চরফ্যাশনে লকডাউনে কর্মহীন ৪২ হাজার জেলে

প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » চরফ্যাশনে লকডাউনে কর্মহীন ৪২ হাজার জেলে
সোমবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২১


চরফ্যাশনে লকডাউনে কর্মহীন ৪২ হাজার জেলে

চরফ্যাশন (ভোলা) সাগরকন্য প্রতিনিধি॥

মহামারি করোনা ভাইরাস ও সরকার ঘোষিত লকডাউনে থমকে আছে দিনমজুরসহ খেটে খাওয়া কর্মঠ মানুষের ভাগ্যের চাকা। জেলে ও কৃষকসহ অন্যান্য কর্মফেরত দিনমজুরেরা ঘরে বসে অলস সময় পাড় করছে। এতে চরফ্যাশনের প্রায় ৪২হাজার জেলে ঘরবন্ধি হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চরফ্যাশনের মেঘনা ও তেতুলিয়া নদী উপকূলের ১৯০ কিলোমিটার এলাকা মৎস্য অভয়াশ্রম গড়ে তোলার লক্ষ্যে সকল প্রকারের মাছ ধরা বা বেচাঁকেনা নিষিদ্ধ করে সরকার। জেলেরা মার্চ থেকে শুরু করে চলতি এপ্রিল মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত অবরোধের আওতায় রয়েছে। আর এ অবরোধে থাকা প্রকৃত কার্ডধারী অনেক জেলেই পায়নি সরকারি বরাদ্ধকৃত জেলে পুনর্বাসনের চাল। সরকারি তথ্য অনুযায়ী এ অঞ্চলে ৪২হাজার ২৬৪ জন জেলে রয়েছে। কার্ডধারী জেলে রয়েছেন ২১হাজার ২১৫ এবং নতুন নিবন্ধনে (চলমান) জেলে রয়েছেন ১৫হাজার ২৯০জন। প্রত্যেক কার্ডধারী জেলে ২মাসে ৮০ কেজি করে মোট ১৫শ ২২.৬৪ মেট্টিক টন চাল বরাদ্ধ পেয়েছেন। তবে ১৯হাজার ৩৩জন কার্ডধারী জেলে এ পুনর্বাসনের চাল পেয়েছেন। চাল না পেয়ে খালি বস্তা হাতে নিয়ে হতাশায় বাড়ি ফিরেছেন কার্ডধারী এবং কার্ড ছাড়া হাজারো জেলে। সরকারি হিসেবের ৪২হাজার জেলের প্রায় ৮৪হাজার পরিবার থাকলেও বেসরকারি হিসাব অনুযায়ী চরফ্যাশনের উপকূলে জেলে রয়েছে প্রায় ১লাখের মতো। এমন দাবী করেন বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা গুলো। চরফ্যাশনে অধিকাংশই উনিয়নে জেলেদের দু‘মাসের বরাদ্দকৃত চাল খাদ্য গুদাম থেকে ছাড় করে এক মাসের চাল বিতরণ করারও অভিযোগ রয়েছে। প্রতি জেলে ৪০কেজির পরিবর্তে ৩৮কেজি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে জিন্নগড় ইউপিতে। সংবাদকর্মীরা সেখানে গেলে তাদের সাথে চেয়ারম্যান মো. হোসেনের কথার-কাটাকাটি হয়েছে বলেও জানা গেছে। উপজেলার ঘোষেরহাট গ্রামের ইব্রাহীম মাঝি বলেন, সরকারি তালিকায় স্থানিয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানদের রাজনৈতিক সমর্থক এবং পরিচিত স্বজনেরা স্থান বেশি পাওয়ায় প্রকৃত জেলেরা বঞ্চিত রয়েছে গেছে জেলে পুনর্বাসনের বরাদ্ধ থেকে। উপজেলার মাদ্রাজ, হাজারীগঞ্জ, এওয়াজপুর, নীলকোমল ইউনিয়নের একাধিক জেলে বলেন, এ অঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় ১লাখের মতো জেলে থাকলেও জেলে পুনর্বাসন কার্ড দেয়া হয়েছে মাত্র ২১ হাজার জেলেকে। এর মধ্যে ১৯ হাজার ৩৩ জন জেলে পেয়েছে সরকারি বরাদ্ধ। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, বাকি জেলেরা কোথায় এবং কার কাছে গেলে পরিবারের খাদ্যের বরাদ্ধ পাবে। চরফ্যাশন উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা আনিচুর রহমান জানান, গত ৪মার্চ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ইউপি নির্বাচনী তফসীল ঘোষণা হলে ওই ৫টি ইউনিয়নে চাল বিতরণ কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ থাকলেও বর্তমানে তা বিতরণ করা হচ্ছে। এ উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে ১৯ হাজার ৩৩ জন জেলে পুনর্বাসনে ১৫শ ২২.৬৪ মেট্টিক টন চাল বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিনার বলেন, চরফ্যাশনে ২১ হাজার ২১৫ জন কার্ডধারী জেলে রয়েছেন। বর্তমানে নতুন করে নিবন্ধন শুরু হয়েছে। আরও ১৫ হাজার ২৯০ জন নতুন জেলেকে কার্ড দেয়া হচ্ছে। চরফ্যাশনের নদী ও সাগর উপকূলে বিভিন্ন জেলা থেকে মৎস্য শিকারে আসা অনেক জেলেই রয়েছে। এ এলাকায় জেলে কার্ডধারী এবং কার্ড ছাড়া প্রায় ১লাখ জেলে থাকলেও সবাইকে জেলে পুনর্বাসনের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছেনা।

এএইচ/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২১:০৫:০০ ● ৩০৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ