আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে আমতলী ছাড়ল এমভি সুন্দরবন-৭ লঞ্চ। শনিবার বিকেল চারটায় লঞ্চটি ঢাকার উদ্দেশ্যে আমতলী ছেড়ে যায়। ধারন ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই এবং অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ায় যাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। দ্রুত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকার নির্দেশনা অনুসারে যাত্রী নেয়ার দাবী জানিয়েছেন সচেতন মানুষ।
জানাগেছে, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাব থেকে মানুষকে রক্ষায় গত ১৪ এপ্রিল নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয় সরকার। এক মাস ১০ দিন চলাচলা বন্ধ ছিল। গত ২৪ এপিল নৌপথে লঞ্চ চলাচল শুরু করে। সরকারী নির্দেশনায় উল্লেখ আছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধারন ক্ষমতার চেয়ে অর্ধেক যাত্রী বহন এবং যাত্রীদের ৬০% অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হবে। কিন্তু লঞ্চ কর্তৃপক্ষ সরকারী নির্দেশনা উপেক্ষা করে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই ধারন ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী এবং অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন যাত্রীরা। শনিবার বিকেল চারটায় আমতলী লঞ্চঘাট থেকে এমভি সুন্দরবন-৭ লঞ্চটি ছেড়ে গেছে। ওই লঞ্চে যাত্রী ধারন ক্ষমতা ৭০৯ জন। কিন্তু লঞ্চ কর্তৃপক্ষ ধারন ক্ষমতার চেয়ে দ্বিগুন যাত্রী বোঝাই করে আমতলী ঘাট ছেড়ে গেছে। এরপরে পুরাকাটা, আয়লা পাতাকাটা, ভয়াং, কাকরাবুনিয়া, পায়রাকুঞ্জু পাঁচটি ঘাট রয়েছে। ওই সকল ঘাট থেকে অন্তত আরো এক হাজার যাত্রী লঞ্চে উঠেছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। ধারন ক্ষমতার চেয়ে চারগুন যাত্রী ওই লঞ্চটি ঢাকায় পৌছবে বলে জানান লঞ্চের যাত্রী মোঃ রাকিবুল ইসলাম, জামাল ও সাজিদ। এতে স্বাস্থ্যবিধি পুরাপুরো বিঘিœত হওয়ায় যাত্রীদের মাঝে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক বিরাজ করছে।
শনিবার (২৯ মে) আমতলী লঞ্চঘাট ঘুরে দেখাগেছে, এমভি সুন্দরবন- ৭ লঞ্চের প্রথম ও দ্বিতীয় তলার ডেক বোঝাই যাত্রীতে। তিল পরিমান ফাঁকা নেই। স্বাস্থ্যবিধির কোন বালাই নেই। লঞ্চ কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের ঠাসাঠাসি দেখেও না দেখার ভান করছে। যাত্রীদের মাঝেও নেই কোন সামাজিক দ্রুত্ব ও স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং মাস্কও ব্যবহার করেনি। মানুষ ডেকে জায়গা না পেয়ে লঞ্চের ছাদে ও সম্মুখ্যভাগে অবস্থান করেছে। অনেক যাত্রীকে দাড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
তালতলী উপজেলার গাবতলী গ্রামের মোঃ আউয়াল হাওলাদার বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই এমভি সুন্দরবন-৭ লঞ্চে ঢাকায় যাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, অতিরিক্ত যাত্রীতো আছেই তারপর ভাড়াও নিচ্ছে জনপ্রতি ৫০০ টাকা।
যাত্রী শিরিন আক্তার বলেন, লঞ্চেযাত্রী বোঝাই তারপর ভাড়াও বেশী নিচ্ছে।
লঞ্চের যাত্রী আনোয়ার হোসেন ও মহিবুল্লাহ বলেন, স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় যাত্রী ধারনের কথা লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে বলেছিলাম। তারা উল্টো আমাদের ধমক দিয়ে বলে এভাবে গেলে যান, না হয় লঞ্চ থেকে নেমে যান।
এমভি সুন্দরবন-৭ লঞ্চের সুপার ভাইজার মোঃ মাঈনুল ইসলাম বেশী যাত্রী নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, সরকার নির্দেশনা অনুসারে লঞ্চে যাত্রী বহন করছি।
আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী নিতে পারবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই লঞ্চে যাত্রী বহন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, এর ব্যতিক্রম হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, সরকারী নির্দেশনা অনুসারে লঞ্চ চালাতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
এমএইচকে/এমআর