আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পায়রা নদীতে বিপদসীমার উপরে ৬২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমতলী নি¤œাঞ্চল ও বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে। পানি বন্ধি হয়ে পরেছে উপজেলার নি¤œাঞ্চলসহ বিভিন্ন গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ। এতে বিপাকে পরেছে নি¤œ আয়ের মানুষ। তাদের মাঝে বিশুদ্ধ পানির সংঙ্কট দেখা গিয়েছে। তিন ঘন্টা পায়রা নদীতে আমতলী-পুরাকাটা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। গুলিশাখালী ইউনিয়নের পাঁচটি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধ ভেঙ্গে পানিতে ঘর বাড়ি তলিয়ে গেছে। ওই ইউনিয়নের অন্তত ১৫ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পরেছে বলে জানান চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম।
আমতলী পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানাগেছে, ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পায়রা নদীতে বিপদসীমার উপরে ৬২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকুলীয় এলাকার নি¤œাঞ্চল এবং বিভিন্ন এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পরেছে। বাড়ী-ঘর, মাঠ-ঘাট ও পুকুর পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে বিপাকে পরেছে নি¤œ আয়ের মানুষ। তাদের মাঝে বিশুদ্ধ পানির সংঙ্কট দেখা দিয়েছে। পানিতে আমতলী-পুরাকাটা পায়রা নদীর ফেরির পল্টুন তলিয়ে যাওয়া সকাল সাড়ে ৮ টা থেকে বেলা সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত ৩ ঘন্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এতে দুর্ভোগে পরেছে অন্তত অর্ধ শতাধিক যানবাহন ও কয়েকশত যাত্রী। এদিকে গুলিশাখালী ইউনিয়নের ষোল হাওলাদার স্লুইজ, কলাগাছিয়া বাজার, আব্দুল গনি দাখিল মাদ্রাসা, হরিদ্রাবাড়িয়ার দরিয়া কান্দা ও গুলিশাখালী বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধ ভেঙ্গে ভিতরে পানি প্রবেশ করে মাঠ-ঘাট ও পুকুর তলিয়ে গেছে। অপর দিকে আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের বানিজ্যিক বন্দর গাজীপুরের পাকা রাস্তা উপচে বন্দর পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ওই বন্দরের অন্তত ৫ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পরেছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে মালামাল নষ্ট গয়ে গেছে।
বুধবার আমতলী উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ এলাকার বালিয়াতলী, ঘোপখালী, পশুরবুনিয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া, লোচা, আমতলী পৌরসভার ফেরিঘাট, পুরাতন বাজার, শ্মশাণঘাট, পানি উন্নয়ন বোর্ড, আঙ্গুলকাটা, গুলিশাখালী, গুলিশাখালীর জেলে পল্লীর নি¤œাঞ্চল এবং আমগাছিয়া, গাজীপুর বন্দর, কুকুয়া, আঠারোগাছিয়া, গুলিশাখালী, কলাগাছিয়া, সোনাউডা, শাখারিয়া, চাওড়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখাগেছে পানিতে ঘর-বাড়ী, মাঠ-ঘাট তলিয়ে গেছে। চারি দিকে পানি থই থই করছে।
কুকুয়া ইউনিয়নের আমড়াগাছিয়া গ্রামের ট্রলার চালক আব্দুল খালেক বলেন, ঘুর্ণিঝড় সিডরের পরে নদীতে এতো পানি বৃদ্ধি আমি দেখিনি। পানিতে ঘর-বাড়ী ও মাঠ-ঘাট তলিয়ে গেছে। সর্বক্ষনে পানিতে থই থই করছে।
আমতলী পৌর শহরের ব্যবসায়ী পরিতোষ কর্মকার বলেন, পানিতে পুরাতন বাজারের সিলভার পট্টিসহ বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে।
আমতলী-পুরাকাটা পায়রা নদীর ফেরি পরিচালক মোঃ আব্দুল সালাম খান বলেন, পানিতে পল্টুন তলিয়ে যাওয়ায় তিন ঘন্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের কাছে ঘুর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা চেয়েছি। তারা তালিকা দিলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপন করে বরগুনা জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হবে।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কায়সার আলম বলেন, ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পায়রা নদীতে বিপদসীমার উপরে ৬২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরো বলেন, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঝুকিপূর্ণ বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের খোজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর