপজেলা প্রশাসনের নজরদাবী নেই। প্রশাসনের নজরদারী না থাকায় গ্রামাঞ্চলের সাপ্তাহিক হাটগুলো দেদারসে বসছে। ওই বাজার গুলোতে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে মাস্ক ছাড়াই হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হয়ে নিত্যপন্য দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় করছে। উপজেলায় ৩৫ টি সাপ্তাহিক হাট রয়েছে। ওই হাটগুলোতে সপ্তাহের ৭ দিন হাট বসে। এতে গ্রামাঞ্চলে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি রয়েছে। গ্রামাঞ্চলে হাটগুলোতে প্রশাসনের নজরদাবী এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন আমতলী পৌর নাগরিক কমিটির সভাপতি সহকারী অধ্যাপক আবুল হোসেন বিশ্বাস ।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, শুক্রবার গাজীপুর বন্দর,কলাগাছিয়া, তালুকদার বাজার, হলদিয়া, আঠারোগাছিয়া এবং শনিবার চুনাখালী এবং আড়পাঙ্গাশিয়ায় সাপ্তাহিক হাট বসেছে। এ হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হয়েছে। শনিবার চুনাখালী হাটে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের মধ্যে ৯৫ ভাগ মানুষের মুখে মাস্ক ছিল না। গাদাগাদি করে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই ক্রয়-বিক্রয় করছেন।
শনিবার চুনাখালী হাট ঘুরে দেখাগেছে, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে মাস্ক ছাড়াই হাজার হাজার লোক জমায়েত হয়েছেন। তারা দেদারসে ক্রয়-বিক্রয় করছেন। উপজেলা প্রশাসন ও হাট বাজার ইজারাদারদের কোন তদারকি নেই। খবর পেয়ে ওইদিন দুপুরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোঃ নাজমুল ইসলাম চুনাখালী হাট পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু মাস্ক ছাড়া মানুষ ক্রয়-বিক্রয় করেছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ওই হাটে কিছু মানুষের মাঝে তিনি মাস্ক বিতরন করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, সকালে উপজেলা প্রশাসনকে চুনাখালী বাজারের লোক জমায়েতের বিষয়টি জানিয়েছে কিন্তু কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
কলাগাছিয়া বাজারের শাহ আলম, আনোয়ার ও স্বপন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ও মাস্ক ছাড়া গত শুক্রবার কলাগাছিয়া সাপ্তাহিক হাটে অনায়াসেই লোকজন এসে ক্রয়-বিক্রয় করেছেন। প্রশাসনকে জানিয়েছি কিন্তু কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
চুনাখালী হাটে আসা ওহাব গাজী ও বারেক বলেন, মোরাতো কিছু বুঝি না। সদায় লাগবে হেইয়্যার লইগ্যা আডে আইছি।
চুনাখালী হাট ইজার পরিচালক মোঃ সুলতান আহমেদ মাস্টার বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাট বসেছে।
আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোঃ নাজমুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সাপ্তাহিক হাট বসানো যাবে। আমি চুনাখালী হাট পরিদর্শন করেছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করতে বলেছি। তিনি আরো বলেন, ওই হাটে কিছু মানুষের মাঝে মাস্ক বিতরন করেছি।
বরগুনা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শুভ্রা দাশ বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিত্য পন্যের সাপ্তাহিক হাট বসতে পারবে। তবে গরু ও ছাগলের হাট বসতে পারবে না। তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে হাট বসালে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর