বানারীপাড়ায় পুলিশের সহায়তায় স্কুলে যাচ্ছে বেদে শিশুরা

প্রথম পাতা » বরিশাল » বানারীপাড়ায় পুলিশের সহায়তায় স্কুলে যাচ্ছে বেদে শিশুরা
শনিবার ● ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯


---

এস.এম গোলাম মাহমুদ রিপন, বানারীপাড়া থেকে॥
বানারীপাড়ায় বাবা-মায়ের বসবাস ২৫-৩০ বছর হলেও শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত বেদে শিশুরা এবার পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে। জন্মের পর থেকেই বাবা-মাকে সন্ধ্যা নদী থেকে ইলিশ মাছ ধরতে দেখে আসা এসব শিশুরা এখন থেকে অন্য সব শিশুদের মত চলা ফেরা করার পাশাপশি নিয়মিত স্কুলে যেতে পারছে।
জানা গেছে, ২৫-৩০ বছর ধরে বেদেরা পৌর শহরের ১ নং ওয়ার্ডের ফেরীঘাট ও ২ নং ওয়ার্ডের লঞ্চঘাট সংলগ্ন মহিষাপোতা এলাকা বসবাস করার পাশাপশি ভোটার হওয়া সত্যেও তাদের ছেলে মেয়েরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত ছিলেন। বেদে পল্লীর শিশুদের স্কুলগামী করতে এর আগে শিক্ষকরা কোন ধরনের উদ্যোগ গ্রহন করেননী। ফলে বেদে পল্লীর শিশুরা স্কুলগামী অন্যসব শিশুদের মতো বেড়ে ওঠেনি। শিক্ষার আলো বঞ্চিত বেদে পল্লীর শিশুরা স্থানীয় শিশুদের চেয়ে চালচলনে অনেকটা আলাদা। বেদে পল্লীর শিশুরা নিয়মিত নদীতে হাবুডুবু হওয়ার পাশাপশি তারা খালি পায়ে চলাফেরা করে এবং ছেড়া ও পুরাতন জামা কাপড় পড়ে। তারা এক প্রকার যাযাবরের মতো দিন কাটায়। অপরদিকে বেদে পল্লীর শিশুরা আর্থিক ভাবে অভাব অনাটনের মধ্যে বড় হওয়ার পাশাপশি এসব শিশুরা একটু বুঝে ওঠার আগেই তাদের অভিভাবকরা জাল-নৌকা তৈরী করে দিয়ে ইলিশ মাছ ধরতে সন্ধ্যা নদীতে নামিয়ে দেয়। বাবা-মায়ের পথ ধরে এসব শিশুরা সন্ধ্যা নদী থেকে ইলিশ মাছ দরে বাজারে বিক্রি করে। এসব শিশুরা টাকা আয় করার নেশায় কিছু দিনের মধ্যেই আবার বিয়ে করে (স্বা-স্ত্রী) দু’জনেই সন্ধ্যা নদী থেকে ইলিশ ধরার কাজ শুরু করে। বাবা-মায়ের পথ ধরে এসব শিশুরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হয়। শিক্ষার আলো বঞ্চিত এসব শিশুদের স্কুলগামী করতে সম্প্রতি বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. খলিলুর রহমান উদ্যোগ গ্রহন করেন। সে অনুযায়ী থানার এ.এস.আই জাহিদ হোসেন উদ্যোগ গ্রহন করেন। তিনি এলাকার বেদে সম্প্রদায়কে বুঝিয়ে-শুনিয়ে তাদের শিশুদের স্কুলগামী করার পাশাপশি সরকারী সহায়তা বদে নিজ অর্থে স্কুল ড্রেস, জুতা ও কসমেটিস কিনে দেন। দীর্ঘ দিন ধরে শিক্ষার আলো বঞ্চিত এসব শিশুরা শনিবার থেকেই বানারীপাড়া বন্দর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণীতে ক্লাস করা শুরু করেছে। এ বিষয়ে বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. খলিলুর রহমান ও তদন্ত ইন্সেপেক্টর মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ মানুষের বন্ধু ও সেবক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। সে অনুযায়ী এ.এস.আই জাহিদ হোসেন জনবান্ধব হিসেবে তার দায়ীত্ব পালন করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩:৪৬:৩১ ● ৬১৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ