আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরগুনার আমতলী উপজেলার কড়াইবুনিয়া গ্রামের শাহ জাহান কবিরাজ নামের এক শারীরিক প্রতিবন্ধিকে কুপিয়ে হত্যা শেষে পুকুরে ফেলে রেখেছে সন্ত্রাসীরা। শনিবার (৫ জুন) পুলিশ নিহত শাহ জাহানের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তার সৎ ভাই স্বপন কবিরাজ, আলানুর কবিরাজ, আল আমিন কবিরাজ ও মজিদ কবিরাজকে থানায় নিয়ে আসে। ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার রাতে।
জানাগেছে, উপজেলার কড়াইবুনিয়া গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধি শাহ-জাহার কবিরাজ ঢাকায় ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করে। গত দুই মাস পুর্বে তিনি ঢাকা থেকে বাড়ীতে আসনে। জমি জমা নিয়ে সৎ ভাই স্বপন কবিরাজ, আলানুর কবিরাজ, আল আমিন কবিরাজ ও মজিদ কবিরাজের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ ও মামলা চলে আসছে। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে কয়েকবার সালিস বৈঠক হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কল্যাণপুর বাজারে বসে সৎ ভাই মজিদ কবিরাজের ছেলে নুর হোসেন এবং তার ভগ্নিপতি নাশির হাওলাদারের সাথে জমি-জমা নিয়ে ঝগড়া হয়। এক পর্যায় তারা প্রতিবন্ধি শাহ জাহানকে মারধর করে। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। গত দুইদিন তাকে পরিবারের লোকজন খুঁজে পায়নি। তাকে না পেয়ে স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে শাহ-জাহানের মরদেহ পাশর্^বর্তী ইদ্রিস মোল্লার পুকুরে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পায় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে আমতলী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরন করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত শাহ জাহান কবিরাজের সৎ ভাই স্বপন কবিরাজ, আলানুর কবিরাজ, আল আমিন কবিরাজ ও মজিদ কবিরাজকে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, নিহত শাহ জাহান কবিরাজের মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহৃ রয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে সন্ত্রাসীরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে পুকুরে ফেলে রেখেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, শাহ জাহান কবিরাজ শারীরিক প্রতিবন্ধি। ঢাকায় ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। তারা আরো বলেন, তার সাথে সৎ ভাইদের জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ এবং মামলা চলে আসছে। এ নিয়ে কয়েক দফায় শালিস বৈঠক হয়েছে কিন্তু সৎ ভাইরা সালিস বৈঠকের সিদ্ধান্ত মানেনি।
নিহত শাহ জাহান কবিরাজের ছেলে মাইনুদ্দিন কবিরাজ কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, জমিজমা নিয়ে সৎ ভাইদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বাবার বিরোধ ও মামলা চলে আসছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কল্যাণপুর বাজারে বসে সৎ ভাই মজিদ কবিরাজের ছেলে নুর হোসেন কবিরাজ ও তার ভগ্নিপতি নাশির হাওলাদার বাবাকে মারধর করেছে। এরপর থেকে বাবা নিখোঁজ ছিল। তিনি আরো বলেন, বাবাকে তার সৎ ভাইরা পরিকল্পিতভাবে কুপিয়ে হত্যা করে পুকুরে ফেলে রেখেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) রনজিত কুমার সরকার বলেন, নিহত শাহ জাহান কবিরাজের মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহৃ রয়েছে। তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়লা তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় নিহতের চার সৎ ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।
এমএইচকে/এমআর