দশমিনা(পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীর দশমিনায় সেচ সংকট ও অনাবৃষ্টিতে রবি ফসলের উৎপাদন নিয়ে চাষিরা শংকিত হয়ে পড়েছেন। ফসলহানীর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারী প্রনোদনার দাবি করেছেন রবিশস্য চাষিরা। প্রচুর রোদ, অনাবৃষ্টি এবং খাল-বিলে পানি কমে যাওয়ায় ফসলের খেত ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে মরিচসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের গাছ শুকিয়ে গেছে। আশানুরূপ ফলন না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে জানা যায়, উপজেলার সাত ইউনিয়নে ১২হাজার হেক্টর জমিতে চলতি রবিশস্যের চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫২০হেক্টর জমিতে মরিচ আর বাকিসব অন্য অণ্য রবিশস্য চাষ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় মরিচ ৭০হেক্টর জমিতে বেশি। এছাড়াও চলতি মৌসুমে করলা, মিস্টি কুমড়া, বেগুন, ঢেড়স, বরবটি ও পুইশাকসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি ও লতাকৃষির চাষ করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের রবিশস্য পানির অভাবে ও রোদের তাপে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে এলাকার কৃষকরা কয়েক লাখ টাকার লোকসানে পড়েছেন। বাঁশবাড়িয়া ও বহরমপুর গ্রামের চাষিরা জানান, কৃষি ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, ব্র্যাক, আশা ও গ্রামীণ ব্যাংকসহ বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন তারা। এ টাকা দিয়ে চাষিরা জমিতে তরমুজ, সূর্যমুখি, বিভিন্ন প্রজাতের ডাল, মিষ্টি কুমাড়, করলা, বেগুন, ঢেড়স, বরবটি, মরিচ ও পুইশাক চাষসহ অন্যান্য রবিশস্য চাষ করা হয়েছে। এ বছরের চলতি মাস পর্যন্ত উপজেলায় কোনো বৃষ্টি না হওয়ায় ফসলের গাছ বৃদ্ধি পায়নি। আর পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ভয়ে উচু এলাকায় চাষ করা হয় রবিশস্য। কিন্তু এবার বৃষ্টি না হওয়া এবং আশপাশের নালা শুকিয়ে যাওয়ায় পানি সেচ দেয়া সম্ভব হয়নি। তাই কাঙ্খিত ফলন হয়নি। লোকসান পুষিয়ে উঠতে ওই এলাকার চাষিরা সরকারের কাছে বিশেষ প্রণোদনা পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
বহরমপুর ইউনিয়নের দক্ষিন আদুমপুর গ্রামের চাষি সুলতান ফকির জানান, বৃষ্টি না থাকায় তার চলতি মৌসুমে প্রায় লক্ষ টাকা লোকসান হয়েছে সবজি চাষে। আর বিভিন্ন ফল রোদের তাপে ঝরে পড়েছে। খালে পানি না থাকায় সেচের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু জাফর আহম্মেদ বলেন, মুগডালে পোকা নিধন ও প্রয়োজনীয় সেচের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কিন্তু দশমিনা, বাঁশবাড়িয়া, বহরমপুর, বেতাগী, আলীপুর ও রনগোপালদী ইউনিয়নে কিছু এলাকায় কাছাকাছি খাল না থাকায় ফসল উৎপাদন কম হতে পারে। উপজেলায় সার্বিক দিক থেকে এ বছর আবাদ বেশি হয়েছে এবং গত কয়েক বছরের তুলনায় ফলনও ভালো হয়েছে। এ বছর জোয়ারের পানিও দেরিতে এসেছে। পর্যাপ্ত সেচের অভাবে দুই-এক জায়গায় সমস্যা হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্তরা স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে যাচাইবাছাই করে তাদেরকে প্রণোদনা দেয়া যেতে পারে বলে তিনি বলেন। তিনি আরও বলেন সার্বিকভাবে উপজেলায় রবিশস্যের ফলনও ভালো হয়েছে।
এসবি/এমআর