আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হতদরিদ্রদের জন্য দেয়া ঘরের অনিয়মের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ করায় যুবলীগ নেতা মোঃ সোহেল রানাকে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশিদ ও তার লোকজন জীবন নাশের হুমকি দিচ্ছেন। মঙ্গলবার (১১ মে) বিকেলে আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়নে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন সোহেল রানা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ প্রচার সম্পাদক মোঃ সোহেল রানা বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রায়ণ প্রকল্প-২ এ অধীনে দ্বিতীয় ধাপে আমতলী উপজেলায় হতদরিদ্রদের জন্য ৩’শ ৫০টি ঘর বরাদ্দ দেয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই প্রকল্পের আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নে ২৫ টি ঘর বরাদ্দ দেন ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামান। ওই ইউনিয়নে ঘর বরাদ্দের তালিকা এখনো দৃশ্যমান নয়। ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশিদ হাওলাদার ও তার দুই সহযোগী মোঃ আনোয়ার হোসেন মাষ্টার ও মাহতাব প্যাদা এলাকার হতদরিদ্রদের কাছ থেকে ঘর প্রতি ৪০ হাজার টাকা আদায় করছেন। ২৫ টি ঘরের বিপরীতে অর্ধ শতাধিক হতদরিদ্রদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছেন এমন অভিযোগ সোহেল রানার।
এ বিষয়ে পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের হতদরিদ্র আনোয়ার হাওলাদার গত ২৯ এপ্রিল আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। তার লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামান ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগী মোঃ আনোয়ার হোসেন মাষ্টার ও মাহতাব প্যাদাকে নোটিশ করেন। কিন্তু নোটিশ প্রাপ্তির ১২ দিনেও ইউএনও কার্যালয়ে অজ্ঞাত কারনে চেয়ারম্যানের সহযোগীরা উপস্থিত হয়নি।
এদিকে ইউএনও’র কাছে অভিযোগকারী হতদরিদ্র আনোয়ার হোনের হাওলাদারকে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশিদ হাওলাদার ও তার লোকজন ধরে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে ইউএনও কার্যালয়ে দেয়া অভিযোগ প্রত্যাহার করিয়েছেন এমন দাবী সোহেল রানার। তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হতদরিদ্রদের দেয়া ঘরের অনিয়মের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ করলে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশিদ ও তার সহযোগী আনোয়ার হোসেন মাষ্টার ও মাহতাব প্যাদা আমাকে জীবন নাশের হুমকি দিচ্ছে। আমি চেয়ারম্যান ও তার সহযোগী আনোয়ার ও মাহতাবের ভয়ে জীবন নিয়ে শঙ্কায় আছি। বর্তমানে হতদরিদ্র আনোয়ার হাওলাদার চেয়ারম্যান ও তার সহযোগী আনোয়ার হোসেন ও মাহতাবের ভয়ে ঘর থেকে বের হতে পারছে না। তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনার বিচার দাবী করছি।
এ বিষয়ে আনোয়ার হোসেন মাষ্টার টাকা আদায়ের কথা অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা। আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশিদ হাওলাদার যুবলীগ নেতাকে জীবন নাশের হুমকি ও তার বিরুদ্ধে ঘরের টাকা নেয়ার অভিযোগের কথা অস্বীকার করে বলেন, হতদরিদ্রের ঘর বরাদ্দে কোন টাকা লাগে না।
আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, অভিযোগকারীর অভিযোগ প্রত্যাহার করায় এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। তিনি আরো বলেন, ঘর বরাদ্দে টাকা আদায়ের অভিযোগ প্রমাণ হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর
