আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরগুনার আমতলী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আগামী ২১ জুন। এ নির্বাচনে গুলিশাখালী ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মনির কর্মী সমর্থকরা মোটর সাইকেল অস্ত্রের মহড়া দিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজস্ব কায়েম করছে। তারা পথে পথে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের মারধর ও পেষ্টার-ব্যানার ছিড়ে ফেলছে এবং মাইক ভাংচুর করেছে বলে অভিযোগ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আসাদুর রহমান আসাদ মৃধা। নৌকার কর্মী সমর্থকদের হামলায় ৭ জন আহত হয়েছে। নৌকার প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের অস্ত্রের মহড়ায় এলাকার সাধারণ মানুষ ও ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। দ্রুত পুলিশ প্রশাসনের কাছে এ ঘটনায় শাস্তি দাবী করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আসাদ মৃধা। ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার (১১ জুন) সন্ধ্যায় উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের গুলিশাখালী বাজার ও গোজখালী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায়।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আগামী ২১ জুন। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে গুলিশাখালী ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মনির শতাধিক কর্মী-সমর্থকরা প্রকাশ্যে মোটর সাইকেলে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আসাদুর রহমান আসাদ মৃধার কর্মী-সমর্থক, ভোটার ও সাধারণ মানুষের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তারা গুলিশাখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের মারধর করছে। পোষ্টার-ব্যানার ছিড়ে ফেলছে এবং মাইক ভাংচুর করছে বলে অভিযোগ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আসাদ মৃধা। শুক্রবার সন্ধ্যায় নৌকা প্রার্থী মোঃ মনিরুল ইসলাম মনিরের নেতৃত্বে শতাধিক কর্মী সমর্থকরা মোটর সাইকেলে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আসাদ মৃধার কর্মী সমর্থকদের মারধর করছে। তারা স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী রাসেল পঞ্চায়েত ও মনু মিয়াকে কুপিয়ে এবং মিজান দফাদার, মহিবুল, জাহিদ, আমিনুল মাদবর ও নারী কর্মী শিল্পীকে পিটিয়ে আহত করেছে। আহত মোঃ মনু মিয়াকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং রাসেল পঞ্চায়েতকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অপর আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। তিনি আরো অভিযোগ করেন, নৌকার কর্মী সমর্থকরা প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দিলেও পুলিশ দেখে না দেখার ভার করছে। এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সমর্থক ও ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও মারধরের ঘটনায় ভোটারদের মাঝে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে সঙ্কা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আসাদ মৃধা শুক্রবার রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, নৌকা প্রার্থীর শতাধিক কর্মী সমর্থকরা প্রকাশ্যে মোটর সাইকেলে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আসাদ মৃধার কর্মী সমর্থকদের ভয়ভীতি ও মারধর করেছে। তারা আরো বলেন, পুলিশের সামনে অস্ত্রের মহড়া দিলেও পুলিশ তাদের কিছুই বলছে না। এতে সাধারণ ভোটার ও কর্মী সমর্থকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। দ্রুত এদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী করছেন তারা।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী আহত রাসেল পঞ্চায়েত অভিযোগ করে বলেন, গুলিশাখালী বাজারে নৌকার প্রার্থী মনিরুল ইসলাম মনির নেতৃত্বে ২০-২৫ জন সন্ত্রাসী তাকে কুপিয়ে আহত করেছে। এ ঘটনার জড়িতদের শাস্তির দাবী করছেন তিনি।
অপর গুরুতর আহত মনু মিয়া অভিযোগ করে বলেন, গোজখালী বাজারে নৌকার কর্মী মোঃ নাঈম ইসলাম ২০ -২৫ জন সন্ত্রাসী মিলে বাজারে অস্ত্রের মহড়া দেয়। এ সময় বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। তাৎক্ষনিক ওই বাজারের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় আমাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। আমি এ ঘটনার শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে আওয়ামীলীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মনির সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার কর্মী সমর্থকরা শান্তভাবে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছে। কাউকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে না।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মোঃ ইমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, আহত রাসেলকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, নির্বাচনে কোন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চলতে দেয়া হবে না। আইন শৃখংলা রক্ষায় সকল পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর
