মেজবাহউদ্দিন মাননু, সাগরকন্যা রিপোর্ট॥
কলাপাড়ার ধানখালীতে নির্মানাধীন ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের অভ্যন্তরে কর্মরত প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক নিয়োগ দেয়া কোম্পানির বৈধ কাগজপত্র নেই। শ্রম মন্ত্রণালয়ের অনিবন্ধিত অন্তত ৪০টি কোম্পানির মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক নিয়োগ নিয়ে কাজ করছে। ফলে কোন ধরনের নাশকতাসহ সহিংসতায় জড়িয়ে পড়লে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে আইনের আওতায় আনা দূরুহ হয়ে পড়বে। সম্প্রতি বিদ্যুত কেন্দ্র অভ্যন্তরে দুই দিনে হাজারো শ্রমিক তাদের দাবি-দাওয়া আদায়ে সহিংস হামলা-তান্ডব ভাংচুর অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িয়ে দুইদিন সকল কর্মকান্ড বন্ধ থাকে। তখন অনিবন্ধিত শ্রমিক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্তদের আগামি মার্চ মাসের মধ্যে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্নের আল্টিমেটাম দিয়েছে নির্মানকারী প্রতিষ্ঠান বিসিপিসিএল কর্মকর্তারা। কিন্তু এসব কোম্পানি ওই নির্দেশনা আমলে নেয়নি। আবার নিয়োগকৃত শ্রমিকদের অনিবন্ধিত কোম্পানি যথাযথ বেতন-ভাতাও দেয়না বলে অভিযোগ রয়েছে। খবর নির্ভরযোগ্য সুত্রের।
বিসিপিসিএল এর প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহ মনি জিকো জানান, প্রথম দিকে নিবন্ধিত কোন শ্রমিক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান না থাকায় উন্নয়ন কাজের স্বার্থে শ্রমিক সরবরাহের সুযোগ দেয়া হয় অনিবন্ধিত ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে। তার ভাষ্যমতে অন্তত ৫০টি শ্রমিক সরবরাহকারী ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান এই প্লান্টে শ্রমিক সরবরাহ করে আসছে। যার মধ্যে চার/পাঁচটির নিবন্ধনসহ বৈধ কাগজপত্র থাকতে পারে। বাকিদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্নের জন্য ডেটলাইন দেয়া হয়েছে। সিকিউরিটি গার্ডসহ শ্রমিক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জিএমডব্লিউ, রানা এন্টার প্রাইজ, আলভি এন্টার প্রাইজ, এসএস কনস্ট্রাকশন, এসকেএস, শাহজালাল এন্টারপ্রাইজ, এজে এন্টার প্রাইজ, বন্ধু এন্টার প্রাইজ, শাহীন এন্টার প্রাইজসহ অন্তত ৫০ ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যারা সিকিউরিটি গার্ডসহ শ্রমিক সরবরাহ করে আসছে।
এসব কোম্পানির মাত্র ৪/৫টির বৈধতা রয়েছে। অবৈধ সংস্থা/ব্যক্তির সরবরাহকৃত শ্রমিকের সংখ্যা কমপক্ষে পাঁচ হাজার। মাস শেষ কোটি টাকার মুনাফা হাতিয়ে নিলেও এসব কোম্পানি কিংবা ব্যক্তি সরকারের বৃহৎ এ উন্নয়ন প্রকল্পের কর্মকান্ডে ঝুঁিক বাড়ছে। বিসিপিসিএলসহ স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই অনিবন্ধিত ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান এভাবে দায়বদ্ধতার বাইরে ঝুঁকিতে রেখেই শ্রমিকসহ নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ করছে। ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভাসহ বিভিন্ন স্তরের একটি প্রত্যয়নপত্রসহ ট্রেড লাইসেন্স প্রদর্শন করে সিকিউরিটি গার্ডসহ শ্রমিক সরবরাহ করে মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছেন। ফলে একদিকে অভ্যন্তরের শ্রমিকদের আইনের আনা দুরুহ হয়ে পড়বে। যে কোন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির শঙ্কা রয়েছে এ কারণে। এছাড়া শ্রমিকদের যথাযথ মজুরি না পাওয়ার কারণেও শঙ্কট তৈরি হতে পারে। বিষয়টি কলাপাড়া উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির একাধিক সভায় উত্থাপন করা হয়েছে। শ্রম মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধিত নয় এমন কোন ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তা কর্মী কিংবা শ্রমিক সরবরাহের সুযোগ নেই। কিন্তু এর কোনটাই মানা হয়না। বিষয়টি নিয়ে সচেতনমহল উৎকন্ঠা প্রকাশ করেছেন।
এমইউএম/এনইউবি