আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরগুনার আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসের বিতর্কিত দুর্নীতিবাজ সেই কর্মচারী মোঃ এনামুল হক বাদশাকে বদলি করা হয়েছে। বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান বরিবার তাকে হতদরিদ্রদের ঘরের তালিকা তৈরিতে অনিয়ম, টাকার বিনিময়ে ধনাট্য ব্যাক্তি ও আত্মীয়-স্বজনদের ঘর দেয়ার অভিযোগ এনে বেতাগীতে বদলির আদেশ দেন। এনামুলকে বদলির আদেশের খবরে এলাকার মানুষের মাঝে স্বস্থি ফিরে এসেছে। ওইদিন রাতে এলাকায় মিষ্টি বিতরন করা হয়। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নাজমুল হাসানের নেতৃত্বে ঘর দেয়ার অনিয়মে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
জানাগেছে, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রায়ণ প্রকল্প-২ এ অধীনে দ্বিতীয় ধাপে আমতলী উপজেলায় হতদরিদ্রদের জন্য ৩’শ ৫০ টি ঘর বরাদ্দ দেয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই প্রকল্পের গুলিশাখালী ইউনিয়নে ৫০ টি ঘর বরাদ্দ দেন ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামান। ওই ঘরগুলোর মধ্যে ইউএনও কার্যালয়ের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর মোঃ এনামুল হক বাদশার নিজ গ্রাম হরিদ্রবাড়িয়ায় ৩০টি দেয়। তার মধ্যে ১৪ টি ঘর পেয়েছেন মোঃ এনামুল হক বাদশার আত্মীয়-স্বজন। তারা সকলেই ধনাট্য ব্যাক্তি। ইউএনও ও তার অফিসের কর্মচারী এনামুল হক বাদশা ঘরের তালিকা তৈরি ও টাকা নিয়ে ঘর দেয়ার অভিযোগ এনে গুলিশাখালী ইউনিয়ন যুবলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ কামাল রাঢ়ী বরগুনা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তথ্য তুলে ধরেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামান ও তার অফিসের কর্মচারী মোঃ এনামুল হক বাদশা। শনিবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ইউএনও’র নির্দেশে এনামুল হক বাদশার নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী বাহিনী সুজন মুসুল্লী ও হাবীব গাজীসহ ৫-৬ জনে যুবলীগ নেতা কামাল রাঢ়ীকে তার বাড়ী থেকে তুলে ইউএনও আসাদুজ্জামানের বাসায় নিয়ে আসে। তার বাসায় ইউএনও যুবলীগ নেতাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার ইচ্ছামত ভিডিও ধারন করেন এমন অভিযোগ যুবলীগ নেতা কামাল রাঢ়ীর। ঘরের তালিকা তৈরিতে অনিয়ম এবং টাকা নিয়ে ঘর দেয়ার অভিযোগের প্রতিবেদন বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পরে টনক নড়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমানের । রবিবার তিনি আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসের বিতর্কিত কর্মচারী মোঃ এনামুল হক বাদশাকে ঘর তালিকা তৈরিতে অনিয়ম ও টাকা নিয়ে ধনাট্য ব্যাক্তিদের ঘর দেয়ার অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসক তাকে বেতাগী উপজেলার ইউএনও কার্যালয়ে একই পদে বদলির আদেশ দেন। একই সাথে জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান তার কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল হাসানের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। এদিকে বাদশাকে বদলির আদেশের খবরে এলাকা মানুষের মাঝে স্বস্থি ফিরে এসেছে। রবিবার রাতে এলাকায় মিষ্টি বিতরন করা হয়।
গুলিশাখালী ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মোঃ কামাল মাষ্টার বলেন, ইউএনও অফিসের কর্মচারী দুর্নীতিবাজ এনামুল হক বাদশা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হতদরিদ্রদের জন্য দেয়া ঘর গরিবদের না দিয়ে টাকার বিনিময়ে ধনাট্য ব্যাক্তি ও তার আত্মীয়-স্বজনদের নামে বরাদ্দ দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, এনামুলের দাপটে এলাকার মানুষ অতিষ্ট ছিল। তাকে অন্যত্র বদলি করায় এলাকার মানুষের মাঝে স্বস্থি ফিরে এসেছে।
বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত কমিটির প্রধান মোঃ নাজমুল হাসান তদন্ত কমিটির চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দেয়া হবে।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, আমতলীর ঘরের তালিকা তৈরিতে অনিয়মসহ বিভিন্ন বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর