মঠবাড়িয়ায় অধ্যক্ষ নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

প্রথম পাতা » পিরোজপুর » মঠবাড়িয়ায় অধ্যক্ষ নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ
রবিবার ● ১৩ জুন ২০২১


মঠবাড়িয়ায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

পিরোজপুর সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

পিরোজপুরের  মঠবাড়ীয়ায় জালিয়াতির মাধ্যমে সম্পূর্ন অবৈধভাবে কামিল মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ নিয়োগের অপতৎপরতা চালাচ্ছে একটি সঙ্গবদ্ধ চক্র। এ অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকাবাসী  ও অভিভাবকরা লিখিত অভিযোগ করায় শনিবার(১২ জুনের) অনুষ্ঠিতব্য নিয়োগ পরিক্ষা বাতিল করেছেন কর্তৃপক্ষ ।

এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মিরুখালী ইউনিয়নের বাদুরা গ্রামে অবস্থিত বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মহিলা কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের পদ শুন্য হয় বর্তমান বছরের মার্চ মাসে। অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আবুল কালাম শরীফ তাহার শূণ্য পদে নিজ ছেলে (ঐ মাদ্রাসার বর্তমান আরবি প্রভাষক) মোঃ নজরুল ইসলামকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের জন্য জোরতৎপরতা চালাচ্ছে।আর এ কাজে তাকে সহযোগিতা করছে মাদ্রাসার সভাপতি মো. আফজাল মিয়া, ভারপ্রাপ্ত অধ্যাক্ষ মাও. মো. আবু জাফর ছালেহ, ডিজির প্রতিনিধি মো.শহীদ লতিফ (পরিদর্শক মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর,বরিশাল বিভাগ) এবং ভিসির প্রতিনিধি প্রফেসর ডা. মোঃ ইলিয়াস সিদ্দিকি, ( বিভাগীয় প্রধান ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়)।
জনবল কাঠামো ২৩শে নভেম্বর ২০২০ এর আলোকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পাইতে হলে সহকারী অধ্যাপক পদে ০৩ বছরের এবং প্রভাষক পদে (আরবি বিষয়ে) ১২ বছরের মোট ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকিতে হইবে। কিন্তু সাবেক অধ্যক্ষ পুত্র (ঐ মাদ্রাসার বর্তমান আরবি প্রভাষক) মোঃ নজরুল ইসলাম ২০০৭ সালে কামিল (হাদিস বিষয়ে) পাশ করে সে অনুযায়ী এখন পর্যন্ত পাশ করার সময় হয় ১৩ বছর ০৫ মাস।
তাকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দিলে জনবল কাঠামোর (১৫ বছরের অভিজ্ঞতা এবং আরবি বিষয়) এই ২টি দ্বারা স্পষ্ট লঙ্ঘিত হবে। লোক মুখে শোনা যায় প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে এ অনিয়মকে নিয়মে পরিনত করার চেষ্টা চলছে।
এদিকে যে নজরুল ইসলামকে মঠবাড়িয়ার বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মহিলা কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের পদে নিয়োগের পায়তারা চলছে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও রয়েছে নানান প্রশ্ন। সে দাখিল ১৯৯৯,আলিম ২০০১,ফাযিল ২০০৩ এবং কামিল ২০০৭ সনে নিয়মিত ভাবে পরীক্ষা দিয়ে সনদ অর্জন করে। বাবা আবুল কালাম শরীফ অধ্যক্ষ থাকার সুবাদে পুত্র নজরুল ইসলাম একই প্রতিষ্ঠানে সহকারী মৌলভী পদে ২০০৪ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত  কর্মরত থেকে বেতনভাতা ভোগ করে অনিয়মের আশ্রায় নিয়ে ২০০৭ সনে নিয়মিত ভাবে কামিল পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করে এটা একটা বড় রকমের অনিয়ম।
তাছাড়া যে কাউকে ২০০৫ সনের পরে প্রভাষক পদে নিয়োগ পাইতে হলে তাকে এনটিআরসিএ সনদধারী হইতে হবে, কিন্তু অধ্যক্ষ পুত্র নজরুল ইসলাম ২০১০ সনে প্রভাষক পদে নিয়োগ দিলেও তিনি ২০১২ সনে এনটিআরসিএ সনদ প্রাপ্ত হন। এবং একই প্রতিষ্ঠানে সহকারী মৌলভী ও প্রভাষক পদে ২০০৪ থেকে ২০১২ পর্যন্ত কর্মরত থাকিয়া বেতনভাতা ভোগকরিয়া অধ্যক্ষ পদে চাকুরীর আবেদনে ১৬ বছরের অধিক প্রভাষক পদের অভিজ্ঞতা দাখিল করে। এ বিষয়ে মাদ্রাসার বিল স্টেটমেন্ট, এমপিও, বিল রেজিষ্টার এবং নিয়োগ রেজিষ্টার অনুসদ্ধানে জালিয়াতির সকল তথ্য বেরিয়ে আসবে।

অভিযুক্ত নজরুল ইসলামর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি কোন সদুত্তর না দিয়ে পরে কথা বলবেন বলে ফোন রেখে দেন।

এ বিষয়ে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আফজাল মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাছ থেকে কেউ কোন প্রকারের অনিয়মের সুযোগ পাবেনা।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.রফিকুল ইসলাম ভুঁইয়া  বলেন, ওই মাদ্রাসার নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে বলে শুনেছি। আর মাদ্রাসাটির নিয়োগ মাদ্রাসা অধিদপ্তরের অধিনে হয়ে থাকে। তাই কি কারনে নিয়োগ পরিক্ষা বন্ধ হয়েছে বলতে পারছিনা।


আরএইচএম/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৭:৪৫:২৩ ● ৩১৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ