কলাপাড়ায় উদ্বোধনের অপেক্ষায় সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » কলাপাড়ায় উদ্বোধনের অপেক্ষায় সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু
শুক্রবার ● ২১ মে ২০২১


---

কলাপাড়া(পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

কলাপাড়ার আন্ধারমানিক নদীতে বালিয়াতলী পয়েন্টে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এ এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্ন্য়নে চলছে সেতুর সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ ও নদীর দুই পাড়ের এ্যাপ্রোচ সড়কের নির্মাণ কাজ। বাইপাস সড়কে মাটির কাজ শেষ হয়েছে, ইট বিছানোর কাজ শেষ হলেই ফিতা কেটে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বর্তমানে খেয়ার কারনে সময় ও অর্থ দুটোই নষ্ট হয়। সেতুটি চালু হলে বালীয়াতলী, লালুয়া, মিঠাগঞ্জ, ধুলাসার, ডাবলুগঞ্জ পাঁচটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ লাগব হবে এবং উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো সহজ হবে, উজ্জীবিত হবে অর্থনীতি, গ্রাম ও শহরের মধ্যে দূরত্বে কমে আসবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ও কৃষিজাত পন্য সহজেই বাজারজাত করা সম্ভব হবে। দিনে এখান দিয়ে খেয়া নৌকায় পার হওয়া গেলে ও রাতে পারাপারের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা খেয়াওলাকে ডাকাডাকি করতে হয়। তখন অনেক বেকায়দায় পড়তে হয়। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় রোগী নিয়ে। খোয়াখাটে দীর্ঘ যানজট দেখা দিচ্ছে প্রতিদিন। দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে পাচঁটি ইউনিয়নের লোকজন ও পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা গঙামতি পর্যটকদের। একটি খেয়া ছাড়লে আরেকটি খেয়ার জন্য আধা ঘন্টায়  যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। সেতুটি উন্মুক্ত হলে ব্যবসায়ীদের পন্য পরিবহন সহজ হবে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সুত্রে জানা যায়, ১২০ কোটি টাকা ব্যয় এ সেতুটি নির্মাণ হচ্ছে। ১৩টি স্প্যানের ওপর ফুটপাথসহ নয় দশমিক আট মিটার প্রস্থ হচ্ছে সেতুটি। ৬৭৭ মিটার দীর্ঘ সেতুর রয়েছে দুই পাড়ে পাঁচশ’ মিটার এ্যাপ্রোচ সড়ক। এছাড়া রজপাড়া থেকে পায়রা বন্দরের সঙ্গে নির্মিত ফোর লেন সড়ক থেকে সংযোগ সড়ক নির্মিত হচ্ছে বিকল্প সেতুর এ্যাপ্রোচ সড়ক পর্যন্ত। পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়কটির প্রস্থ থাকছে ৩৩ ফুট। পায়রা বন্দরগামী ফোর লেন হয়ে সংযোগ সড়ক গিয়ে মিলছে নজরুল ইসলাম সেতুর সঙ্গে। ৩৩ ফুট প্রস্থ সংযোগ সড়কটি নির্মাণে কালভার্টসহ ব্যয় প্রায় ২৫ কোটি টাকা। এ সেতুর কলাপাড়ার ইটবাড়িয়া অংশে কলাপাড়া শহরের দিকে ৪০০ ফুট আর সিসি সড়ক করা হবে। এই সংযোগ সড়ক ঘেঁষে দুই দিকে সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে। থাকবে সড়কের স্লোপে ছাতা, বেঞ্চিসহ দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য। সেতুর বালিয়াতলী এপ্রোচের নিচ দিয়ে (আন্ডারগ্রাউন্ড) থাকছে লালুয়া যাওয়ার সড়ক। পায়রা বন্দরগামী ফোরলেন হয়ে সংযোগসড়ক গিয়ে মিলবে নজরুল ইসলাম সেতুর সঙ্গে। ৩৩ ফুট প্রস্থ সংযোগ সড়কটি নির্মাণে কালভার্টসহ ব্যয় প্রায় ২৫ কোটি টাকা। শুধু কুয়াকাটা নয় এই পথে পায়রা বন্দরের রামনাবাদ চ্যানেলসহ পর্যটনপল্লী গঙ্গামতির নৈসর্গিক দৃশ্য অবলোকনের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বিকল্প পথে গঙ্গামতি পর্যটন পল্লী হয়ে কুয়াকাটায় যাওয়ার সুযোগ মিলবে আন্ধারমানিক নদীর বালিয়াতলী পয়েন্টের শুধু সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু পেরিয়ে কুয়াকাটায় যেতে পারবেন পর্যটক-দর্শনার্থীসহ সাধারণ মানুষ। পায়রা বন্দরের রাবনাবাঁধ চ্যানেলসহ পর্যটন পল্লী গঙ্গামতির নৈসর্গিক সৌন্দর্য অবলোকন , কাপড়াভাঙ্গা ১৩৬ বছরের মঠ-মন্দির ও এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ দ্বিতীয় বৌদ্ধমন্দির মিশ্রিপাড়া এবং আদিবাসী রাখাইনদের হাতে তাঁতে বোনা লুঙ্গি পর্যটকদের দেখতে সহজ হবে। গঙ্গামতির সৈকত জুড়ে রয়েছে লাল কাঁকড়ার অবাধ বিচরন। রয়েছে ঝাউবনসহ ম্যানগ্রোভ প্রজাতির কেওড়া, ছইলা, গেওয়া, বাইনসহ নানান প্রজাতির সারিসারি বৃক্ষ। সূর্যোদয় মত এমন দৃশ্য উপভোগ করতে প্রতিদিন সমাগম ঘটে শতশত পর্যটক। এখানের লাল কাকড়াসহ প্রাকৃতিক দৃশ্য অনেককে মুগ্ধ করছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি)’র প্রকল্প পরিচালক মো: রুহুল আমিন সাগরকন্যাকে জানায়, সেতুর নির্মান কাজ প্রায় শেষের পথে চলছে সেতুর সৌন্দর্য়ের কাজ ও নদীর দুই পাড়ের এ্যাপ্রোচ সড়কের নির্মাণ কাজ। সড়কের মাটির কাজ শেষ হয়েছে। এখন সড়কের ইট বিছানোর কাজ শেষ হলেই মাননীয় প্রধান মন্ত্রী উদ্বোধন করবেন।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর তিনি এ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৮ সালের মধ্যে এই সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জোয়ার-ভাটার সমস্যা এবং মহামারি করোনার কারনে সেতুটির নির্মান কাজ সম্পন্ন করতে দেরি হয়েছে।

এমবি/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:৫০:৪৮ ● ১০৪০ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ